হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিমার ব্যাপ্তি বৃদ্ধি ও জনমনে ইতিবাচক ধারণা তৈরিতে প্রতি বছর ১ মার্চ বিমা দিবস উদযাপিত হবে। যথাযোগ্য মর্যাদায় এ দিবস উদযাপনে চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেড় কোটি টাকার বরাদ্দও দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি অফিস আদেশ জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। আদেশ অনুযায়ী বিমা দিবসে দেড় কোটি টাকার মধ্যে উদযাপনে প্রস্তুতিমূলক সভা, আপ্যায়ন স্টেশনারি ও বিবিধ খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৭ লাখ টাকা। এসব কাজ করবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। এছাড়া ভেন্যু ব্যবস্থাপনা, ভিডিও ডকুমেন্টারি তৈরি ও প্রদর্শন, ক্রোড়পত্র প্রকাশ আপ্যায়ন ব্যয়, ক্রেস্ট তৈরি, র্যালির জন্য গেঞ্জি এবং ক্যাপ ক্রয়, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট (সিটি ব্র্যান্ডিংসহ), স্যুভেনিয়র, বিজ্ঞাপন, মুদ্রণ এবং বিবিধ খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩০ লাখ টাকা। এসব কাজ করবে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স একাডেমি এ দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন সভা ও সেমিনার আয়োজন করবে। এ জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১০ লাখ টাকা। দেশের সব উপজেলায় বিমা দিবসে র্যালি ও উদ্বুদ্ধকরণ সভা, রচনা প্রতিযোগিতা আয়োজন ও শ্রেষ্ঠ ছয়জনকে পুরস্কার প্রদান করা হবে। এ জন্য ৬৪ জেলার সদর উপজেলায় বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৪০ হাজার টাকা। এক্ষেত্রে ৬৪ জেলার জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এছাড়া সদর ব্যতীত ৪৩২টি উপজেলায় ২০ হাজার টাকা করে ৮৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এদিকে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জনমনে বিমা সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা তৈরির লক্ষ্যে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় বিমা দিবস উদযাপন জন্য সংশ্লিষ্টদের নিয়ে প্রস্তুতিমূলক সভা করেছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব আসাদুল ইসলাম। গত ২৮ জানুয়ারি অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বেশকিছু সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় বলে সভার কার্যপত্র সূত্রে জানা গেছে।
সভার শুরুতেই জানানো হয়, বিমা দেশের একটি সম্ভাবনাময় গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক খাত। বিমার ব্যাপ্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যে ও জনমনে বিমা সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা তৈরির উদ্দেশ্যে সরকার কর্তৃক বিভিন্ন পদক্ষেপ যেমন- বিমা মেলা, দেশব্যাপী বিমা সম্পর্কিত সভা, সেমিনার, শোভাযাত্রা, বিমা দাবি পরিশোধের জন্য অনুষ্ঠান ইত্যাদি নিয়মিত আয়োজন করা হয়ে থাকে। এ কার্যক্রমকে আরো বেগবান, বিশেষত করে তৃণমূল পর্যায়ে বিমার বিস্তৃতি, জনসম্পৃক্ততা তথা জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘জাতীয় বিমা নীতি, ২০১৪’-এ জাতীয় বিমা দিবস চালুর কথা বলা হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬০ সালের ১ মার্চ তৎকালীন আলফা ইস্যুরেন্স কোম্পানিতে যোগদান করেছিলেন। বিমা কোম্পানিতে জাতির পিতার যোগদানের এই তারিখকে স্মরণীয় করে রাখার উদ্দেশ্যে ১ মার্চকে ‘জাতীয় বিমা দিবস’ ঘোষণা করা হয়েছে এবং তা প্রতিবছর ‘খ’ ক্যাটাগরিতে পালনের জন্য গত ৮ জানুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ অনুমোদন প্রদান করে। এ প্রেক্ষাপটে প্রথমবারের মতো এ বছরে দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষ্যে কার্যকর প্রস্তুতি গ্রহণ করতে এ সভার আয়োজন করা হয়। পরে আলোচ্যসূচি অনুযায়ী আলোচনা শেষে বেশকিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সিদ্ধান্তগুলো হচ্ছে- ‘বিমা দিবসে শপথ করি নিরাপদ জীবন গড়ি’ এ বছরের বিমা দিবসের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। এ বিষয়টি জানাতে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) একটি প্রস্তুতিমূলক ব্রিফিং চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে আয়োজন করবে এবং বিমা দিবসের কয়েক দিন আগে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ আরেকটি প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করবে। আরো সিদ্ধান্ত হয়, বিমা বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে টকশোর আয়োজনসহ অন্যান্য ডিজিটাল মিডিয়া ক্যাম্পেইনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এছাড়া টেলিভিশনে স্ক্রল প্রদানের ব্যবস্থাও নেয়া যেতে পারে। বিমা দিবস উপলক্ষে মানসম্মত লেখা ও আলোকচিত্র সংবলিত একটি উন্নতমানের স্যুভেনির প্রকাশ করতে হবে। দিবসটি উদযাপনের জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিবের স্বাক্ষরে একটি ডিও পত্র প্রেরণ করতে হবে এবং জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে সহযোগিতা প্রদানের নির্দেশনা প্রদানের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে পত্র পাঠাতে হবে। বিভাগ, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে দিবসটি উদযাপনের জন্য আইডিআরএ কর্তৃক জীবন বিমা করপোরেশন, সাধারণ বিমা করপোরেশন, বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ইনোভেশন ফোরামকে পত্র পাঠাতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যানার, ফেস্টুন, প্রচারপত্র তৈরি করে তা ঢাকাসহ সব বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা হেডকোয়ার্টারে পৌঁছাতে হবে। সড়ক দ্বীপ ও পাবলিক প্লেসে বিলবোর্ড স্থাপন করা হবে। বিমা দিবসের মূল অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচারসহ ব্যাপক প্রচারণার লক্ষ্যে মিডিয়া পার্টনার নির্বাচনসহ দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে ব্যাপক প্রচারণার কার্যক্রম গ্রহণের জন্য তথ্য মন্ত্রণালয় এবং প্রিন্ট মিডিয়া ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।