চীন কিংবা রাশিয়া নয়, পশ্চিমারাই জিতছে: ইউরোপকে বলল যুক্তরাষ্ট্র

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চীন কিংবা রাশিয়া নয়, বিশ্বে পশ্চিমারাই জিতছে। বেইজিং ও মস্কো যতই ‘সাম্রাজ্য গড়ার’ চিন্তা করুক না কেন পশ্চিমা মূল্যবোধগুলোই শেষ পর্যন্ত প্রাধান্য বিস্তার করবে।’

বিশ্বমঞ্চে পশ্চিমা প্রভাব ও ভূমিকা কমে আসছে বলে সম্প্রতি যে বয়ান জোরদার হচ্ছে, তা হালকা করতেই মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে এমনি কথার ফুলঝুরি ফোটান যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার কারণে পশ্চিমা দেশগুলোর প্রভাব দিনে দিনে খর্ব হচ্ছে- বেশ কিছু দিন ধরেই এমন অভিযোগ করে আসছেন ইউরোপের নেতারাই।

পশ্চিমা কূটনীতিক ও ব্যবসায় নেতাদের বার্ষিক সম্মেলনে শনিবার এটা নিয়ে ইউরোপীয় নেতা ও পম্পেওর মধ্যে বিতণ্ডা হয়। ঘোষণার সুরেই তিনি বলেন, এই অভিযোগটি অতিরঞ্জিত। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন আন্তর্জাতিক অঙ্গন মার্কিন ভূমিকা গুটিয়ে নিচ্ছে না।

বরং নেতৃত্ব দিচ্ছে। তিনি নেতাদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করে বলেন, ‘আটলান্টিকের দুই তীরের বন্ধন অটুট আছে এবং ‘পশ্চিমা বিশ্বের বিজয় অব্যাহত আছে।’

তবে সমস্যা হচ্ছে, মার্কিন মিত্ররা মধ্যপ্রাচ্য নীতি ও ইরানের মোকাবেলায় এবং ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর সমন্বিত প্রতিরক্ষায় আরও বেশি আর্থিক অবদান রাখার ব্যাপারে বেশ উদাসীন। কিন্তু পম্পের এই বক্তব্য মেনে নেননি ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রো।

প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তার কথার পাল্টা জবাব দিয়ে তিনি বলেন, ‘পশ্চিমা বিশ্ব অবশ্যই ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে।’

ট্রাম্পের কার্যকালে অ্যামেরিকা ও ইউরোপের মধ্যে ব্যবধান বেড়েই চলেছে। বারবার দুই পক্ষের স্বার্থের সংঘাত দেখা যাচ্ছে। ট্রাম্প তার নিজস্ব আন্তর্জাতিক এজেন্ডা কার্যকর করতে গিয়ে ইউরোপের সমর্থন পাচ্ছে না। অন্যদিকে ইউরোপের স্বার্থ রক্ষার প্রশ্নে আর আগের মতো অ্যামেরিকার সমর্থন দেখা যাচ্ছে না।

আপাতত ট্রাম্প প্রশাসন আফগানিস্তানে শান্তি চুক্তি চূড়ান্ত করতে ব্যস্ত। ইরানের ওপর আরও কড়া নিষেধাজ্ঞা চাপানোর তোড়জোড় করছে ওয়াশিংটন। মিউনিখ সম্মেলনে বিশ্বের সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা সম্মেলনগুলোর একটি।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনেতা থেকে শুরু করে সামরিক বাহিনীর ঊর্ধ্বতন জেনারেল, কূটনীতিক, আন্তর্জাতিক নীতি-নির্ধারক এবং নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা এই সম্মেলনে যোগ দেন।

এবারের সম্মেলনের আলোচনায় দুটি বিষয় প্রাধান্য পাচ্ছে। একটি হচ্ছে পশ্চিমা দুনিয়ার ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণু প্রভাব। আরেকটি হচ্ছে রাশিয়া এবং চীন যেভাবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ক্রমেই আরও বেশি কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে, সেই বিষয়টি।

সম্মেলনের উদ্বোধনী ভাষণে জার্মান প্রেসিডেন্ট ফ্রাংক ওয়াল্টার স্টাইনমায়ার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র তো এখন ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়’ বলে যে কিছু আছে সেই ধারণাটিকেই প্রত্যাখ্যান করছে। যুক্তরাষ্ট্র এখন তার প্রতিবেশী এবং মিত্রদের গ্রাহ্য না করেই তাদের মতো করে পথ চলছে।

তবে জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেছেন, অভিযোগটি সঠিক নয়।

তিনি বলেন, ‘আটলান্টিকের দুই তীরের মৈত্রী শেষ হয়ে গেছে বলে যে কথা বলা হচ্ছে, তা অতিরঞ্জিত।’ তিনি আরও বলেন, রাশিয়ার সীমান্তে নেটোর শক্তি বাড়ানোর মাধ্যমে তারা ইউরোপকে নিরাপদ রাখছেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর