বঙ্গবন্ধু কর্নারের বই নিয়ে জালিয়াতি : রিটের শুনানি বুধবার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’এর জন্য বই কেনায় ‘জালিয়াতি ও অনিয়ম’ করে বইয়ের মেধাস্বত্ব চুরি ও গ্রন্হস্বত্ব জালিয়াতির ঘটনায় একটি টেলিভিশন চ্যানেলের এক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে বিচারবিভাগীয় তদন্ত চেয়ে করা রিটের শুনানির জন্যে আগামীকাল বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) দিন ঠিক করেছেন হাইকোর্ট। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।

রিটের আবেদনের ওপর শুনানির জন্যে উপস্থাপন করা হলে মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ দিন ঠিক করে আদেশ দেন। আদালতে আজ রিট আবদনটি উপস্থাপন করেছিলেন রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।

এর আগে সোমবার (৩১ আগস্ট) বঙ্গবন্ধুর নামের বইয়ের মেধাস্বত্ব চুরি ও গ্রন্হস্বত্ব জালিয়াতির ঘটনায় একটি টেলিভিশন চ্যানেলের এক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে স্বাধীন কিংবা বিচারবিভাগীয় তদন্ত চেয়ে রিট করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।

রিটে বঙ্গবন্ধুর নামের বইয়ের মেধাস্বত্ব চুরি ও গ্রন্হস্বত্ব জালিয়াতির ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, এই মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে।

রিটে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক, ‘জার্নি মাল্টিমিডিয়া লিমিটেড’ ও ‘স্বাধীকা পাবলিশার্স’ এবং ওই সাংবাদিক ও তার স্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।

‘৩টি বইয়ের মেধাস্বত্ব চুরি করে ২০ কোটি টাকার অভিনব দুর্নীতি’ সংক্রান্ত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে সোমবার (৩১ আগস্ট) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন রিট করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

রিটের বিষয়ে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, অবাক করা বিষয় হলো এই দুর্নীতি করা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর নামের বই দিয়ে। এটা কী সহ্য করা যায়। বঙ্গবন্ধুর নামের বই নিয়ে যদি দুর্নীতি হয় আর এই সরকার যদি বসে থাকে তাহলে মানুষ সন্দেহ করবে।

সুমন বলেন, তিনি (সাংবাদিক) এই বই বিক্রি করেছেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের কাছে এবং বইটি ছাড় দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এই যে সাংবাদিকের নামে প্রায় ২০ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ এটা অবশ্যই মন্ত্রণালয়ের লোকজনের সংশ্লিষ্টতা ছাড়া কখনই সুযোগ হয়নি।

আইনজীবী সুমন বলেন, এই সাংবাদিক একজন ভদ্রলোক যিনি আরেকজনের বই অর্থাৎ কারা অধিদফতরের বইয়ের গ্রন্হস্বত্ব এবং মেধাস্বত্ব চুরি করে আবার মন্ত্রণালয়ের কাছেই বিক্রি করে দিয়েছেন।

ব্যারিস্টার সুমন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে নিজের দলের লোকদের ব্যাপারে দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করেছেন। এ অবস্থায় এসে ওই সাংবাদিককে কেন এখনো ধরা হচ্ছে না?

মামলার বিবরণে জানা যায়, মুজিববর্ষে দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ এর জন্য যে আটটি বই কেনার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে তার মধ্যে তিনটি বই নিয়েই জালিয়াতি করার অভিযোগ উঠেছে ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে। ‘বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা’ এবং ‘৩০৫৩ দিন’ বই দুটির পাশাপাশি অধ্যাপক নাসরিন আহমদ সম্পাদিত ‘অমর শেখ রাসেল’ বইটিরও মেধাস্বত্ব চুরি করে মোটা অঙ্কের টাকায় বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ‘জার্নি মাল্টিমিডিয়া লিমিটেড’ ও ‘স্বাধীকা পাবলিশার্স’ নামে দু’টি প্রকাশনা সংস্থার মালিক এই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর