শিবগঞ্জে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ১৯ হাজার হেক্টর

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বগুড়ার শস্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত শিবগঞ্জ উপজেলা।  কৃষকরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন আমন আবাদে।  কাক ডাকা ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জমিতে হাল দিয়ে মাটি কাদা করা, পাতানো চারা তুলে জমিতে লাগানোর কাজে ব্যস্ত কৃষক।  কৃষকরা বলছেন এবার শিবগঞ্জে বোরোর ফলন ভালো হয়েছে।  আমনের ফলনও ভালো হবে বলে আশা করছেন কৃষক।
করোনা প্রাদুর্ভাবের মধ্যেও ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে আমনের চারা রোপন চলছে মাঠে। উপজেলার কয়েকটি এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
চলতি আমন মৌসুমের ধান উৎপাদনের লক্ষ নিয়ে এই অঞ্চলের কৃষকরা মাঠের আবাদী জমিতে আমন ধানের চারা রোপন শুরু করেছে।  শিবগঞ্জ উপজেলায় আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়। এই অঞ্চলের কৃষকরা বিপুল পরিমান ফসল উৎপাদন করে এ অঞ্চলের খাদ্য চাহিদা পূরনের পরেও ৭০ ভাগ ধান দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে থাকে। দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যা হলেও শিবগঞ্জে এখনও তেমন পরিস্থিতি না হওয়ায় কৃষকরা কোমর বেধে মাঠে নেমেছে আমন ধান রোপন করার জন্য।
চলতি আমন মৌসুমে শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ১৯ হাজার ২’শ ৭০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। আমন চাষ করার জন্য ১ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে বীজতলায় চারা ফেলানো হয়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে শিবগঞ্জ উপজেলার বারোটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় আমন চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৯ হাজার ২’শ ৭০ হেক্টর জমিতে। ইউনিয়ন ভিত্তিক দেখা যায়, শিবগঞ্জ ইউনিয়নে ১৭০০ হেক্টর, ময়দানহাট্টা ইউনিয়নে ১৯৭৫ হেক্টর, কিচক ইউনিয়নে ১৭১০ হেক্টর, আটমূল ইউনিয়নে ১৭২০ হেক্টর, বুড়িগঞ্জ ইউনিয়নে ১৫০০ হেক্টর, পীরব ইউনিয়নে ১৫৫০ হেক্টর, মাঝিহট্ট ইউনিয়নে ১৬০০ হেক্টর, বিহার ইউনিয়নে ১০৪০ হেক্টর, রায়নগর ইউনিয়নে ১২৫০ হেক্টর, মোকামতলা ইউনিয়নে ১৫৫০ হেক্টর. সৈয়দপুর ইউনিয়নে ১৬৫০ হেক্টর. দেউলী ইউনিয়নে ১৬১৫ হেক্টর. এবং শিবগঞ্জ পৌরসভায় ৭২০ হেক্টর জমিতে আমন চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বোরো মৌসুমে ধানের উচ্চমূল্যের কারণে বর্তমান এ মৌসুমে আমন রোপণে কৃষকদের মাঝে আগ্রহ দেখা দিয়েছে আগের বছরের তুলনায় বেশি। উপজেলায় বীজ, সারের কোনো সংকট নেই। আমন আবাদের জমির আওতা বাড়ানো ও উৎপাদন বাড়ানো আমাদের লক্ষ্য।  চলতি মৌসুমে উপজেলায় রাজস্ব খাত থেকে ৩০ টি আমন প্রদর্শনী প্লোট এবং এন এ টি পি-২ থেকে ৯ টি প্রদর্শনী প্লোট করা হয়েছে।  এতে কৃষকরাও উৎসাহিত হচ্ছে।  আমন আবাদ মৌসুমে আবহাওয়া ঠিকঠাক থাকলে উৎপাদনের নির্ধারিত লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।  এ লক্ষ্যে কৃষি বিভাগ সবসময় কৃষকদের পাশে থাকবে।
মৌসুমের শুরু থেকে আবহাওয়া ভাল ও জমিতে পানি সেচ দিতে হয়নি যার কারনে অতিরিক্ত টাকা খরচ হবেনা এ বছর বীজতলায় চারা নষ্ট হওয়ার সংবাদ পাওয়া যায়নি। এবছর কৃষকরা আমন ধান হিসেবে ব্রি ধান-৪৯, বিনা ধান-৭, কাটারিভোগ এবং হাইব্রিড আতব জাতের ধান রোপন করেছে।  এলাকার কৃষকরা জানিয়েছে বর্তমানে শিবগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন্ মাঠে আমন ধান লাগানো শুরু হয়েছে চারা সংকটের কোন সম্ভাবনা নাই।  এ বছর অনেক কৃষক তাদের লক্ষমাত্রা অনুযায়ী জমি রোপন করেও চারা বিক্রয় করতে পারবে বলে এলাকার কৃষক লোকমান, খলিল , মোত্তালিব, আজমলসহ অনেকে জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আল মুজাহিদ সরকার বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে কৃষকদের সব ধরনের সহায়তা প্রদান করার চেষ্টা করছি।  ইউনিয়ন পর্যায়ে কৃষকদের সেবা দানের জন্য ইউনিয়ন পরিষদে কৃষি সেন্টার খোলা আছে।  দুর্যোগ মোকাবেলায় কৃষকদের পাশে আছে কষি বিভাগ। কৃষকরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আমাদের কল সেন্টার থেকেও তাদের সেবা নিতে পারেন।
Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর