রিজেন্টকাণ্ডে স্বাস্থ্যের ডিজিসহ ১২ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে দুদক

হাওর বার্তা ডেস্কঃ নানা অব্যবস্থাপনায় জর্জরিত লাইসেন্সবিহীন রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে করোনার চিকিৎসার জন্য চুক্তি করা নিয়ে মুখোমুখি অবস্থানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। একে অন্যকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা। এমন অবস্থায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) আবুল কালাম আজাদ, অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানাসহ ১০ থেকে ১২ জন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

চলতি সপ্তাহে তাদের ডাকা হতে পারে দুদক সূত্রে জানা গেছে। রিজেন্টকাণ্ডে যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে তাদের নামে চিঠিও তৈরি হচ্ছে বলে জানা গেছে।

গত ৯ জুলাই সংবাদ সম্মেলনে দুদকের সচিব দিলওয়ার বখত জানিয়েছিলেন, রিজেন্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ দুদক তদন্ত করবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে করা চুক্তি ভঙ্গ ও করোনার ভুয়া রিপোর্ট দেয়ার ঘটনায় দেশজুড়ে আলোচনায় মো. সাহেদের রিজেন্ট হাসপাতাল। অথচ এই হাসপাতালের চিকিৎসার অব্যবস্থাপনা, লাইসেন্স না থাকার বিষয়টি নিয়ে আগে কেন দেখা হয়নি তা নিয়ে নানা সমালোচনা হচ্ছে।

কেন এই হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে তা নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দাবি মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের নির্দেশে তারা রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি করে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমন বক্তব্যের পর প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদের কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তিনি ব্যাখায় তার ব্যাখ্যায় রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যানের অনুরোধে গত ১৯ মার্চ তৎকালীন স্বাস্থ্যসচিব আসাদুল ইসলাম স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে একটি ‘ফাইল নোট’ দেন বলে উল্লেখ করেছেন।

গত ২১মার্চ স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ অনেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার উপস্থিতিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করে। হাসপাতালটিকে করোনা চিকিৎসার জন্য ডেডিকেটেড হিসেবে ঘোষণা দেয়।

কিন্তু গত ৬ জুলাই র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) এর ভ্রাম্যমাণ আদালত রিজেন্টের উত্তরা শাখায় জাল কোভিড-১৯ পরীক্ষার রিপোর্ট তৈরি ও চিকিৎসার জন্য রোগীদের কাছ থেকে বাড়তি ফি আদায়ের অভিযোগে অভিযান চালিয়ে সত্যতা পায়। পরদিন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশে হাসপাতালটির উত্তরা ও মিরপুর শাখা সিলগালা করে দেয়া হয়। এরপর থেকে বের হয়ে আসতে থাকে হাসপাতালটির ছয় বছর ধরে লাইসেন্স না থাকা, রোগীদের কাছ থেকে বড় অংকের বিল নেয়াসহ নানা অভিযোগ।

ওই অভিযানে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত কমপক্ষে ছয় হাজার নকল কোভিড-১৯ টেস্ট রিপোর্ট জব্দ করে হাসপাতালটি থেকে। এ ঘটনায় রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান শাহেদসহ ১৭ জনকে আসামি করে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি প্রতারণার মামলা দায়ের করা হয়। ইতিমধ্যে প্রধান আসামি সাহেদসহ বেশ কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়েছে।

দুদক সচিব ৯ জুলাইয়ের সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, রিজেন্ট হাসপাতালের পাশাপাশি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তারা এসব অনিয়মের সাথে জড়িত কি না তাও খতিয়ে দেখা হবে। একই সাথে রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক মোহাম্মদ শাহেদ ওরফে শাহেদ করিমের বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত শিগগিরই শুরু করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর