ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর: জনবল সংকট কাটাতে দ্রুত পদক্ষেপ নিন

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভোক্তা অধিকার ও স্বার্থ সংরক্ষণে কাজ করছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। বিস্ময়কর হলেও সত্য- দেশের ১৬ কোটি ভোক্তার অধিকার সংরক্ষণে প্রতিষ্ঠানটির জনবল রয়েছে মাত্র ২০৮ জন এবং এর মধ্যে মাঠপর্যায়ে কাজ করছে ১০৮ জন।

আরও বিস্ময়কর তথ্য হল, রাজধানীর অন্তত ২ কোটি ভোক্তার স্বার্থরক্ষায় নিয়োজিত রয়েছেন মাত্র ৫ জন কর্মকর্তা। উল্লেখ্য, বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও গতকাল বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস-২০২০ পালিত হয়েছে।

এবারের দিবসটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে উৎসর্গ করা হয়েছে, যার প্রতিপাদ্য হচ্ছে- ‘মুজিববর্ষের অঙ্গীকার, সুরক্ষিত ভোক্তা অধিকার।’

জনবল সংকটের কারণে প্রতিনিয়ত বাজার তদারকি ও ‘ফলোআপ’ কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার কথা। বাস্তবিক পক্ষে হচ্ছেও তাই। এর ফলে প্রতিনিয়ত ভোক্তা অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, যা মোটেই কাম্য নয়। বলার অপেক্ষা রাখে না, বাজার তদারকির কাজ যথাযথভাবে সম্পন্ন না হওয়ায় একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী এর সুবিধা নিচ্ছে।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের জন্য সরকার অবশ্য একটি আইন প্রণয়ন করেছে; তবে আইন প্রয়োগের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি না করায় সাধারণ মানুষ এ আইনের সুফল পাচ্ছে না বললেই চলে।

উদ্বেগজনক হল, দেশে অধিকাংশ পণ্য ও সেবার ক্ষেত্রে ভেজাল ও প্রতারণার মহোৎসব চলছে। বস্তুত বাজারে মাছ-মাংস, দুধ-ডিম ও ফলমূল থেকে শুরু করে প্রায় সব পণ্যের পাশাপাশি সেবা খাতে ক্ষতিকর কেমিক্যাল ও ভেজালের মিশ্রণসহ নানা প্রক্রিয়ায় প্রতারণা করা হচ্ছে।

অসাধু ব্যক্তিরা অধিক মুনাফার লোভে মত্ত হয়ে একদিকে চাল, মাছ, সবজি, মসলা, দুধ, দই, মিষ্টি, বেকারি পণ্যসহ নকল ও ভেজাল খাদ্যদ্রব্য বিক্রয় করছে; অন্যদিকে বিভিন্ন সেবা প্রদানে অবাধে প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছে।

অথচ প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে তা তদারকি করে ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে শাস্তি ও জরিমানা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের জনবল সংকট দ্রুত দূর করা উচিত বলে মনে করি আমরা।

অবশ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে ২ হাজার ৩০৫ জন জনবল নিয়োগের আবেদন করা হয়েছে এবং এর মধ্যে জনপ্রশাসন প্রাথমিক পর্যায়ে ২০৬ জনবল অনুমোদন করেছে। প্রয়োজনের তুলনায় এ সংখ্যা একেবারেই অপ্রতুল, তা বলাই বাহুল্য।

আমরা আশা করব, ভোক্তা অধিকার ও স্বার্থরক্ষায় প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ এবং বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণের মধ্য দিয়ে নিয়মিত বাজার তদারকি ও আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগ করে খাদ্যপণ্য ও সেবার ক্ষেত্রে ভেজাল ও প্রতারণার হার শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর