৮ দিন পর খুলল টেকনাফ থানার প্রবেশদ্বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দেশের আলোচিত সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান পুলিশের গুলিতে হত্যার পর টেকনাফ মডেল থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ গ্রেফতার আতঙ্কে বন্ধ করে রাখা হয়েছিল থানার মেইন গেট।

স্থানীয়দের মতে, সিনহা হত্যা ঘটনার আগে ওসি প্রদীপের আমলে থানায় প্রবেশের মেইন গেটের শুধু পকেট গেটটি খোলাছিল। আর পকেট গেটে সবসময় বসা থাকতেন একজন কনস্টেবল। তাকে টপকিয়ে বা অনুরোধ করে ভেতরে ঢোকার সাহস কিংবা সুযোগ ছিল না কারও।

এমনকি কাউকে ধরে নিয়ে গেলে তার আত্মীয়স্বজন কিংবা আপনজন থানায় ঢোকার কোনো সুযোগ পেতেন না।

গত ৩১ জুলাই টেকনাফের বাহারছড়ার ইন্সপেক্টর লিয়াকত আলীর গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান নিহতের ঘটনায় পকেট গেটের সুযোগটিও বন্ধ হয়ে যায় স্থানীয়দের। এই ভয়ানক ওসি প্রদীপ নিজেই আতঙ্কে বন্ধ করে দেন থানার প্রধান ফটক।

সর্বশেষ সিনহা হত্যা মামলায় ওসি প্রদীপসহ সাত পুলিশ জেলে যাওয়ার পর ৮ আগস্ট নতুন ওসি হিসেবে টেকনাফ থানায় যোগদান করেন কুমিল্লা চান্দিনার সাবেক ওসি আবুল ফয়সল। তিনি যোগদানের দুদিনের মাথায় থানার প্রধান ফটক খুলে দেন।

টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল বশর বলেন, সাবেক ওসি প্রদীপের আমলে গত ২২ মাস থানা ছিল মৃত্যুকূপের মতো। কেউ ভয়ে ঢোকার সাহস পেতেন না। পাশাপাশি কাউকে ঢুকতেও দিতেন না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকলেও থানায় আইনি সহায়তা পাননি সাধারণ মানুষ। এ কথা প্রকাশ করলে বা সিনিয়র অফিসারদের বললে তার ওপর চলে আসত ইয়াবার তকমা। শুরু হতো নির্যাতন ও নিপীড়ন।

এ ছাড়া দীর্ঘদিন পর থানার মেইন গেট খুলে দেয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে টেকনাফ মডেল থানার নবাগত ওসি আবুল ফয়সল বলেন, নিরাপত্তার বিষয় ছিল, যেহেতু ওসি ছিল না। হঠাৎ করে সমস্যা দেখা দিয়েছে। সে কারণে হয়তো থানার মেইন গেট বন্ধ ছিল।

আমি আসার পরেই যারা অভিযোগকারী বা সেবাপ্রত্যাশী, তাদের আইনগতভাবে সেবা দেয়ার জন্য গেট খুলে দেয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা অপরাধীদের বিরুদ্ধে এবং নির্যাতিত সাধারণ মানুষের পক্ষে অতীতেও কাজ করেছি ভবিষ্যতেও করে যাব।

এদিকে গত ৩১ জুলাই রাতে মেজর (অব.) সিনহাকে সাবেক ওসি প্রদীপের হুকুমে বাহারছড়ার পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ লিয়াকত গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় ৬ আগস্ট দুপুরে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ টেকনাফের বিচারক তামান্না ফারহার আদালতে অভিযোগ করেন সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস।

পরে আদালত সেটি টেকনাফ থানাকে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেন। এ ছাড়া মামলার তদন্তভার দেয়া হয় র্যা ব ১৫-এর অধিনায়ককে। মেজর সিনহার বোনের করা মামলায় ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতসহ সাত পুলিশ সদস্য বর্তমানে কক্সবাজার জেলা কারাগারে রয়েছেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর