দুর্ভাগ্য পিছু ছাড়ছে না জার্মানির

হাওর বার্তা ডেস্কঃ তিন দিনের ব্যবধানে দুবার হতাশায় পুড়তে হলো জার্মানিকে। আগের ম্যাচে শেষ মুহূর্তে জয় হাতছাড়া করা সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা ভুগলো দ্বিতীয় ম্যাচেও। সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে শুরুতে এগিয়ে গিয়ে জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েছিল বটে; তবে দ্বিতীয়ার্ধে গোল হজম করে আবারও মূল্যবান দুটি পয়েন্ট হারানোর হতাশায় মাঠ ছাড়ে জোয়াকিম লোর দল।

গতপরশু রাতে বাসেলের সেন্ট জ্যাকব পার্কে উয়েফা নেশন্স লিগে ‘এ’ লিগের ৪ নম্বর গ্রুপের ম্যাচটি ১-১ ড্র হয়। ইলকাই গিনদোয়ানের গোলে সফরকারীরা এগিয়ে যাওয়ার পর সমতা টানেন সিলভান উইডমার। তিন দিন আগে আসরের উদ্বোধনী দিনে ঘরের মাঠে স্পেনের বিপক্ষে যোগ করা সময়ের শেষ দিকে গোল খেয়ে ১-১ ড্রয়ে মাঠ ছেড়েছিল জার্মানি। প্রতিযোগিতাটির দুই আসর মিলে এই নিয়ে ছয় ম্যাচ খেলে জয়শ‚ন্যই রইলো দলটি।
দারুণ গোছানো আক্রমণে চতুর্দশ মিনিটে এগিয়ে যায় জার্মানি। মাথিয়াস গিন্টারের কাটব্যাক ডি-বক্সের মুখে পেয়ে প্রথম ছোঁয়ায় নিচু শট নেন ম্যানচেস্টার সিটির মিডফিল্ডার গিনদোয়ান। বল শেষ মুহূর্তে বাঁক খেয়ে পোস্ট ঘেঁষে জালে জড়ায়। ২৮তম মিনিটে সমতা টানতে পারতো সুইজারল্যান্ড; তবে ভালো পজিশনে বল পেয়েও লক্ষ্যভ্রষ্ট শটে হতাশ করেন হারিস সেফেরোভিচ। চার মিনিট পর ইউলিয়ান ড্রাক্সলারের শট দারুণ ক্ষিপ্রতায় রুখে ব্যবধান বাড়তে দেননি গোলরক্ষক ইয়ান সোমের। ৩৬তম মিনিটে চেলসি ফরোয়ার্ড টিমো ভেরনার প্রথম সুযোগ পেয়ে ভলিতে উড়িয়ে মারেন। ছয় মিনিট পর ভাগ্যের ফেরে গোল পায়নি স্বাগতিকরা। ডি-বক্সে ঢুকে বেনফিকা ফরোয়ার্ড সেফেরেভিচের নেওয়া শট পোস্টের বাইরের দিকে লাগে।
খেলার ধারার বিপরীতে ৫৭তম মিনিটে দারুণ এক পাল্টা আক্রমণে সমতায় ফেরে সুইজারল্যান্ড। ব্রিল এম্বোলোর পাস ডি-বক্সে ডান দিকে ফাঁকায় পেয়ে জোরালো শটে ঠিকানা খুঁজে নেন বাসেলের রাইট-ব্যাক উইডমার। গোল খেয়ে যেন ছন্দ হারিয়ে ফেলে জার্মানি। বাকি সময়ে ভালো কোনো আক্রমণই করতে পারেনি তারা। উল্টো দুবার তাদের রক্ষণে ভীতি ছড়ায় সুইসরা, যদিও ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দেওয়ার মতো কিছু করতে পারেনি গত আসরে চার দলের ফাইনালসে ওঠা দলটিও।
একই সময়ে শুরু হওয়া গ্রুপের আরেক ম্যাচের প্রথমার্ধেই জোড়া গোল উপহার দিলেন সার্জিও রামোস। সবচেয়ে কম বয়সী হিসেবে উয়েফা নেশন্স লিগে গোলের রেকর্ড গড়লেন আনসু ফাতি। দ্বিতীয়ার্ধে আরও এক গোল করে ইউক্রেনের বিপক্ষে আধিপত্য ধরে রাখলো স্পেন। ঘরের মাঠ মাদ্রিদের আলফ্রেদো দি স্তেফানো স্টেডিয়ামের ম্যাচে ৪-০ গোলে জিতেছে স্পেন। উয়েফা নেশন্স লিগের এবারের আসরে এটি তাদের প্রথম জয়। প্রথম ম্যাচে জার্মানির সঙ্গে ১-১ ড্র করেছিল লুইস এনরিকের দল। দুই দলের আগের পাঁচ দেখায় ইউক্রেনের বিপক্ষে চার জয় ও এক ড্র নিয়ে অজেয় ছিল স্প্যানিশরা। জার্মানির মাঠ থেকে শেষ মুহূর্তের গোলে ড্র নিয়ে ফেরা স্পেন তৃতীয় মিনিটেই রামোসের সফল স্পট কিকে এগিয়ে যায়। ক্রিভতসোভ ডি-বক্সে ফাতিকে ফাউল করলে পেনাল্টি পায় ২০১০ বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়নরা।
সবচেয়ে কম বয়সী (১৭ বছর ৩১১ দিন) খেলোয়াড় হিসেবে নেশন্স লিগে শুরুর একাদশে খেলতে নামা ফাতির সপ্তদশ মিনিটের প্রচেষ্টা দ‚রের পোস্ট দিয়ে বেরিয়ে যায়। একটু পর তার বাইসাইকেল কিক এক ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে প্রতিহত হয়। চার মিনিটের মধ্যে আরও দুই গোল করে প্রথমার্ধেই চালকের আসনে বসে যায় স্পেন। ২৯তম মিনিটে দানি ওলমোর ক্রসে রামোসের হেড গোলরক্ষককে বোকা বানিয়ে জাল খুঁজে পায়। ৩২তম মিনিটে সার্জিও রেগিলনের ছোট পাস ধরে এক টোকায় একটু এগিয়ে জায়গা করে নিয়ে ডান পায়ের বাঁকানো শটে জাল খুঁজে নেন ফাতি।
ইউক্রেনের রক্ষণে চাপ ধরে রেখে ৬২তম মিনিটে জালে বল জড়ান মরেনো। কিন্তু অফসাইডের কারণে গোল হয়নি। ৭৭তম মিনিটে ওলমোর সঙ্গে একবার বল দেওয়া নেওয়া করে বদলি নামা অস্কার রদ্রিগেজের শট গোলরক্ষকের গ্লাভস ছুঁয়ে ক্রসবার ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। এর পরপরই গোলমুখ থেকে ফাতির প্রচেষ্টা ফেরান গোলরক্ষক। ৮৪তম মিনিটে রেগিলনের ফ্রি কিক এক ডিফেন্ডার হেড করার পর ডি-বক্সেই পেয়ে যান মরেনোর বদলি নামা ফেররান তরেস। দারুণ শটে স্কোরলাইন ৪-০ করেন ম্যানচেস্টার সিটির এই ফরোয়ার্ড। ২০০৬ বিশ্বকাপে এই ব্যবধানেই স্পেনের কাছে হেরেছিল ইউক্রেন।
গ্রুপের অন্য ম্যাচে সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে ১-১ ড্র করেছে জার্মানি।
একটি করে জয় ও ড্রয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের শীর্ষে স্পেন। প্রথম হারের স্বাদ পাওয়া ইউক্রেন ৩ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। ২ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় জার্মানি। সুইজারল্যান্ডের পয়েন্ট ১।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর