ভৈরবে টাকাসহ জেলার রানা গ্রেফতার, দুদকের তদন্তে বেরিয়ে আসছে থলের বিড়াল

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সাবেক জেলার সোহেল রানা বিশ্বাসের মানিলন্ডারিং মামলার তদন্তে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসছে। তার স্ত্রী হোসনে আরা পপি ও শ্যালক রাকিবুল হাসানসহ পাঁচজন ফেঁসে যাচ্ছেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তে রানাসহ তার আত্মীয়স্বজনের ১২টি হিসাবে অবৈধ আরও তিন কোটি টাকা পাওয়া গেছে। এসব হিসাবের টাকা জব্দ করা হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

দেড় বছর আগে ভৈরব রেলস্টেশনে নগদ ৪৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা, আড়াই কোটি টাকার এফডিআর এবং এক কোটি ৩০ লাখ টাকার ব্যাংক চেকসহ রানাকে গ্রেফতার করা হয়। বিজয় একপ্রেস ট্রেন থেকে তাকে গ্রেফতারের পর ভৈরব রেলওয়ে থানায় পুলিশ মামলা করে। এরপর মামলাটির তদন্তভার ময়মনসিংহের দুদক কার্যালয়ে দেয়া হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাধন চন্দ্র সূত্রধর জানান, রানাসহ তার আত্মীয়স্বজনদের নামে-বেনামে ২৬টি ব্যাংক হিসাব তলব করে ১২টিতে আরও তিন কোটি টাকার সন্ধান পাওয়া গেছে। এসব হিসাবের টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতিক্রমে জব্দ করা হয়েছে।

রানাকে গ্রেফতারের দু’দিন পর স্ত্রী পপি ও শ্যালক রাকিবুল ময়মনসিংহের দুটি ব্যাংক থেকে প্রতারণার মাধ্যমে দুটি এফডিআরের এক কোটি টাকা উত্তোলন করেন। যদিও এফডিআর দুটির মূল কাগজ পুলিশের হাতেই ছিল। তদন্ত কর্মকর্তা সাধন সূত্রধর জানান, পপি ও রাকিবুলের নামে থাকা এফডিআর দুটির টাকার উৎস এবং এমন অবস্থায় কীভাবে তারা টাকা উত্তোলন করল সে ব্যাপারে তদন্ত করা হচ্ছে। টাকার উৎস সম্পর্কে তারা কোনো জবাব দিতে পারেননি। আর কোনো হিসাব থেকে যাতে তারা টাকা উত্তোলন করতে না পারেন সে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

২০১৮ সালের ২৬ অক্টোবর ভৈরবে নগদ টাকা, এফডিআর ও ১২ বোতল ফেনসিডিলসহ রানা গ্রেফতার হয়। ওইদিনই ভৈরব রেলওয়ে পুলিশ জেলার রানার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং ও মাদক আইনে মামলা করে। মাদক মামলায় তিন মাসের মধ্যে চার্জশিট দেয়া হলেও মানিলন্ডারিং মামলার তদন্ত কাজ এখনও শেষ হয়নি। ঘটনার দু’দিন পর রানাকে সাময়িক বরখাস্ত করে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কর্তৃপক্ষ। গ্রেফতারের পর থেকে তিনি কিশোরগঞ্জ কারাগারে রয়েছেন।

শনিবার সকালে উপ-পরিচালক ফারুক আহমেদ মোবাইল ফোনে যুগান্তরকে জানান, মামলাটি নিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা হিমশিম খাচ্ছেন। ব্যাংকসহ অনেক অফিসে চিঠি চালাচালি করতে হচ্ছে। রানার স্ত্রী ও শ্যালকসহ অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হচ্ছে। প্রমাণের জন্য অনেক কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হচ্ছে। এ জন্য বেশি সময় লাগছে। আগামী দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যে মামলার চার্জশিট দেয়া হতে পারে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তিনি আরও বলেন, মামলায় রানার এসব আত্মীয়স্বজনকেও আসামি করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর