মোমবাতি থেকেই এতিমখানায় ভয়াবহ আগুন, ১৫ শিশুর মৃত্যু

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ক্যারিবিয়ান দেশ হাইতির এক এতিমখানায় ভয়াবহ আগুন ছড়িয়ে পড়লে সেখানকার কমপক্ষে ১৫ শিশু প্রাণ হারিয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, মোমবাতি থেকেই আগুনের সূত্রপাত।

ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি জানায়, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় রাত ৯টার দিকে রাজধানী পোর্ট-অ্য-প্রিন্সের বাইরে কেন্সকফ এলাকায় অবিস্থিত এতিমখানাটিতে আগুন ধরে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় দুই শিশু। বাকি ১৩ জনের মৃত্যু হয় হাসপাতালে নেয়ার পর। ধোঁয়ায় শ্বাসজনিত সমস্যায় তাদের মৃত্যু হয় বলে জানা গেছে। নিহতদের মধ্যে নবজাতক থেকে শুরু করে ১০-১১ বছরের শিশুও রয়েছে।

এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, আগুন লাগার অন্তত দেড় ঘণ্টা পর মোটরসাইকেলে করে সেখানে উপস্থিত হন দমকল কর্মীরা। তবে তাদের কাছে আগুন নেভানোর মতো কোনও সরঞ্জাোদি ছিল না।

যুক্তরাষ্ট্রের‘চার্চ অব বাইবেল আন্ডারস্টান্ডিং’নামের একটি খ্রিস্টান গোষ্ঠীর অধীনে পরিচালিত হয় এতিমখানাটি। ওই ধর্মীয় গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে।

হাইতির স্থানীয় এক বিচারক আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম এএফপিকে বলেন, কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই ২০১৩ সাল থেকে এই এতিমখানাটি পরিচালনা করে আসছে ওই খ্রিস্টান গোষ্ঠীটি। ফলে সেখানে ব্যাপক অব্যবস্থাপনা ছিল। ভবনের জেনারেটর ভেঙে যাওয়ায় বিদ্যুৎ চলে গেলে মোমবাতি জ্বালানো হতো। বৃহস্পতিবার রাতেও শিশুরা মোমবাতি জ্বালিয়েছিল। আর সেখান থেকেই আগুনের সূত্রপাত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

রেমনড জাঁ এন্টোইন নামের ওই বিচার আরও বলেন, ‘সেখানকার এতিম শিশুরা পশুর মতো অমানবিক জীবনযাপন করতো। সেখানে কোনও অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থাও ছিলো না।’

এদিকে আগুন লাগার পর চার্চ অফ বাইবেলের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা যায়, তারা হাইতিতে ৪০ বছর আগে প্রথম অনাথআশ্রম চালু করে। তবে তাদের পরিচারিত এতিমখানায় আগুন লাগার ওপর এতে কোনও তথ্য নেই।

হাইতিতে ৩০ হাজার শিশুর জন্য সেখানে ৭৬০টিরও বেশি এতিমখানা রয়েছে। দাতব্য সংস্থাগুলোর দ্বারা পরিচালিত এসব এতিমখানার মাত্র ১৫ ভাগের সরকারি অনুমোদন আছে। বাকি ৮৫ ভাগই বেআইনি। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়,হাইতির ৮০ শতাংশ শিশুই এতিমখানায় বসবাস করছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর