পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ টেকসই ও সময়ে প্রাপ্তি নিশ্চিত হোক

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণের ক্ষেত্রে কাগজ, কালি ও ছাপার মানের ওপর জোর দেয়া হয় সব সময়। কারণ অস্বাস্থ্যকর কাগজ ও নিুমানের কালিতে ছাপা হলে সেই বই পড়া, ধরা ও ব্যবহার করার মাধ্যমে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকির আশঙ্কা রয়েছে। তবে এবার পাঠ্যবই মুদ্রণের ক্ষেত্রে দেখা দিয়েছে ব্যতিক্রমী এক হিসাব।

আন্তর্জাতিক বাজারে কাগজ তৈরির কাঁচামাল- মণ্ডের দাম কমে যাওয়া, করোনার কারণে কাগজ রফতানি কম হওয়া, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কাগজের ব্যবহার বন্ধ ইত্যাদি কারণে চাহিদা কম এবং গত বাজেটে কাগজের ওপর থেকে ১০ শতাংশ ভ্যাট কমানো, সর্বোপরি করোনাকালে ব্যাংক ঋণ পরিশোধে নগদ টাকার জন্য মিল মালিকদের কম দামে কাগজ বিক্রির কারণে মুদ্রণে সাশ্রয়ের পথ উন্মোচিত হয়েছে।

এছাড়া মুদ্রকদের এবার সিন্ডিকেটও ছিল না, সবাই স্বাধীনভাবে দরপত্রে অংশ নিয়েছেন। এসব ইতিবাচক, তাতে সন্দেহ নেই। তবে দাম ও খরচের চেয়ে বইয়ের মান, সময়মতো কাজ সম্পূর্ণ করে বই ডেলিভারি দেয়ার বিষয় নিশ্চিত করাই বেশি যৌক্তিক।

জানা যায়, আগামী শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ৩৫ কোটি বই ছাপানো হবে। এর সম্ভাব্য খরচ ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা। মোট ৭টি দরপত্রের মাধ্যমে বইগুলো ছাপানো হবে। অতীতে দেখা গেছে, বেশি দর দিয়েও সময়মতো বই পাওয়া ও কাগজ-কালির মান ঠিক রাখা অনেক ক্ষেত্রে সম্ভব হয়নি।

এবার কম দামের কারণে যাতে মুদ্রকরা কোনো ধরনের নয়ছয় করতে না পারে, মান ঠিক রাখে এবং সময়মতো বই সরবরাহ করে সেটি নিশ্চিত করতে হবে। আশার কথা, এনসিটিবি চেয়ারম্যান বলেছেন, দর কম হলেও কারও ফাঁকি দেয়ার সুযোগ থাকবে না।

বইয়ের সামগ্রীর গুণগত মান নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে, সে অনুযায়ী মান নিশ্চিত করার জন্য মন্ত্রণালয় তৎপর রয়েছে এবং মনিটরিং এজেন্সি ও এনসিটিবির নিজস্ব টিমের পর্যবেক্ষণ বাড়ানো হবে। বইয়ের পেছনে খরচ কোনো ব্যয় নয়, বরং এটি বিনিয়োগ; শিক্ষিত জাতি গঠনে বৃহত্তর বিনিয়োগ।

এবার বিনিয়োগ কমের মধ্যেও যদি তেমন কিছু হয় তবে কম খরচে মানসম্মত বই পাওয়া স্বপ্ন থেকে যাবে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর