নির্মাণ কাজ শেষ হলো ১৪০ কোটি ডলার ব্যয়ে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম আজম মসজিদ

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আলজেরিয়ার আজম মসজিদ। বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম মসজিদ এটি। রমজানে উদ্বোধনের কথা ছিল। মহামা’রি করোনার কারণে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হয়নি। উদ্বোধনের আগেই সুউচ্চ মিনারা থেকে প্রথম বারের মতো আজানের সুমধু ধ্বনি ভেসে আসছে।

রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে নব নির্মিত এ মসজিদটি উদ্বোধন করার প্রত্যাশা ছিল তবে উদ্বোধনের আগেই প্রথমবারের মতো এই মসজিদ থেকে আজানের সুমধুর কণ্ঠ শোনা গিয়েছে। পবিত্র রমজান মাসে আলজেরিয়ার এ পবিত্র তৃতীয় বৃহত্তম মসজিদল আজম উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল।

আলজেরিয়ার সমুদ্র উপকূলে মসজিদুল আজম এর কাজ ২০১২ সালে শুরু হয়। পবিত্র নগরী মক্কার মসজিদে হারাম ও মদিনার মসজিদে নববির পর আলজেরিয়ায় নব নির্মিত এ মসজিদটি সবচেয়ে বড়। হারামাইন-আশশারিফাইনের পরে এটি বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম মসজিদ। এটিতে নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪০ কোটি ডলার।

একজনজরে মসজিদে তথ্য: নাম : আলজেরিয়া গ্র্যান্ড মসজিদ, আয়তন : ২০ হাজার বর্গমিটার, মিনারের উচ্চতা : ৮৭৪ ফুট, একসঙ্গে নামাজ আদায় : ১ লাখ ২০ হাজার মুসল্লি, লাইব্রেরি : মসজিদ চত্বরে দ্য দাজমা আল দাজাজায়ের নামে ১০ লাখ বই সমৃদ্ধ পাঠাগার থাকবে।

২১ হাজার ৮শ মিটারের এ লাইব্রেরি হলে এক সঙ্গে ২ হাজার লোক বসে বই পড়তে পারবে, গাড়ি পার্কিং : তিন স্তর বিশিষ্ট ১ লাখ ৮০ হাজার বর্গমিটারের আন্ডারগ্র্যাউন্ড গাড়ি পার্কিং-এর ব্যবস্থা রয়েছে। এতে একসঙ্গে ৬ হাজার গাড়ি রাখা যাবে, হল রুম : ১৬ হাজার বর্গমিটারের দুটি কনফারেন্স হল। একটিতে ১৫০০ এবং অপরটিতে ৩০০ আসন রয়েছে।

অনন্য আকর্ষণ : মসজিদটি সৌরবিদ্যুৎ দ্বারা পরিচালিত হবে, নির্মাণ ব্যয় : ১৪০ কোটি ডলার, ডিজাইন : জার্মানের প্রকৌশলী ‘ইউরগান এঙ্গেল’, নির্মাণ তত্ত্বাবধানে : গৃহায়ণ মন্ত্রণালয় আলজেরিয়া।

চলতি বছর রমজানে রাষ্ট্রীয়ভাবে এ মসজিদটি উদ্বোধন করার কথা ছিল। প্রাণঘা’তী বৈশ্বিক মহামা’রিক করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সব মসজিদ বন্ধ থাকায় উদ্বোধন হয়নি নবনির্মিত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম আলজেরিয়ার এ মসিজদটি।

তবে মহামা’রি করোনার প্রাদুর্ভাব কমে আসলে রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমেই উদ্বোধন হবে এ বিশাল মসজিদ। রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতায় উদ্বোধন হলেও নিয়মিত এ মসজিদে আজান দেয়া শুরু হয়েছে।

আরো পড়ুন: আগামী ১৫ বছরের মধ্যে রাশিয়ার জনসংখ্যার ৩০ ভাগই হবে মুসলিম !

আয়তনে বিশ্বের সবচেয়ে বড় দেশ রাশিয়ায় বাড়ছে মুসলিম জনসংখ্যা। দিন দিন ইসলামের দিকে ঝুঁকছেন দেশটির মানুষ। আর তাই আগামী ১৫ বছরের মধ্যে দেশটির মোট জনসংখ্যার ৩০ ভাগই হবে মুসলিম।

এছাড়াও আগামী ৩০ বছরের মধ্যে সেদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ হবে মুসলিম। গত সোমবার (১০ আগস্ট) রাশিয়ার ফেডারেল অ্যাসেম্বলির নিম্নকক্ষে ‘স্টেট ডুমা’ আয়োজিত এক ফোরামে দেশটির অর্থোডক্স চার্চের প্রধান যাজক দিমিত্রি স্মির্নভ এসব তথ্য তুলে ধরেন। খবর দ্যা মস্কো টাইমসের।

এদিকে রাশিয়ার গ্র্যান্ড মুফতী রাভিল জাইনুদ্দিন বলেন, যে হারে মুসলিম সংখ্যা বৃদ্ধি হচ্ছে সেভাবে মসজিদ নির্মাণ হচ্ছেনা রাশিয়ায়। আর এ কারণে নামাজ আদায়ে মসজিদের সংকট দেখা দিয়েছে। রাভিল জাইনুদ্দিনের বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করে ওই ফোরামে যাজক দিমিত্রি স্মির্নভ বলেন,

রাশিয়ায় মুসলিম জনগোষ্ঠী বৃদ্ধির হার এভাবে অব্যাহত থাকলে ২০৫০ সালে মুসলিমরাই হবে রাশিয়ার সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী। নামাজ আদায়ে আরও অনেক মসজিদ নির্মাণ করতে হবে জানিয়ে গ্র্যান্ড মুফতী রাভিল জাইনুদ্দিন বলেন, ২০১৮ সালে রাশিয়ার মসজিদগুলোতে প্রায় ৩২ লাখ মুসলিম অংশগ্রহণ করেছে।

এ সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৮ সালের হিসাব অনুযায়ী, রাশিয়ার মোট জনসংখ্যা ছিল ১৪৬.৮ মিলিয়ন। এর মধ্যে মুসলিম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা প্রায় ১৪ মিলিয়ন , যা রাশিয়ার মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশ।

রাশিয়ায় নর্থ কাউকাসুস ও তাতারাস্তান অঞ্চল দুটি দেশটির মুসলিম প্রধান অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। আর এই দুই প্রজাতন্ত্রে উচ্চহারে মুসলিম জনসংখ্যা বাড়ছে বলে জানিয়েছে রাশিয়ার জনপরিসংখ্যান রিপোর্ট

আরো পড়ুন: এথেন্সে নামাজের স্থানগুলো বন্ধের নির্দেশ,বৈষম্যের শিকার মুসলিমরা !

গ্রিসের রাজধানী এথেন্সে বিপুলসংখ্যক মুসলিম মারাত্মক বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র রাজধানী এথেন্সেই কোনো মসজিদ নেই। মুসলিমরা গ্যারেসজসহ কোনো কোনো স্থানকে নামাজের স্থান হিসেবে ব্যবহার করছিল।

কিন্তু ওইসব স্থানও বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। অথচ বারবার প্রতিশ্রুতি দেয়া সত্ত্বেও নগরীতে একটি মসজিদ নির্মাণ হচ্ছে না। এর ফলে মারাত্মক সমস্যায় পড়েছেন সেখানকার বিপুলসংখ্যক মুসলিম। এ ব্যাপারে টিআরটি ওয়ার্ল্ড একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, গ্রিসের এথেন্সে অনুমোদনহীন স্থানগুলোতে নামাজ না পড়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার।

এসব স্থানের কোনো কোনোটিতে ১৯৮৯ সাল থেকে নামাজ চলত। ফলে মুসলিমরা মারাত্মক বিপদে পড়েছেন। গ্রিসের এক মুসলিম বলেছেন, এটি আমাদের নিজ বাড়ির মতো ছিল। যেখানে আমরা প্রতিদিন পাঁচবার সালাত আদায় করেছি। এখন এটি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

আমরা তাহলে এখন কোথায় যাব? গ্রিস কর্তৃপক্ষ বলছে, আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্রীয় অভিযোগ জানানোর পরেই বন্ধের আদেশ দেয়া হয়েছে। এ ব্যপারে খালিদ বাদার নামে এক মুসলিম বলেন, গ্রিসে মুসলিমদের বেশিরভাগ জায়গায় অনুমতির জন্য যোগ্য হিসেবে ধরা হয় না।

আর আমরা আরো ভালো কোথাও যেতে চাইলে ব্যয়বহুল ভাড়া ও বাড়িওয়ালাদের বৈষম্যমূলক আচরণ বাধা হয়ে দাঁড়ায়। নতুন নির্দেশের কারণে এথেন্সের ৯টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মসজিদ হিসেবে ব্যবহৃত স্থানগুলো যেকোনো সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তারা বহু বছর ধরে গ্রিসে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস ও কাজ করছে। কিন্তু তারা বলছেন, অন্য জনগণের চোখে তারা দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকের মতো আচরণ পায়। একজন মুসলিম বলেন, আমরা খুব খারাপ লাগে। কারণ গ্যারেজ বা গুদামে নামাজ পড়তে কারণ সেখানে মসজিদের সুবিধা নেই।

আমাদের অবশ্যই একটি মসজিদ থাকা প্রয়োজন। এভাবে বেসমেন্টে গোপনে নামাজ পড়াটা অসম্মানের। গ্রিসের মুসলিম এসোসিয়েশনের প্রধান নামিল ইগহান্দর বলেন, আমি রাষ্ট্রের কাছে আমাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করবে বলে আশা করেছিলাম। আজ তারা মসজিদ না দিয়ে কবস্থানের মতো স্থান দিচ্ছেন।

আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের স্থান মসজিদকে বিদ্রুপে পরিণত করেছে। অথচ গ্রিস সর্বদা তার গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যে গর্বিত করে এসেছে। কিন্তু এখানে দীর্ঘ সময় ধরে মুসলমানদের সাথে মর্যাদাহানিকর আচরণ করা হচ্ছে এবং তারা ধর্মীয় বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছে।

সূত্র : টিআরটি ওয়ার্ল্ড

আরো পড়ুন: ১৬০০ বছর যাবত কাবার তত্বাবধান করে আসছে বনু শাইবা গোত্র !

দেড় শতাধিক প্রযুক্তিবিদ ও নির্মাতা বুধবার (২৭ জুলাই) পবিত্র কা’বা ঘরকে কিসওয়া তথা গিলাফ (বিশেষ কালো কাপড়) দ্বারা আচ্ছাদিত করেছেন।

গত সপ্তাহে কা’বার সিনিয়র তত্ত্বাবধায়ক সালেহ বিন জয়নুল আবিদীন আল-শাইবির হাতে পবিত্র কা’বা ঘরের জন্য প্রস্তুতকৃত নতুন কিসওয়াটি বাদশাহ সালমানের পক্ষ থেকে তুলে দেন মক্কার গভর্নর প্রিন্স খালিদ আল-ফয়সাল।

মক্কার উম্মুল জাউদে অবস্থিত কিং আবদুল আজিজ কমপ্লেক্সে কিসওয়ার কাপড়টি তৈরি করা হয়। এটি প্রাকৃতিক রেশমের তৈরি বিশেষ একটি কাপড় যা কালো বর্ণের। কিসওয়ার কাপড়টি ১৪ মিটার লম্বা। এর ওপরের তৃতীয় ভাগে একটি বেল্ট রয়েছে যা চওড়ায় ৯৫ সে.মি. ও লম্বায় ৪৭ মিটার।

বেল্টটিতে ১৬ টি স্কয়ার আকৃতির কাপড়ের অংশ রয়েছে যেগুলো আবার আরেকটি এমন স্কয়ার আকৃতির কাপড় দ্বারা বেষ্টিত যাতে বিভিন্ন ইসলামিক মোটিফ (আয়াত বা হাদিস সম্বলিত ক্যালিগ্রাফি) খোদাইকৃত রয়েছে।

পুরো কিসওয়ার কাপড়টি আলাদা চার অংশে বিভক্ত। পবিত্র কা’বা ঘরের দেয়ালের চারপাশ ঢেকে রাখার জন্যই মূলত চারটি অংশে পুরো কিসওয়া তৈরি করা হয়। তাছাড়া,দরজার জন্য আলাদা ভাবে একটি পর্দা তৈরি করা হয় যা দিয়ে কা’বা ঘরের দরজা ঢেকে রাখা হয়। পর্দা তৈরি করা একটি বহু-পর্যায় প্রক্রিয়ার অন্তর্ভুক্ত। কারণ কাপড়টির চার অংশের সমন্বয়ে কিসওয়াটিকে প্রথমে কা’বা ঘরে লাগানো হয়।

পরবর্তীতে, উপরের তৃতীয় অংশে বেল্ট এবং ইসলামিক মোটিফ খচিত টুকরাগুলো কিসওয়ায় সংযোজন করা হয়। এই পর্যন্ত ১১০ জনেরও বেশি তত্ত্বাবধায়কের পবিত্র কা’বা ঘরের তত্বাবধান করার সৌভাগ্য হয়েছে। তত্বাবধানের ঐতিহাসিক রীতিটি শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে পালিত হয়ে আসছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর