শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কমছে ছুটি, বাড়ছে ক্লাস

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দেশে চলমান কভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে শিক্ষাবর্ষের মেয়াদকাল না বাড়িয়ে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে শিক্ষাবর্ষ শেষ করার পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি কমিয়ে পরবর্তী শিক্ষাবর্ষে ক্লাসের সময় বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বরের মধ্যে স্কুল খোলা সম্ভব হলে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা নেয়া হবে। আর যদি নভেম্বর মাসেও সেটা সম্ভব না হয় তবে শিক্ষার্থীদের ‘অটো পাস’ দিয়ে পরবর্তী শ্রেণিতে প্রমোশন দেয়া হবে।

তবে আপাতত সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার চিন্তা নিয়েই এগোচ্ছে দুই মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের এমন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য ‘রিকভারি প্ল্যান’ তৈরি করা হয়েছে। এ লক্ষ্যেই আগামীকাল বুধবার এনসিটিবিতে কারিকুলাম বিশেষজ্ঞদের বৈঠক শুরু হচ্ছে। এছাড়া কয়েকদিন ধরে এ নিয়ে ময়মনসিংহে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমিতে (নেপ) বিশেষজ্ঞদের বৈঠক চলছে।

জানা গেছে, প্রাথমিকের ‘রিকভারি প্ল্যান’ তৈরি করেছে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি (নেপ)। আর মাধ্যমিকের ‘রিকভারি প্ল্যান’ তৈরি করেছে বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিট (বিইডিইউ)। এরই মধ্যে উভয় সংস্থাই তাদের পরিকল্পনা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে। পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতেই আগামীকাল এনসিটিবিতে এই বৈঠক ডাকা হয়েছে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ডিসেম্বর মাসে শ্রেণি কার্যক্রম সমাপ্তির লক্ষ্য ধরে কারিকুলাম ও সিলেবাস মূল্যায়নের কাজ করছে নেপ। এ লক্ষ্যে তাদের দুটি পরিকল্পনা তৈরি করতে বলা হয়েছে। একটিতে ১ সেপ্টেম্বর ক্লাস কার্যক্রম শুরুর লক্ষ্য ধরা হবে। আরেকটিতে ১ অক্টোবর থেকে কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনা থাকবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনার কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ৮৮টি কর্মদিবস নষ্ট হচ্ছে। ১৬ মার্চ পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা মাত্র ৪১ দিন কর্মদিবস পেয়েছিল। কিন্তু তেমন একটা লেখাপড়া হয়নি। উল্লিখিত পরিকল্পনা-১ অনুযায়ী ১ সেপ্টেম্বর থেকে পরীক্ষার আগে শিক্ষার্থীরা মাত্র ৬৬ দিন পাচ্ছে। আর ১ অক্টোবর থেকে স্বাভাবিকভাবে ৫২ দিন কর্মদিবস থাকে। তবে পরিকল্পনা দুটি বাস্তবায়নে শীতকালীন ১০ দিনের ছুটি বাতিল বা কমনোর সুপারিশও আছে।

এ বিষয়ে বিইডিইউয়ের ঊর্ধ্বতন বিশেষজ্ঞ (পরীক্ষা ও মূল্যায়ন) রবিউল কবীর চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, সেপ্টেম্বরে স্কুল খুললে কিভাবে পরবর্তী কার্যক্রম চলবে, অক্টোবরে বা নভেম্বরে খুললে কিভাবে চলবে সে ব্যাপারে আমরা বিস্তারিত পরিকল্পনা জমা দিয়েছি। যদি নভেম্বরের মধ্যে স্কুল খোলা সম্ভব হয় তাহলে সংক্ষিপ্ত পরিসরে পরীক্ষা নেওয়া হবে। সেটা সম্ভব না হলে আমরা অটো প্রমোশন দিতে বলেছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা অষ্টম শ্রেণির কিছু বিষয়ের কারিকুলাম ম্যাপিং করেছি। এটা হচ্ছে, যেটা না শিখলেই নয় সে বিষয়গুলো চিহ্নিত করা। প্রয়োজনে এনসিটিবি সব শ্রেণিরই কারিকুলাম ম্যাপিং করবে। এরপর একটি বিষয়ের যে অংশটুকু গ্যাপ থাকবে সেই নির্দেশিকা শিক্ষকদের দেওয়া থাকবে। তাঁরা পরবর্তী শ্রেণিতে শিক্ষার্থীদের তা শেখাবেন। এ জন্য আগামী বছর ৪০ মিনিটের একটি ক্লাস ৫০ মিনিট করে নেওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া কিছু ছুটি কমিয়ে দিয়ে শ্রেণি কার্যক্রম চালানো যেতে পারে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর