লিভারপুল-অ্যাতলেটিকো ম্যাচের দিকে তাকিয়ে অন্য জায়ান্টরা

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আগামীকাল মঙ্গলবার ওয়ান্ডা মেট্রোপলিটানোতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নক আউট পর্বের প্রথম লেগে লিভারপুলকে আতিথ্য দিবে অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ। ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়নদের সাফল্যের ধারায় ঘরের মাঠে অ্যাতলেটিকো কতটুকু লড়াই করতে পারে সেদিকে তাকিয়ে রয়েছে ইউরোপের অন্যান্য জায়ান্টরা।

পুরো মৌসুমে মাত্র দুই পয়েন্ট হারিয়ে ৩০ বছর পর প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে টেবিলের শীর্ষে থাকা লিভারপুল। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ম্যানচেস্টার সিটির তুলনায় তারা ২৫ পয়েন্ট এগিয়ে গেছে। তাছাড়া এবারের মৌসুমে লিভারপুলের সামনে অপেক্ষা করছে পাঁচটি শিরোপা জয়ের সুযোগ। ইতোমধ্যেই জার্গেন ক্লপের শিষ্যরা উয়েফা সুপার কাপ ও ক্লাব বিশ্বকাপের শিরোপা জয় করে ফেলেছে। ইউরোপীয়ান ফাইনালের পথে তাদেরকেই অন্যতম ফেবারিট হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এ্যানফিল্ডে ক্লপ এই নিয়ে চতুর্থ মৌসুম কাটাচ্ছেন।

২০১৬ সালে সেভিয়ার কাছে তার দল ইউরোপা লিগের ফাইনাল ও তার দুই বছর পর রিয়াল মাদ্রিদের কাছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে পরাজিত হয়েছে। গত বছর স্প্যানিশ রাজধানীতে অবশ্য অল ইংল্যান্ড ফাইনালে টটেনহ্যামকে হারিয়ে শিরোপা জয় করে। ক্লপ বলেন, ‘আবারো চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয় করতে পারবো কিনা সে সম্পর্কে আমি কিছুই জানিনা। কিন্তু আমাদের অবশ্যই সে ব্যপারে প্রস্তুত থাকতে হবে। তবে গত বছর আমরা যা করেছি তাতে প্রমান হয়েছে বিশ্বের সেরা দলকে পরাজিত করার ক্ষমতা আমাদের আছে।’

বর্তমান ফর্ম অনুযায়ী লিভারপুলের সাথে লড়াই করার আশা খুব সামান্যই দেখা যাচ্ছে এ্যাথলেটিকোর মধ্যে। দিয়েগো সিমিওনের অধীনে আট বছরের মধ্যে এই প্রথমবারের মত লা লিগায় নিজেদের নামের প্রতি মোটেই সুবিচার করতে পারছেনা এ্যাথলেটিকো। এমনকি আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জায়গা ধরে রাখা নিয়েও শঙ্কায় রয়েছে। পুরো মৌসুমে সিমিওনের দলের মূল সমস্যা ছিল গোলের অভাব। ১২৬ মিলিয়ন ইউরোতে হোয়াও ফেলিক্সকে দলে নিয়েও কোন কাজ হয়নি। পর্তুগীজ এই বিস্ময় বালকের মঙ্গলবার প্রথম লেগের ম্যাচে খেলা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।

বিপরীতে সাম্প্রতিক সময়ে যে কয়টি বড় চুক্তি লিভারপুল করেছে সবগুলোতেই সফল হয়েছে। গোলরক্ষক এ্যালিসন বেকার থেকে শুরু করে ভার্জিল ফন ডাইক, ফ্যাবিনহো, সাদিও মানে, মোহাম্মদ সালাহর কাঁধে ভর করে লিভারপুল শুধুমাত্র প্রতি ম্যাচে জয়ই তুলে নিচ্ছেনা, চ্যাম্পিয়ন্স লিগে শিরোপা ধরে রাখার পথে নিজেদের সুস্পষ্ট ফেবারিট হিসেবে প্রমান করেছে।

২০১৪ ও ২০১৬ সালে নগর প্রতিদ্বন্দ্বী রিয়ালের কাছে দু’বার ফাইনালে পরাজিত হয়ে শিরোপা জেতা হয়নি অ্যাতলেটিকোর। ইউরোপীয়ান অন্য দলগুলোর মধ্যে একমাত্র ম্যানচেস্টার সিটিই ছিল সবদিক থেকে দারুন ভারাসাম্যপূণ একটি দল। তবে উয়েফার নিষেধাজ্ঞায় আগামী দুই বছর যেহেতু সিটিজেনদের ইউরোপীয়ান কোন আসরে খেলা হবেনা, সে কারনে ইংলিশ চ্যাম্পিয়নরা পেপ গার্দিওলার অধীনে আর কোনদিনই হয়তবা ইউরোপীয়ান সর্বোচ্চ আসরে শিরোপা জিততে পারবে না।

শেষ ১৬’তে সিটির প্রতিপক্ষ নতুন করে জেগে ওঠা রিয়াল মাদ্রিদ। টানা ১৪ ম্যাচে অপরাজিত থেকে রিয়াল বর্তমানে লা লিগা টেবিলের শীর্ষে রয়েছে। নিজের দ্বিতীয় মেয়াদে আবারো রিয়ালকে টেনে তুলেছেন জিনেদিন জিদান। যার অধীনে চ্যাম্পিয়ন্স লিগো হ্যাটট্রিক শিরোপা জয় করে নতুন রেকর্ড গড়েছিল গ্যালাকটিকোরা।

তিন বছরের ব্যর্থতা কাটিয়ে শেষ ১৬’তে এবার কিছু করে দেখাতে চায় পিএসজি। বরুসিয়া ডর্টমুন্ড সফরে যাবার আগে দারুন ছন্দে রয়েছে ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা। যদিও দলে নতুন চুক্তিভূক্ত আর্লিং ব্রট হ্যালান্ডের দারুন ফর্মে প্রতিপক্ষকে হারিয়ে চলেছে বরুসিয়া। এবারের মৌসুমে ইতোমধ্যেই রেড বুল সালজবার্গের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আট গোল করেছেন হ্যালান্ড।

ইতালিয়ান জায়ান্ট নাপোলির মুখোমুখি হবার আগে বার্সেলোনা অবশ্য কিছুটা হতাশাজনক অবস্থায় আছে। নতুন কোচ কিকে সেতিয়েনের অধীনেও তারা সম্প্রতি নিজেদের গুছিয়ে নিতে পারছেনা।

গত ২৪ বছরে প্রথমবারের মত চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জয়ের স্বপ্নে প্রথম থেকেই অনড় ছিল জুভেন্টাস। শেষ ১৬’তে ফ্রেঞ্চ ক্লাব লিঁওকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়ে অন্যান্য দলগুলোর তুলনায় কিছুটা হলেও সুবিধাজনক অবস্থানে আছে মরিজিও সারির দল। যদিও সিরি-এ লিগে ইন্টার মিলান ও ল্যাজিওর কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে এবার জুভেন্টাসের শিরোপা ধরে রাখা নিয়ে ইতোমধ্যেই শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

চেলসির বিপক্ষে ঘরের মাঠে ২০১২ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে হারের প্রতিশোধ নেবার একটি সুযোগ এসেছে বায়ার্ন মিউনিখের সামনে। শেষ ১৩টি প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে মাত্র চারটিতে জয়ী হওয়া চেলসি জার্মান জায়ান্টদের বিপক্ষে কতটুকু প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে সেটা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর