নাঈমের সাফল্যের রহস্য ‘দায়িত্ববোধ

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বেশ কিছুদিন ধরেই বাংলাদেশের স্পিনাররা সফল্যের দেখা পাচ্ছিলেন না। বিশেষ করে সাকিব আল হাসান  নিষিদ্ধ হওয়ার পর থেকে ঘরে-বাইরে টাইগার স্পিনারদের ব্যর্থতা ছিল স্পষ্ট। অথচ বাংলাদেশের দলের অন্যতম শক্তিই স্পিন বিভাগ। নাঈম হাসানের সাফল্যে একটু হলেও দুশ্চিন্তা কাটলো। গতকাল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের প্রথম দিনটি রাঙিয়েছেন স্পিনার নাঈম। দিন শেষে ৬৮ রানে তার শিকার ৪ উইকেট। ১০৭ রান করা জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক ক্রেগ আরভিনকে দেখিয়েছেন সাজঘরের পথ। সফরকারিদের পক্ষে ৬৪ রান করা ওপেনার মাসভরেও তার শিকার।

শেষ পর্যন্ত ৯০ ওভারে ২২৮ রান তোলা আরভিনের দল হারিয়েছে ৬ উইকেট। দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে স্বল্পভাষী নাঈম নিজের দায়িত্ববোধকে সাফল্যের মূল কারণ হিসেবে জানালেন। তিনি বলেন, ‘যখনই বলটা হাতে নেই, আমাদের দায়িত্ব ভালো বোলিং করা। সাকিব ভাই থাকলে আরো ভালো হতো। প্রেসার বলতে কিছু নেই। এখন আমরা দু’জন চেষ্টা করছি। সাকিব ভাই থাকলে সুবিধা হয় ব্যাটিং-বোলিং দুটো একসঙ্গে পাওয়া যায়।’
শেষ বিকেলে আরভিনকে না ফেরালে আজও বাংলাদেশের জন্য হুমকি হয়ে থাকতেন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক। আরভিনকে ফেরানোর কৌশল ফাঁস করলেন নাঈম। তিনি বলেন, ‘যত তাড়াতাড়ি অলআউট করতে পারি ততই ভালো। ওর (আরভিন) উইকেট পাওয়ার পর টেলএন্ডার আছে। যত তাড়াতাড়ি ওদের আউট করা যায় সে চেষ্টা থাকবে। আমাদেরকে ভিডিও বিশ্লেষণে ওর (আরভিন) দুর্বল দিকগুলো দেখানো হয়েছিল, সেভাবেই বোলিং করেছি।’ গতকাল নাঈম টানা ৩২ ওভার স্পেলে বল করেছেন। এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘অভ্যাসটা আমার জাতীয় লীগ থেকেই। ওখানে আমি লম্বা স্পেল বোলিং করেছি। লম্বা স্পেলে ধৈর্য ধরে এক জায়গায় বোলিং করলে সাফল্য পাওয়া যায়।’
আজ জিম্বাবুয়ে ৪ উইকেট হাতে নিয়ে দ্বিতীয় দিন শুরু করবে। এখনো বড় স্কোর করার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না। তাই প্রথম দিন শেষে বাংলাদেশ দলের অবস্থান কোথায়? আজ পরিকল্পনাটাই কি থাকবে? এ নিয়ে নাঈম বলেন, ‘এখন যে অবস্থায় আছি, উইকেটটাও ভালো আছে। উইকেটে থাকলে ব্যাটিং করা সহজ।’
উইকেট দেখে বিস্মিত আরভিন
বাংলাদেশে খেলার অভিজ্ঞতা আছে আরভিনের। সেই হিসেবে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের উইকেটাও তার জানা। তবে এইবার সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে একটু অবাকই হয়েছেন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক। দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি আজকের উইকেট খুব ভালো ছিল। আমার মতে বাংলাদেশ খুব ভালো  বোলিং করেছে। টানা টাইটলাইনে বল করে গেছে। যদিও উইকেটে তেমন কিছু হচ্ছিল না। আমার প্ল্যান ছিল ধৈর্য ধরে সুযোগ আসলেই রান করা। আজকের উইকেট যেমন ভালো ছিল, এমনটা আশা করিনি। উইকেট দেখে বিস্মিতই হয়েছি। ব্যাট করার জন্য খুবই ভালো ছিল। সেকারণেই আমি বাংলাদেশকে এগিয়ে রাখছি। কারণ আমরা ২-৩ টা উইকেট বেশি হারিয়ে ফেলেছি।’
জিম্বাবুয়ে অধিনায়কের কণ্ঠে ঝড়েছে হতাশাও। তিনি বলেন, ‘আমরা আজ (গতকাল) আরো কিছু রান করলে খুশি হতাম। আমরা ইতোমধ্যেই ৬ উইকেট হারিয়েছি। আগামীকাল আমাদের স্কোরটা আরো বড় করতে হবে। বাংলাদেশের বোলাররা সারাদিনই আমাদের চাপে রেখে শেষদিকে ২-৩ টা উইকেট নিয়ে নিয়েছে। দিনের একদম শেষ সময়ে আমার উইকেটটা পিছিয়ে দিয়েছে আমাদের। আগামীকাল আমি আর রেগিস চাকাভা ব্যাটিংয়ে নামতে পারলে আদর্শ হতো। তিরিপানোও ব্যাট হাতে ভালো। আগামীকাল চাকাভার সাথে তিরিপানো ভালো কিছু করবে বলে মনে করি।’
বিদেশের মাটিতে পেয়েছে টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় শতক, এ সাফল্য নিয়ে আরভিন বলেন, নিশ্চিতভাবেই দেশের বাইরে সেঞ্চুরি সবসময়ই স্পেশাল। এর আগে আমি বাংলাদেশে সংগ্রাম করেছি। তাই আজকে এই ইনিংস খেলে আমি খুশি।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর