ছয় কারণে দৈনিক অ্যাভোকাডো খাওয়া জরুরি

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ফ্যাকাশে সবুজ রঙের দেখতে একটি ফল। যার জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ফলটি হচ্ছে  অ্যাভোকাডো। এই ফলটি সালাদের সঙ্গে খেয়ে থাকেন অনেকেই। ফলটি মসৃণ ক্রিমযুক্ত টেক্সচারের হওয়ায় আজকাল অনেকেই মেয়োনিজের জায়গায় ম্যাশড অ্যাভোকাডো ব্যবহার করছেন। তাছাড়া অ্যাভোকাডোর রয়েছে বিভিন্ন সুস্বাদু রেসিপিও।

স্বাস্থ্যের পক্ষে অ্যাভোকাডো খুবই উপকারী। দেহের বিভিন্ন মারাত্মক রোগ থেকে রক্ষা করে এই ফল। তাইতো প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় এই ফলটি রাখা খুব জরুরি। চলুন এবার জেনে নেয়া যাক এর পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্যগুণ সম্পর্কে-

পুষ্টিগুণ

অ্যাভোকাডো

অ্যাভোকাডো

অ্যাভোক্যাডোর অভ্যন্তরীণ হলুদ-সবুজ মাংসল অংশ খাওয়া হয়, তবে খোসা এবং বিচি ফেলে দেয়া হয়। এতে ২০ রকমের ভিটামিন এবং খনিজ সহ বিভিন্ন ধরণের পুষ্টি উপাদান রয়েছে। মাত্র ৩.৫ আউন্স বা ১০০ গ্রাম অ্যাভোক্যাডোতে কতোটা পুষ্টি উপাদান রয়েছে চলুন সেটি জেনে আসি –

> ভিটামিন কে: ২৬%

> ফোলেট: ২০%

> ভিটামিন সি: ১৭%

> পটাশিয়াম: ১৪%

> ভিটামিন বি-৫: ১৪%

> ভিটামিন বি-৬: ১৩%

> ভিটামিন ই: ১০%

এছাড়াও এতে স্বল্প পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, তামা, আয়রন, দস্তা, ফসফরাস এবং ভিটামিন এ, বি-১ (থায়ামিন), বি-২ (রিবোফ্লাভিন) এবং বি-৩ (নিয়াসিন) রয়েছে।

১৬০ ক্যালরিশক্তি, ২ গ্রাম প্রোটিন এবং ১৫ গ্রাম পরিমাণ স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এর সুন্দর সম্মীলন ঘটেছে এই ফলে। যদিও এটিতে ৯ গ্রাম কার্বস রয়েছে, যার মধ্যে ৭ টি ফাইবারযুক্ত এবং বাকি ২টি “নেট” কার্বস, যা এটিকে লো কার্বযুক্ত ফ্রুট হিসাবে পরিচিতি দেয়। অ্যাভোক্যাডোতে কোনো কোলেস্টেরল বা সোডিয়াম থাকে না এবং স্যাচুরেটেড ফ্যাট কম থাকে।

হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়

অ্যাভোকাডো

অ্যাভোকাডো

রক্তচাপ কমাতে, ট্রাইগ্লিসারাইড কমাতে এবং ধমনী ফলকের ধীর বিকাশ ঘটাতে অ্যাভোক্যাডো খুবি উপকারী। তাছাড়া অস্বাভাবিক হার্ট স্পন্দন, হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের সম্ভাবনা হ্রাস করতে অবশ্যই অ্যাভোকাডো খান। প্রতিদিনের একটি অ্যাভোক্যাডো হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর সম্ভাবনা হ্রাস করতে পারে।

অ্যাভোকাডোস ওলিক অ্যাসিডে পূর্ণ, একটি স্বাস্থ্যকর ফ্যাট সমৃদ্ধ ফল। যা বেশিরভাগ লোক পর্যাপ্ত পরিমাণে পায় না। অ্যাভোকাডো তেল দিয়ে রান্না করা খাবার খুব স্বাস্থ্যকর। তাই দৈনিক এই ফল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

ওজন কমাতে সহায়তা করে

অ্যাভোক্যাডো হলো ওজন কমানোর উপযোগী খাবার। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, খাবারের সঙ্গে অ্যাভোক্যাডো খেলে ২৩% বেশি তৃপ্তি পাওয়া যায় এবং যারা এই ফলটি খান না তাদের তুলনায় পরবর্তী ৫ ঘন্টায় তাদের খাওয়ার ইচ্ছা ২৮% কম হয়।

সুতরাং আপনার ডায়েটে অ্যাভোক্যাডো অন্তর্ভুক্ত করলে এটি স্বাভাবিকভাবেই আপনাকে কম ক্যালোরি খেতে সহায়তা করবে এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাসে অভ্যস্ত করবে। অ্যাভোক্যাডো উচ্চ ফাইবার এবং নিম্ন কার্বস বিশিষ্ট হয়ে থাকে, যা ওজন হ্রাসের প্রক্রিয়াকে সহজ করে তোলে।

দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে

অ্যাভোকাডোতে দুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ক্যারোটিনয়েড থাকে- লুটেন এবং জেক্সানথিন। ক্যারোটিনয়েডগুলো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আপনার শরীর থেকে ফ্রি র্যাডিকালগুলো সরিয়ে দেয়। লুটেইন এবং জেক্সানথিন উভয়ই চোখের স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়। এই দুটি ক্যারোটিনয়েড আলাদা আলাদাভাবে কাজ করে, তবে একসঙ্গে আরো ভালো কাজ করে। এর ফলে চোখে ছানিও পড়ে না।

ক্যান্সার প্রতিরোধে

অ্যাভোকাডো

অ্যাভোকাডো

অ্যাভোকাডো ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে। টেস্ট-টিউব সমীক্ষায় পরামর্শ দেয়া হয়েছে যে, এটি মানব লিম্ফোসাইটে কেমোথেরাপির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হ্রাস করতে সহায়তা করতে পারে। অ্যাভোক্যাডো প্রোস্টেট ক্যান্সার কোষগুলির বৃদ্ধিতে বাধা দেয়। তবে মনে রাখবেন যে, এই সমীক্ষাগুলি শুধুমাত্র কিছু বিচ্ছিন্ন কোষগুলোতে করা হয়েছিল।

বাতের ব্যথা থেকে মুক্তি

আর্থ্রাইটিস পশ্চিমা দেশগুললোতে একটি সাধারণ ব্যাধি। এটি একটি দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা যা মানুষের সারা জীবন ধরে থাকে। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে যে, অ্যাভোক্যাডো এবং সয়াবিন তেল এক্সট্র্যাক্ট অস্টিওআর্থারাইটিস হ্রাস করতে পারে।

চুল ও ত্বকের যত্নে

পেন্টোথেনিক অ্যাসিড (ভিটামিন বি ৫) প্রায় প্রতিটি ত্বক এবং চুলের যত্নের তৈরি প্রসাধনীতে থাকে। অ্যাভোকাডোতে প্যান্টোথেনিক অ্যাসিডের ৪৫% আরডিএ থাকে। যা ত্বক ময়েশ্চারাইজ করতে সহায়তা করে এবং ক্ষত নিরাময়ে সহায়তা করে। এটি ত্বকে ব্রণ ও ব্রণের দাগও নিরাময়ে সহায়তা করে। ত্বকের বয়স ধরে রাখতে অ্যাভোকাডো দিয়ে তৈরি ফেসপ্যাক খুবই কার্যকরী। তাছাড়া অ্যাভোকাডো তেল ব্যবহারে চুল ঘন, কালো ও মজবুত হয়।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর