দেশজুড়ে করোনাভাইরাসের বিস্তার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাজধানীর চেয়ে দেশের বিভিন্ন বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেশি বলে জানা গেছে। রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)-এর একজন সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মনে করেন, আপাতদৃষ্টিতে দেশে করোনা পরিস্থিতি স্থিতিশীল মনে হলেও এটি ক্রমশ বাড়ছে; বিশেষ করে ঢাকার বাইরে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি রোগী শনাক্তের পর তাদের আলাদা করা এবং ওইসব রোগীর ‘কন্টাক্ট ট্রেসিং’ করে পরীক্ষা ও আলাদা রাখার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।

ইতোপূর্বে রাজধানীর বাইরে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ অধিক বলে আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। উদ্বেগ প্রকাশ করে তারা বলেছেন, সেখানে বসবাসরত মানুষ স্বাস্থ্যবিধি সঠিকভাবে মানছেন না; উপরন্তু জনসমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শও তারা উপেক্ষা করছেন।

এর ফলে সংক্রমণ বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে আসন্ন ঈদে মানুষজন যদি আগের মতো দল বেঁধে ঢাকা থেকে গ্রামমুখী হয় এবং স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে কোরবানির পশু কিনতে হাটবাজারে ভিড় করে তাহলে সংক্রমণ আরও বাড়বে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।

দেশে করোনাভাইরাস বিস্তারের শুরুতে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে বসবাসরতদের অনেকেই সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে শহর ছেড়েছেন। এছাড়া গত ঈদ ছাড়াও কয়েক দফায় প্রবাসীসহ বিপুলসংখ্যক মানুষ শহর থেকে নিজ নিজ জেলা, উপজেলা কিংবা গ্রামে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে অবাধ চলাফেরা করেছেন।

এ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ভাইরাসটি তারা সেখানে রেখে এসেছেন বলে অনেকের ধারণা। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, মূলত এরপর থেকেই জেলা-উপজেলা পর্যায়ে নীরবে সংক্রমণ ঘটিয়ে চলেছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে করোনার নমুনা পরীক্ষাসহ বিভিন্ন চিকিৎসা সুবিধার প্রাপ্যতা অপ্রতুল।

এ অবস্থায় দেশব্যাপী গণহারে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে তা ব্যাপক প্রাণহানির কারণ হবে, এ কথা বলাই বাহুল্য।

দেশে প্রথম করোনাভাইরাসের রোগী শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। উদ্বেগজনক হল, এরপর থেকে ক্রমাগত বেড়েই চলেছে শনাক্তের হার ও মৃতের সংখ্যা। অবশ্য পাশাপাশি আক্রান্তদের মধ্যে অনেকেই সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরছেন। কার্যকর কোনো ভ্যাকসিন আবিষ্কারের আগ পর্যন্ত করোনাভাইরাস প্রতিহত করতে সচেতনতা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর সর্বাধিক জোর দিচ্ছেন বিশ্বের সব চিকিৎসক, বিজ্ঞানী ও গবেষক। সুতরাং, জনসচেতনতাই হল ভাইরাসটির বড় প্রতিষেধক।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর