লক্ষ্মীপুরের সম্পত্তি লিখে নিয়ে অবহেলা, ছেলের বিরুদ্ধে শতবর্ষী পিতার মামলা

হাওর বার্তা ডেস্কঃ লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে চিকিৎসার কথা বলে পিতার সকল সম্পত্তি লিখে নিয়েছেন ছেলে। সম্পত্তি নেওয়ার পর গত তিন বছর থেকে দায়িত্বে অবহেলা করায় শতবর্ষী পিতা আবদুল মালেক (১০৫) প্রতিকার চেয়ে আজ সোমবার থানায় অভিযোগ করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ভাদুর ইউনিয়নের সমেষপুর আবদুল সাত্তার বেপারী প্রকাশ বেজ্জার বাড়িতে। অভিযোগ পেয়ে এদিন সকালে রামগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন নিজে ঘটনাস্থল গিয়ে ছেলের ঘরে থাকার সুব্যবস্থা করেন।

সূত্রে জানা গেছে, শতবর্ষী আবদুল মালেকের তিন ছেলে, তিন মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে সুখের সংসারই ছিল। তিন বছর পূর্বে মেঝ ছেলে সৌদি প্রবাসী শামছুল আলম(৪৫) তার স্ত্রী কহিনুর বেগম ও শ্যালক ইকবালকে দিয়ে বৃদ্ধ বাবাকে প্ররোচনা দিয়ে মাঠের ১৩ শতাংশ জমি তার নামে দেওয়ার জন্য রাজি করান। পরে তারা বৃদ্ধকে ২০১৭ সালে রামগঞ্জ সাব রেজিস্টারি অফিসে নিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে মোট ৫৩ শতাংশ সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করে নিলে বাকী দুই ছেলের মনে কষ্ট হয়। সম্পত্তি লিখে নেওয়ার পর ছেলে প্রবাসে চলে গেলে তার স্ত্রী বাবা-মার প্রতি দায়িত্বে অবহেলা শুরু করেন। বাবার চিকিৎসা তো দুরের কথা ঘরে থাকতে দেয়নি পুত্রবধূ, খেতে দিতো দরজায় বসিয়ে। জীবনের শেষ লগ্নে বৃদ্ধা অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে তিন বছর ধরে রাত কাটাতে হচ্ছে কখনও মেয়ের বাড়ি, কখনও আত্মীয়ের বাড়ি। দু’মুঠো ভাতের জন্য তাকে ঘুরতে হচ্ছে পথে পথে। বাবা-মায়ের ওপর ছেলে ও ছেলের বউয়ের বর্বর নির্যাতনের এমন নির্দয় ঘটনা ঘটেছে। বাধ্য হয়ে নিজের ও স্ত্রীর চিকিৎসা, সম্পত্তি রক্ষা এবং ভরণপোষণের জন্য রামগঞ্জ থানায় অভিযোগ করে।

শতবর্ষী আবদুল মালেকের স্ত্রী বৃদ্ধা শামছুন নাহার জানান, পুত্রবধূ কহিনুর বেগম আমাদের স্বামী-স্ত্রী দুইজনের সাথে খারাপ আচরণ করে, ঘরে থাকতে দিচ্ছে না, ঘর ময়লা হয়ে যাবে এ কথা বলে, ভিক্ষুকের মত ঘরের দরজায় বসিয়ে খেতে দেয়।

আবদুল মালেক জানান, পুত্রবধূ আমাদেরকে বিল্ডিং থাকতে দেয়না, ঠিকমত খাওয়াও দেয়না। এভাবে চললে পরে আমাদের কি হবে, তাই থানায় গিয়ে অভিযোগ দিয়েছি। এ জন্য ছেলের শালা ইকবাল আমাদেরকে সন্ত্রাসী দিয়ে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দেয়।

রামগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন জানান, অভিযোগ পেয়ে কিছু খাবার নিয়ে ঘটনাস্থলে নিজে গিয়েছি। ছেলে প্রবাস থাকায় তার স্ত্রী কথা দিয়েছে শ্বশুর-শাশুড়ির প্রতি আর দায়িত্বে অবহেলা করবে না। তাদেরকে ছেলের ঘরে রেখে আসছি। আমরা বিষটি নজরে রাখবো।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর