ঘাটাইলে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কাঁচা-পাকা সড়ক

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বন্যায় ঘাটাইল উপজেলার একটি পৌরসভাসহ ১৪টি ইউনিয়নে কাঁচা-পাকা সড়ক ও প্রায় ৪৭টি বিদ্যালয়ের ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়াও অতি বৃষ্টির কারণে পাহাড়ি এলাকার কমলা, লেবুর বাগান, এ্যালোবেরার বাগান, ড্রাগন ফলের বাগান, আনারসের বাগান, সবজি বাগান সহ বন্যার কারণে কোটি কোটি টাকার সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। অপরদিকে হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমির বোরো আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।  দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় কারণে কৃষকের মনে দেখা দিয়েছে দুশ্চিন্তা। জমিতে ফসল না ফলাতে পারলে একদিকে যেমন তাদের না খেয়ে মরতে হবে অপরদিকে বর্গাদারকে শোধ করতে হবে মোটা অংকের ফসলের ক্ষতিপূরণ। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. এনামুল হক জানান, এবারের বন্যায় ঘাটাইলে ১৮৭টি গ্রামের ৫ হাজার ২০টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কাঁচা-পাকা রাস্তার পরিমাণ ৪১০ কিঃমিঃ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হয়েছে ৪৭টি, এর মধ্যে ৩১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৬টি। এক হাজার ১শ’ হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণরূপে বিনষ্ট হয়েছে।

এ ছাড়া  ২ কিঃমি বাধেরও ক্ষতি সাধিত হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন দপ্তর ও উপজেলা বন্যা নিয়ন্ত্রণ সেলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারী বৃষ্টিপাত ও বন্যায় টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ঘাটাইল অংশে অসংখ্য খানা খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ঘাটাইল উপজেলা সদরের হাসপাতাল মোড় থেকে কলেজ মোড় পর্যন্ত বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটেছে এবং দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। উপজেলা প্রকৌশলী জানান, সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতাধীন ঘাটাইল-ধলাপাড়া-সাগরদিঘী সড়ক, ঘাটাইল-ছুনটিয়া-ভূয়াপুর এবং গারোবাজার- সখিপুর সড়কের প্রায় ৬০ কিঃ মিঃ পাকা সড়ক খানা-খন্দের সৃষ্টি হয়ে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া উপজেলার ২৫টি গ্রামীন পাকা সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এগুলোর মধ্যে ঘাটাইল-জামুরিয়া-পাঁচটিকরী, পাকুটিয়া, সরাবাড়ি, গানজানা, ফুলহারা, দয়াকান্দি, হাজিপুর, চেরাভাঙ্গা, মোগলপাড়া-আনেহলা, বেলদহ-উপুলদিয়া, কদমতলী-কছিমধরা এবং হামিদপুর-বাগুনডালী সড়ক উল্লেখযোগ্য। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আঃ মতিন বিশ্বাস জানান, এবারে বন্যায় ১১ শ’ হেক্টর জমির ফসল হানি হয়েছে। এর মধ্যে বোর ধান ৮শ’ হেক্টর ও ৩ শ’ হেক্টর সবজির ক্ষতি হয়েছে। টাকার হিসাবে এ ক্ষতির পরিমাণ প্রায় কোটি, কোটি টাকা। এ ব্যাপারে ঘাটাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার অঞ্জন কুমার সরকার মানবজমিনকে বলেন, এবারের বন্যাটা দীর্ঘ মেয়াদি হওয়ার কারণে ক্ষতির পরিমাণটাও বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এখনো পানি নেমে না যাওয়ার কারণে সমুদয় ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। বিভিন্ন দপ্তরের লোকজনকে সাথে নিয়ে আমরা জরিপ করে চলছি। আশা করি দু-এক সপ্তাহের মধ্যেই এর সঠিক হিসাব মিলবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর