বাড়ি নিয়ে আর চিন্তা নয়, সরকারি চাকরি হলেই ফ্ল্যাট

বাড়ি নিয়ে আর কোনো চিন্তা নেই। সরকারি চাকরিতে যোগদানের পর স্থায়ী হলেই ৩০ বছর মেয়াদি সহজ কিস্তি ও স্বল্প সুদে ফ্ল্যাট-বাড়ি দেবে সরকার। মেধাবী তরুণদের আকৃষ্ট ও তাদের নৈতিক মনোবল বাড়াতে এ উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এ লক্ষ্যে প্রথম দফায় ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনাতে ১ হাজার ২০০ ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সব বিভাগীয় ও জেলা শহরেও এ ধরনের ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে। পাশাপাশি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) বিভিন্ন সময়ে ফ্ল্যাট নির্মাণ করলে তার একটি নির্দিষ্ট অংশ (কোটা) নবীন সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য সংরক্ষণ করা হবে। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এম বজলুল করিম চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে সম্প্রতি ফ্ল্যাট বরাদ্দ নীতিমালা প্রণয়ন করতে ৬ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা হলেন- প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয় ও জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের একজন করে প্রতিনিধি। কমিটির সদস্য সচিবের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মো. ফাহিমুল ইসলামকে। ফ্ল্যাট বরাদ্দ নীতিমালা সংক্রান্ত যে কোনো ধরনের মতামত বা পরামর্শ আগামী ৩ ডিসেম্বরের মধ্যে দিতে বলা হয়েছে। এম বজলুল করিম চৌধুরীকে বলেন, সরকারি চাকরিতে মেধাবী ও চৌকস তরুণদের আকৃষ্ট এবং তাদের আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর অভিপ্রায় অনুযায়ী একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এটি নতুন যোগদান করা যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীর চাকরি স্থায়ী হয়েছে তাদের জন্য। তবে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা ও মতামতের ভিত্তিতে চূড়ান্ত করা হবে ফ্ল্যাট বরাদ্দ নীতিমালা। গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ৩ নভেম্বর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে এ সংক্রান্ত একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, এক মাসের মধ্যে প্রথম পর্যায়ের ১২০০ ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্পের বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠাতে হবে।জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ পূর্ণাঙ্গ প্রকল্প, ফ্ল্যাট বরাদ্দের নীতিমালা ও তহবিল ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত নীতিমালা চূড়ান্ত করে দেবে মন্ত্রণালয়কে। নীতিমালায় চাকরিতে নতুন প্রবেশকারীদের কাছ থেকে ৩০ বছর মেয়াদি স্বল্প সুদে কিস্তিতে ফ্ল্যাটের মূল্য আদায়ের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। পাশাপাশি রাজউক বিভিন্ন সময়ে যে সব ফ্ল্যাট নির্মাণ করবে তার কিছু অংশ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে সহজ শর্তে ও কিস্তিতে বিক্রির বন্দোবস্ত রাখতে হবে। এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতেই মূলত ফ্ল্যাট বরাদ্দ নীতিমালা প্রণয়ন করতে কমিটি গঠন করা হল। জানতে চাইলে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও অতিরিক্ত সচিব খন্দকার আখতারুজ্জামান বলেন, বিসিএস ক্যাডারে নতুন যারা নিয়োগ পেয়েছেন তাদের জন্য আমরা এ প্রকল্প হাতে নিয়েছি। ক্যাডার সার্ভিসে যোগ দেয়ার প্রথম পাঁচ বছরের মধ্যে তারা স্থায়ী হলে একটি ফ্ল্যাট বরাদ্দ পাবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পটি নীতিগতভাবে অনুমোদন দিয়েছেন। ইতিমধ্যে এ প্রকল্পে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সরকারের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন বাংলাদেশ এডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, সরকারি চাকরিতে যোগ দেয়া নবীন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গাড়ি-বাড়ি করার বিষয়ে বেশি আগ্রহ থাকে। এ কারণে অনেক সময় কোনো কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী বিপথেও চলে যায়। আমি মনে করি, তাদের আবাসনের বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারলে তাদের মধ্যে অনৈতিক চিন্তাভাবনা আসবে না। এতে করে অনিয়ম ও দুর্নীতি কমে আসবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর