চালের বাজার অস্বাভাবিক দাম

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চালের বাজার স্বাভাবিক হতে পারছে না। মন্ত্রণালয়ের তদারকিতেও না। গত ২৯ জানুয়ারি খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল- চালের দাম সহনীয় রাখতে বাজারের ওপর নজরদারি প্রতিষ্ঠায় সরকার বিশেষ টিম গঠন করেছে। পাশাপাশি খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। কারসাজির মাধ্যমে যাতে কেউ চালের দাম বাড়াতে না পারে, সেজন্য এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়- খাদ্যমন্ত্রী মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ধানের সঙ্গে চালের দামের সামঞ্জস্য রক্ষার নির্দেশ দিয়েছেন। মিল মালিক ও ব্যবসায়ীরা কোনোভাবেই যাতে বাড়তি সুবিধা না নিতে পারে, সেদিকে নজর দিতে হবে। সহনীয় মূল্যে ভোক্তার চাল কেনার সুযোগ এবং কৃষকদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে হবে। বিজ্ঞপ্তিতে এমনও বলা হয়েছিল, চালের বাজার অস্থিতিশীল করতে কেউ যদি কারসাজির চেষ্টা করে, তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পরিতাপের বিষয়, এই কঠোর বিজ্ঞপ্তির পরও চালের দাম কমেনি, বরং আরেক দফায় বেড়েছে। বস্তুত ধানের দাম বাড়তি এবং বৈশাখে নতুন ধান না আসা পর্যন্ত চালের দাম কমবে না- মিলারদের এমন অজুহাতে গত বছরের নভেম্বর থেকেই চালের দামে ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত আছে। গত ১৫ দিনের ব্যবধানে মিলারদের কারসাজিতে মিলগেটে চালের দাম বস্তাপ্রতি বেড়েছে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা। এতে পাইকারি ও খুচরা বাজারে অস্থির হয়ে উঠেছে চালের দাম। চালের দাম নিয়ন্ত্রণে গঠিত সার্বক্ষণিক মনিটরিং সেলের কোনো কার্যকারিতা লক্ষ করা যাচ্ছে না।

অথচ খাদ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, খাদ্যশস্যের মজুদ সন্তোষজনক। এ মুহূর্তে খাদ্যশস্যের কোনো ঘাটতি নেই, খাদ্য ঘাটতির কোনো সম্ভাবনাও নেই। তাহলে কেন এই মূল্যবৃদ্ধি? জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের উপপরিচালক বলেছেন, চালের দাম কমাতে সব পর্যায়ে তদারকি হচ্ছে। তাই যদি হয়, তাহলে বাড়ছে কেন দাম? আমাদের কথা হল, পর্যাপ্ত মজুদের পরও যারা দাম বাড়াচ্ছে, তাদের শাস্তির আওতায় আনা হোক। দ্বিতীয় কথা, চালের মূল্যবৃদ্ধির জন্য শুধু ব্যবসায়ী বা মিলাররাই দায়ী নয়, এদের সঙ্গে সরকারের প্রভাবশালী, এমনকি নীতিনির্ধারকদেরও যোগসাজশ রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তারা সব সময়ই থেকে যাচ্ছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। এই সিন্ডিকেটও ভেঙে ফেলতে হবে। অবাক কাণ্ড, ধানের দাম বাড়ার অজুহাতে মিলাররা চালের দাম বাড়ালেও সপ্তাহের ব্যবধানে ধানের দাম আরও কমেছে, অথচ চালের দাম কমেনি। খাদ্য মন্ত্রণালয় তথা সরকারকে এ বিষয়ে আরও কঠোর অবস্থান নিতে হবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর