হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিশ্বজুড়ে গবেষকরা পরবর্তী প্রজন্মের অত্যাধুনিক করোনাভাইরাস পরীক্ষা নিয়ে কাজ করছেন, যা ব্যাপক সরঞ্জাম বা উচ্চ মানের প্রশিক্ষিত কর্মী ছাড়াই ৩০ মিনিটে বা এক ঘণ্টারও কম সময়ে শতভাগ সঠিক ফলাফল নিশ্চিত করবে। যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকরা বলছেন, আসন্ন নতুন ধরনের পরীক্ষা আরও নির্ভুল ফলাফল দিতে সক্ষম এবং সম্ভাব্যভাবে দেশব্যাপী তৎক্ষণাত পরীক্ষার সুযোগ এনে দেবে। তবে, বেশিরভাগ নতুন টেস্ট এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং ক্লিনিকগুলোতে আসতে আরো কয়েক মাস লাগবে। এ প্রসঙ্গে জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রের ড. আমেশ আদালজা বলেন, পরীক্ষা যত দ্রুত এবং সহজ করা যেতে পারে তারা সার্বজনীন হতে পারে। এটি মানুষকে কিছুটা স্বাভাবিকতার পথে ফিরতে সহায়তা করবে। বর্তমান পরীক্ষা ব্যাথাহীন এবং স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের কম ঝুঁকিতে ফেলে। তবে এগুলো সবসময় নির্ভুল হয় না। সংক্রমিত লোকদের ভুলভাবে ভাইরাসমুক্ত ঘোষণা করা এড়াতে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিকাল মাইক্রোবায়োলজিস্ট ড. রবীন্দ্র গুপ্ত এবং তার সহকর্মীরা একটি পয়েন্ট অফ কেয়ার টেস্ট তৈরি করছেন যা একই সাথে করোনভাইরাস এবং অ্যান্টিবডি সনাক্ত করতে পারে।
তবে, গবেষণাটি এখনো বৈজ্ঞানিক জার্নালে প্রকাশিত হয়নি। ড. উইলিয়ামস এবং তার দল তাদের ফলাফলটির এফডিএ অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছেন। কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. জেভ উইলিয়ামসের গবেষণাগারে গবেষকরা লালানির্ভর একটি করোনাভাইরাস পরীক্ষা সরঞ্জাম তৈরি করছেন যা প্রায় ৩০ মিনিটের মধ্যে রঙ-ভিত্তিক ফলাফল দিতে পারে। জিনের পরিবর্তে ভাইরাস প্রোটিন সনাক্ত করা অ্যান্টিজেন পরীক্ষাগুলিও এক ঘণ্টারও কম সময়ে ফ্লু-এর মতো অন্যান্য শ্বাসনালীর সংক্রমণ সনাক্ত করতে ব্যবহার করা হচ্ছে এবং এর বিপুল উৎপাদন সহজ।
করোনাভাইরাস অ্যান্টিজেন পরীক্ষার জন্য এখন অবধি মাত্র দুটি সংস্থা বেকটন ডিকিনসন অ্যান্ড কোম্পানি এবং কুইডেল এফডিএ থেকে জরুরি অনুমোদন পেয়েছে। গত সোমবার বেকটন ডিকিনসন জানায় যে, তাদের অ্যান্টিজেন পরীক্ষা ১৫ মিনিটের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করতে পারে। পরীক্ষার দ্রুততার পাশাপাশি, কুইডেল এবং বিডি’র উভয়েরই ভুল ফলাফলের হার ১৫ থেকে ২০ শতাংশের মধ্যে রযেছে। অন্যান্য অ্যান্টিজেন পরীক্ষাগুলি বিভিন্ন দেশে চালু রয়েছে এবং বিশেষজ্ঞরা অনুমান করেছেন যে, আরও কয়েকটি সংস্থা সম্ভবত আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই মার্কিন ছাড়পত্র চাইবে। এদের মধ্যে রয়েছে মেডিকেল ডিভাইস প্রস্তুতকারক ওরাসিওর, যারা ইবোলা এবং এইচআইভি’র জন্য অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করেছে।
ওরাসিওরের সভাপতি এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্টিফেন টাং দাবি করেছেন যে, তার দল একটি গোপন উপকরণ তৈরি করছে, যা করোনাভাইরাস পরীক্ষা আরও নির্ভুল করে তুলবে এবং মাত্র আধ ঘণ্টার মধ্যে ফলাফল দেবে। তবে, যতক্ষণ না এই গবেষণামূলক পরীক্ষাগুলি ব্যাপকভাবে উপলব্ধ হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত নাকে শ্লেষ্মা পরীক্ষাটি প্রাধান্য পাবে।