যে গ্রামে মানুষ নেই

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলা বাজার থেকে ৫-৬ কিলোমিটার দূরের একটি গ্রাম। নাম মঙ্গলপুর। গ্রামটির অবস্থা যেন মঙ্গল গ্রহের মতোই। গ্রামটিতে ফসলি জমি থাকলেও নেই কোনো বসতি। ফলে নেই মানুষের বিচরণ।

অথচ ৬০ একর ভূমির এ গ্রামে এক সময় সবই ছিল। ছিল দালান, পুকুর ও রাস্তা-ঘাট। এমনকি ছিল মসজিদ ও মন্দির।

জনশ্রুতি আছে, কলেরা, বসন্ত ও ডাকাতির ভয়ে উজাড় হয়ে গেছে গ্রামটি। বেঁচে থাকা বাসিন্দারা অমঙ্গলের আশঙ্কায় গ্রাম ছেড়ে চলে গেছেন।

মঙ্গলপুর গ্রামে ২০৬ টি খতিয়ানভুক্ত জমির মধ্যে সরকারি খাস ৫৯ শতক, ভিপি তালিকাভুক্ত ৫ একর ৭৭ শতক ও ব্যক্তি মালিকানাধীন ২৫২ একর ১২ শতক। আর কাচা রাস্তা ২ একর ২ শতক।

এ ৬০ একর জমির গ্রামে এখন ধান, মসুর, আখসহ বিভিন্ন সবজি ও ফসল বাগান রয়েছে। রয়েছে বেশ কয়েকটি বসতি ভিটার ধ্বংসাবশেষ ও পুকুর।

ছবি : ডেইলি বাংলাদেশ

ছবি : ডেইলি বাংলাদেশ

পাশপাতিলা গ্রামের অরবিন্দু কর্মকার বলেন, বাপ দাদাদের কাছে শুনেছি। একক সময় এ মঙ্গলপুর গ্রামে মানুষের বাস ছিল। গোলা ভরা ধান ছিল, গোয়াল ভরা গরু ছিল। গ্রামটি প্রায় মানুষ শূন্য হয়ে পড়ে আজ থেকে দেড়শ বছর আগে।

সর্বশেষ চাজরা ঠাকুর, নিপিন ঠাকুরসহ অনেকের ৫-৬টি ঘর ছিল। আজ থেকে ৯০ থেকে ১০০ বছর আগে তারাও ঘরবাড়ি ভেঙে গ্রাম ছেড়ে চলে যান।

এলাঙ্গী ইউপি চেয়্যারম্যান মিজানুর খান বলেন, মঙ্গলপুর গ্রামের জমি জমা সব পরবর্তীতে ওই গ্রামের বসতিদের উত্তরসূরীরা বিভিন্ন জায়গা থেকে এসে পাশ্ববর্তী গ্রামে মানুষের কাছে বিক্রি করে গেছে। এখন মঙ্গলপুর গ্রাম জুড়ে শুধুই ফসলের মাঠ।

তিনি আরো বলেন, মঙ্গলপুর গ্রাম পর্যন্ত ১৮ ফুট চওড়া মাটির রাস্তা ছিল। এখন রাস্তাটি পাকা হচ্ছে। সেখানে কৃষকেরা মাঠে কাজ করেন ও নামাজ আদায় করেন। সেখানে ২টি পুকুর ও টিউবওয়েলের ব্যবস্থা আছে। তারা ওই টিউবওয়েলে পানিতে অজু করেন। এলাকাতে বয়স্ক মানুষ না থাকায় মঙ্গলপুর গ্রামের প্রকৃত ইতিহাস এখন আর কেউ বলতে পারে না।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর