রেডিও টেলিভিশন ও পত্রিকার অনলাইন সংস্করণের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক

হাওর বার্তা ডেস্কঃ স্যাটেলাইট টেলিভিশন এবং পত্রিকাগুলোর অনলাইন সংস্করণের জন্য নিবন্ধনের বাধ্যবাধকতা রেখে ‘জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা, ২০১৭’ (সংশোধিত, ২০২০) এর অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

সোমবার (৩১ আগস্ট) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে গণভবন থেকে সংযুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে যোগ দেন মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্যরা।

বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম ব্রিফিং করে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘২০১৭ সালের অনলাইন গণমাধ্যমের যে নীতিমালা ছিল, সেটিতে সংশোধনী আনা হয়েছে। সংশোধনীতে মোট পাঁচটি নতুন অংশ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

সচিব বলেন, ‘এরমধ্যে অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিবন্ধনের যোগ্যতা বা অযোগ্যতা, অনুমোদন ফি ও কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ, লাইসেন্সপ্রাপ্ত টেলিভিশন চ্যানেলের ও বেতারের নিউজ পোর্টাল হিসেবে প্রচারকার্য পরিচালনা, আইপি টিভি ও ইন্টারনেট রেডিও সম্প্রচারের ব্যাপারে কোনো নির্দিষ্ট নির্দেশনা ছিল না। নতুন করে এগুলোকেই অন্তর্ভুক্ত করে খসড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, ‘রেডিও এবং টেলিভিশন অনলাইন করার যোগ্য না। তারা যদি অনলাইন করতে চায়, সেক্ষেত্রে অনুমতি নিতে হবে। অর্থাৎ, অনেক টেলিভিশন নিউজ পোর্টাল চালাচ্ছে। এটার কোনো অনুমতি নিতে হতো না,  এখন নিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পত্রিকাগুলোর ক্ষেত্রে পত্রিকাতে যা ছাপা হয় তা যদি পুরোপুরি অনলাইনে প্রকাশ করা হয়, সে ক্ষেত্রে নিবন্ধন নিতে হবে না। তবে পত্রিকা এবং তাদের অনলাইনের মধ্যে ভিন্নতা থাকলে নিবন্ধন নিতে হবে।’

সচিব উল্লেখ করেন, ২০১৭ সালের অনলাইন নীতিমালা ছিল। এর উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো হচ্ছে অনলাইন গণমাধ্যম সেবা প্রদানের জন্য নিবন্ধন প্রদান, পর্যবেক্ষণ, মনিটরিং এবং মান বজায় রাখার লক্ষ্যে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গড়ে তোলা। নিবন্ধন প্রদানের মাধ্যমে সকল অনলাইন গণমাধ্যমে একটি সমন্বিত ব্যবস্থার আওতায় এনে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা করা, জনস্বার্থ রক্ষা করা, মহান স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, ইতিহাস সংরক্ষণ করা, সামাজিক মূল্যবোধ সমুন্নত রাখা, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে অনলাইনে তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ বা সম্প্রচার করা তা নিশ্চিত করা, বাংলাদেশের নারী-শিশু ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে অনলাইন গণমাধ্যমের ভূমিকা নিশ্চিত করা, সমাজের নৈতিক অবক্ষয় রোধ এবং সামাজিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা এবং দেশের সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ নির্মূল ও গুজব প্রতিরোধে সহযোগিতা করা।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘এটির (২০১৭ সালের নীতিমালা) মধ্যে অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিবন্ধনের যোগ্যতা-অযোগ্যতা, নিবন্ধন ফি, কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ, লাইসেন্সপ্রাপ্ত টেলিভিশন চ্যানেল এবং বেতারের নিউজ পোর্টাল হিসাবে প্রচার কার্য পরিচালনা, আইপি টিভি ও ইন্টারনেট রেডিও সম্প্রচার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো নির্দেশনা ছিল না। এগুলো ইনক্লুড করে একটা খসড়া নিয়ে এসেছে, খসড়া মন্ত্রিসভায় আলোচিত হয়েছে এবং খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।’

সচিব বলেন, ‘আগের ৯টি অনুচ্ছেদ সংশোধন হয়েছে এবং ৫টি নতুন অনুচ্ছেদ ঢোকানো হয়েছে। টেলিভিশন এবং বেতার নিউজ পোর্টাল হিসাবে চালাচ্ছে। এটির অনুমতি নিতে হতো না। এখন নিতে হবে। আইপি টিভি, ইন্টারনেট রেডিও সম্প্রচারের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা ছিল না- সে জন্য এগুলো ঢোকানো হয়েছে।’

‘তবে পত্রিকাগুলো যদি এক্সাটলি হার্ডকপি যা ছাপছে, সেটাই যদি অনলাইনে দিয়ে দেয় তাহলে কোনো অনুমতি লাগবে না। কিন্তু যদি কেউ ভেরিয়েশেন করে তখন তাকে অনুমতি নিতে হবে। কারণ, অনেকেই এক্সাটলি তা দিচ্ছে না। অনলাইন ভার্সনে ভেরিয়েশন থাকলে লাইসেন্স নিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘রেডিও-টেলিভিশন তো অনলাইন করার জন্য না, তারা যে মাধ্যমে চালাবে সেই মাধ্যমে তারপরে যদি অনলাইন করতে হয় তাহলে রেডিও-টেলিভিশন দুটোকেই অনুমতি নিতে হবে। তাহলে কি নিবন্ধন লাগবে প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন,  ‘হ্যাঁ, নিবন্ধন নিতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত সম্প্রচার কমিশন না হবে ততক্ষণ তথ্য মন্ত্রণালয় যে কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করবে সেটাই হবে পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষ।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর