কিশোরগঞ্জে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিক থেকেও এটিও অনন্য দিল্লির আখড়া

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দিল্লির আখড়া। জায়গার নাম শুনেই হয়তো ভাবছেন এটি ভারতের কোনো স্থান কিংবা স্থাপনা। মূলত এটি কিশোরগঞ্জের একটি মোঘল স্থাপনা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিক থেকেও এটিও অনন্য। নিরুত্তাপ দিল্লির আখড়ায় কোলাহল তো বহু দূরের কথা। তবে কিছু কোলাহল আছে- পানকৌড়ির কিচিরমিচির।

মিঠামইন উপজেলার কাটখালা ইউনিয়নের আখড়াটির অবস্থান। জানা যায়, দিল্লির সম্রাট জাহাঙ্গীরের শাসনামলে আধ্যাত্মিক সাধু নারায়ন গোস্বামী এ আখড়াটি স্থাপন করেন। আখড়ার ভেতরে ধর্মশালা, নাটমন্দির, অতিথিশালা, পাকশালা, বৈষ্ণবদেব থাকার ঘর, সাধক নারায়ন গোস্বামী এবং তার অন্যতম শিষ্য গঙ্গারাম গোস্বামীর সমাধি রয়েছে।

Image result for কিশোরগঞ্জে দিল্লির আখড়া  chbi

দিল্লির আখড়াকে কেন্দ্র করে রয়েছে বিশাল খোলা জায়গা। আখড়ার চারপাশের বিশাল জায়গাজুড়ে রয়েছে প্রায় তিন হাজার হিজল গাছ। প্রাচীন এই আখড়া আর হিজলগাছগুলো হাওরের এক অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি- যা সকলকেই হাতছানি দিয়ে ডাকে। এসব হিজল গাছ নিয়ে রয়েছে চমকপ্রদ কাহিনি। এগুলো নাকি এক একটি দানব ছিল! নারায়ণ গোস্বামী দানবগুলোকে হিজল গাছে রূপান্তর করেন।দিল্লির আখড়া জায়গাটি নিয়ে অনেক মিথ প্রচলিত রয়েছে। এরমধ্যে অন্যতম- প্রায় চারশ’ বছর আগে এ জায়গাটির পাশ দিয়ে দিল্লীর সম্রাট প্রেরিত একটা নৌকা মালামালসহ ডুবে যায়। এমনকি সাপের কামড়ে মারা যায় একজন। এ কথা শুনে পার্শ্ববর্তী বিথঙ্গল আখড়ার গুরু রামকৃষ্ণ গোস্বামী তার শিষ্য নারায়ণ গোস্বামীকে এখানে পাঠান। টানা সাতদিন তিনি এখানে রহস্যজনক নানা শক্তির সম্মুখীন হন। সম্রাটের ডুবে যাওয়া নৌকাটিও উদ্ধার করে দেন তিনি।

 

দিল্লির আখড়ার অবস্থান কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলার কাটখালের লক্ষ্মীর বাঁওড় এলাকায়। কিশোরগঞ্জ থেকে এখানে যেতে পারেন; আবার যেতে পারেন হবিগঞ্জ থেকে। দিল্লির আখড়ায় যাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময় বর্ষাকাল। হাওরের জলে ভেসে ভেসে আখড়ায় চলে যাওয়ার মজাই অন্যরকম। হবিগঞ্জ বা কিশোরগঞ্জ যেখান থেকেই যান সময় প্রায় একই লাগবে।

 

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর