শিক্ষক থেকে যে ভাবে ভয়ংকর ছিনতাইকারী হলেন হাবীবুর

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শিক্ষকতার মহান পেশা ছেড়ে এখন ভয়ংকর ছিনতাইকারী চক্রের নেতা হয়ে উঠেছেন হাবীবুর রহমান শামীম। অপরাধমূলক এ কাজে তার নিজের স্ত্রীকেও জড়িয়ে ফেলেছেন। মঙ্গলবার শ্রীনগরে স্বামী-স্ত্রীসহ ৪ সিএনজি ছিনতাইকারী পুলিশের হাতে আটক হওয়ার পর চাঞ্চল্যকর এ তথ্য পাওয়া গেছে।

তারা কেরানীগঞ্জ ও আশপাশের এলাকা থেকে সিএনজি ভাড়া করে চালককে কোমল পানীয়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে তা ছিনতাই করত। এই কাজের মূল হোতা শ্রীনগর উপজেলার বিবন্দী বাগবাড়ি গ্রামের মারফত আলী শেখের ছেলে বর্ণমুখর কিন্ডারগার্টেনের সাবেক শিক্ষক হাবীবুর রহমান শামীম। কয়েক বছর আগে শিক্ষকতার মহান পেশা ছেড়ে সে ঢাকার কেরানীগঞ্জে চলে যায়।

সেখানে কখনও শামীম কখনও শাকিলসহ বিভিন্ন সময় ছদ্মনাম ধারণ করে জড়িয়ে পরে নানা অপকর্মে। এ সময় তিনি একাধিক বিয়ে করেন। বর্তমানে তার স্ত্রীর সংখ্যা ৫ জন।

এক সময়ের আদর্শবান শিক্ষক নিজেই গড়ে তোলেন সিএনজি ছিনতাইকারী চক্র। চক্রটি ঢাকা-কেরানীগঞ্জ ও পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে যাত্রী সেজে সিএনজি ভাড়া করে নির্জন এলাকায় নিয়ে তা ছিনতাই করত। সিএসজিচালক যাতে সন্দেহ করতে না পারে এ জন্য হাবীব তার চতুর্থ স্ত্রী মায়ানুর সুমীকে ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য করে নেয়।

বুধবার দুপুরে শ্রীনগর থানার ওসি হেদায়াতুল ইসলাম ভূঞা সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য দেন।

তিনি জানান, হাবীব ও তার স্ত্রীসহ এই চক্রের ৪ সদস্যকে মঙ্গলবার দুপুরে শ্রীনগর উপজেলার কেসি রোডের তন্তর ইউনিয়নের সুফিগঞ্জ এলাকায় সিএনজিচালককে অস্ত্রের মুখে ছিনতাইয়ের সময় স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় পুলিশ তাদের আটক করে।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হাবীব জানায়, মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে চালক রানা হাওলাদারের সিএনজিটি কেরানীগঞ্জের খোলামোড়া থেকে ৫ জন মিলে ভাড়া করে। বেলা ১১টার দিকে আলমপুর-বাড়ৈখালী সড়কের মাঝামাঝি এসে তারা সিএনজি থেকে নামে।

এ সময় হাবীবের স্ত্রী সুমী চালক রানা হাওলাদারকে ঘুমের ওষুধ মেশানো মোজো খেতে বললে সে তা প্রত্যাখ্যান করে। পরে তারা পরিকল্পনা পরিবর্তন করে। হাঁসাড়া বাজারে এসে চালক রানার হাত-পা বাঁধার জন্য লাইলনের রশি কিনে। সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থান করার পর তারা সিএনজিতে উঠে কেসি রোডের তন্তর এলাকার নির্জন স্থানে নিয়ে আসে।

এ সময় হাবীব চালক রানার গলায় ছুরি ধরে রাখে। বাকিরা তার হাত-পা বাঁধা শুরু করলে সে সিএনজি থেকে লাফ দিয়ে পরে চিৎকার শুরু করে। রানার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে পাভেল, ফজলুল করিম ও সুমীকে আটক করে। হাবীব ও শান্ত ওরফে জিএম পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে কচুরিপানায় লুকিয়ে থাকে। বিকাল ৪টার দিকে হাবীব কচুরিপানা থেকে উঠে আসার সময় স্থানীয়রা তাকে আটক করে পাশেই অবস্থান নেয়া পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

ওসি হেদায়াতুল ইসলাম আরও বলেন, হাবীব ও তার স্ত্রী সুমির বিরুদ্ধে কেরানীগঞ্জ থানায় দ্রুত বিচার আইনে মামলা রয়েছে। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে শ্রীনগর থানায় মামলা হয়েছে। পলাতক আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর