নতুন চমকে যা থাকছে

বিএনপি রাজনীতিতে নতুন চমক নিয়ে আসছে এমন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। নতুন চমকটাই বা কী, এ নিয়ে খোদ দলের ভেতরেই আগ্রহের কমতি নেই। সম্প্রতি লন্ডনে বড় ছেলে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারমান তারেক রহমানের সঙ্গে পরামর্শ করে নতুন কর্মপরিকল্পনাও চূড়ান্ত করেছেন বেগম খালেদা জিয়া। একমাত্র বড় ছেলের কৌশলী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এবার দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোকেও ঢেলে সাজাবেন চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।লন্ডন থেকে ফিরে দলের নেতাকর্মীদেরকে এমনটাই আভাস দিয়েছেন তিনি। সরকারবিরোধী আন্দোলন কর্মসূচি থেকে সরে এসে এবার সংগঠন গোছানোর চিন্তাভাবনা করছে বিএনপির হাইকমান্ড। পৌর-নির্বাচনের পরেই দলটিতে নতুন চমক দেখা দিবে বলে মনে করছেন বিএনপির এসব নেতারা। সে লক্ষ্যেই এ নির্বাচনে দলের পক্ষ থেকে জোর প্রচারণা চলানো হবে বলে আশা করছেন তারা। সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, টানা ৯ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা দেশের বৃহত্তর রাজনৈতিক দল বিএনপি আবারো ঘুরে দাঁড়াতে চায়। যুবদলের ব্যর্থতায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রচ- ক্ষুব্ধ হন। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পরপরই তিনি যুবদলের নেতৃত্ব পরিবর্তনের উদ্যোগ নেন। বিভিন্ন সূত্রের মাধ্যমে যোগ্য নেতৃত্ব বাছাই করার প্রক্রিয়া শুরু করেন। কিন্তু এই প্রক্রিয়া হঠাৎ করেই থেমে যায়। তবে তিন মাসের আন্দোলনে কার্যকর ভূমিকার রাখতে না পারায় এবার এই সংগঠন পুনর্গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দলের ৯টি অঙ্গ ও দুইটি সহযোগী সংগঠনের সবগুলোতেই ক্রমান্বয়ে নজর দেবেন খালেদা। তবে বিএনপির ভ্যানগার্ড হিসেবে খ্যাত জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এবং যুবদল, শ্রমিকদলসহ প্রথম সারির কয়েকটি সংগঠনে দ্রুত নতুন কাঠামোতে নিয়ে আসবেন সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী। এ লক্ষ্যে দলের শীর্ষ কয়েকজন নেতার সঙ্গে তিনি লন্ডন থাকা অবস্থায় আলাপ আলোচনাও করেছেন বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ছাত্রদলের শীর্ষ এক নেতা জানান, রাজপথে ছাত্রদলের ব্যর্থতা স্পষ্ট। এটা নিয়ে যুক্তি দেখানোর কিছুই নেই। ছাত্রদলের এমন ব্যর্থতায় নাখোশ দলের চেয়ারপারসন এবং বিএনপির ভবিষৎ কা-ারি তারেক রহমান। তিনি আরো বলেন, এজন্য বর্তমান কমিটি ভেঙ্গে সর্বনিম্ন তিনমাস ও সর্বোচ্চ পাঁচ মাসের জন্য একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে খালেদা জিয়ার কাছে। আহ্বায়ক কমিটিটি যথাসময় নিয়মিত ছাত্রদের মধ্যে সত্যিকারার্থে যাদের দলের জন্য ত্যাগ রয়েছে তাদের উপর দায়িত্ব ছেড়ে দেবে। তাই দ্রুত সবগুলো সংগঠনকে ঢেলে সাজানোর মাধ্যমে সত্যিকারের শক্তি জানান দিতে চায় বিএনপি প্রধান। এজন্য সিন্ডিকেটের কবল থেকে বেরিয়ে সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই এসব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনে নতুন নেতৃত্ব নিয়ে আসবেন তিনি। জানা গেছে, ৫ জানুয়ারির আগেই বিএনপি সমর্থিত পেশাজীবী, বুদ্ধিজীবী, সুশীলসমাজের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন খালেদা জিয়া। নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলের এক শীর্ষ নেতা জানান, পৌর নির্বাচনের কারণে সাংগঠনিক কর্মকা-ে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটেছে। তবে দলকে শক্তিশালী করতে টার্গেট নিয়ে কাজ করছেন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, এজন্য দলের একেক শীর্ষ নেতাকে তিনি ভাগ করে দায়িত্ব দিয়েছেন। সব কিছু ঠিকমতো হলে যথাসময়ে হয়তো ফের রাজপথে সক্রিয় হবে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক সেনা প্রধান লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দেশে ফেরার পরই তো পৌরসভা নির্বাচন চলে এসেছে। তাই নির্বাচন নিয়ে কাজ চলছে। তবে এর পাশাপাশি দল গুছানোর কাজও অব্যাহত রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর