হাকিমপুরে পানের ফলন ভালো, তবে দামে ধস

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলায় এ বছর পানের ভালো ফলন হয়েছে। তবে করোনা মহামারির মধ্যে দাম পাচ্ছেন না চাষিরা।

হিলি স্থলবন্দর বাজারে সপ্তাহে রোববার ও বৃহস্পতিবার পানের হাট বসে। গত দুই হাট ঘুরে দেখা গেছে, বড় পাতার পান (ঝারা পান) ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা পোয়া দরে বিক্রি হচ্ছে। (৪০ বিড়ায় এক পোয়া; আর ৬৪টিতে এক বিড়া)। যা গত বছর বিক্রি হয় পাঁচ হাজার টাকায়।

এ বছর এক বিড়া (৬৪ টা) পান চাষিরা বিক্রি করছেন ২০ থেকে ২৫ টাকায়। ৬/৭ মাস আগেও যা এই বিক্রি হয়েছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকায়। আর ছোট আকারের এক বিড়া পান বিক্রি হচ্ছে আড়াই থেকে তিন টাকা দরে; যা বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়।

হিলি হাটের পান ব্যবসায়ী মুকুল হোসেন জানান, এবার পানের দাম অনেক কম। বড় আকারের পান ২০ থেকে ২৫ টাকা বিড়া দরে কিনে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় খুচরা বিক্রি করছেন। মাঝারি পান ৮ থেকে ১০ টাকা বিড়ায় কিনে ১১ থেকে ১২ টাকায় বিক্রি করছেন। আর ছোট আকারের পান আড়াই থেকে তিন টাকা দরে কিনে ৪ থেকে ৫ টাকা বিড়া দরে খুচরা বিক্রি করছেন।

তিনি বলেন, ‘‘বরজে পানের ফলন ভালো হয়েছে। পান চাষিরা বাইসাইকেলে করে চা-পানের দোকানে পান বিক্রি করে যাচ্ছেন। তাই আমাদের কাছ থেকে দোকানিরা কম কিনছেন। আর করোনার কারণে ঢাকা, বগুড়াসহ অন্যান্য অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা হিলিতে পান কিনতে আসছেন না।’’

হিলি সিপির পানের খিলির দোকানি দুলি মিয়া বলেন, ৫/৬ বছরের মধ্যে এবার পানের দাম সবচেযে কম। যে পান ৫/৬ মাস আগেও ১০০ থেকে ১২০ বিড়া দরে কিনেছেন, তা এখন বাজারে মাত্র ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু তিনি খিলির পান পূর্বের দামেই বিক্রি করছেন।

তিনি বলেন, ‘‘করোনায় কয়েক মাস দোকান বন্ধ ছিলো। এখন কম দামে পান কিনতে পেরে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারছি।’’

হিলি বাজারে পরিবারের জন্য পান কিনতে আসা রুহুল গাজী জানান, বাজারে পানের দাম এত কম; যা কয়েক বছরেও হয়নি। তিনি মার জন্য এক বিড়া বড় পান কিনেছেন মাত্র ৩০ টাকায়।

কথা হয় হিলি সীমান্তের ঘাসুড়িয়া গ্রামের পানের বরজের মালিক হাবিবুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, পান বিক্রি করে শ্রমিক দিয়ে পান ভাঙার খরচই উঠছে না। তার দুই বিঘা জমিতে পানের বরজ। ফলনও অনেক ভালো হয়েছে, কিন্তু বাজারে দাম নেই।

তিনি আরও জানান, কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে বরজের অবস্থা ভালো না। এভাবে টানা বৃষ্টি হতে থাকলে পানের গাছের ক্ষতি হবে। বৃষ্টিতে পানে দাগ আর পচন ধরছে, তাই তাড়াতাড়ি পান ভেঙে বিক্রি করে দিচ্ছেন।

ঘাসুড়িয়া গ্রামের পান চাষি মোশারফ হোসেন জানান, তার দুটি বরজ রয়েছে। কয়েক বছর পানের ভালো দাম পেয়েছেন। এবার কয়েক বছরের মধ্যে পানের বেশি ফলন হয়েছে। কিন্তু দাম নেই।

হাকিমপুর উপজেলা কৃষি অফিসার শামীমা নাজনীন জানান, হাকিমপুর উপজেলায় ৩৬ হেক্টর জমিতে ৩৫৫টি পানের বরজ রয়েছে। এবার পানের ফলন ভালো হয়েছে।

তিনি জানান, তারা প্রতিনিয়ত বরজগুলো পরিদর্শন করছেন এবং চাষিদের পরামর্শ দিচ্ছেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর