এক সঙ্গে ইনু-ফালু

রাজনীতির মাঠে দুজন প্রতিপক্ষ। একজন জাসদের সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী। অন্যজন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা। সচারাচর একই অনুষ্ঠানে দুজন অতিথি হওয়ার নজির নেই বললেই চলে। কিন্তু সোমবার রাতে গুলশান ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে হাসানুল হক ইনু ও মোসাদ্দেক আলী ফালুকে একসঙ্গে দেখে মনেই হয়নি দুজন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ। বসলেন পাশাপাশি, কথাও বললেন। কখনও হাসতে হাসতে, কখনও ভাবগম্ভীর আলোচনা। আবার কানাকানিও হলো দুজনার।

প্রেজেন্টেশন ক্লাবের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী। বিশেষ অতিথি এনটিভির কর্ণধার মোসাদ্দেক আলী ফালু।

তথ্যমন্ত্রী বক্তব্যের শুরুটা ছিল হৃদতাপূর্ণ। ফালুকে ‘খুবই ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহযোদ্ধা’ বলেই সম্বোধন করলেন জাসদ সভাপতি। আবারও কায়দা করে মৃদু টিপ্পনী করে বললেন, ‘রাজনীতি গায়ের জোরে হয় না। মাথা দিয়ে খেলতে হয়।’

মোসাদ্দেক আলীও তার বক্তৃতায় বারবারই তথ্যমন্ত্রীকে ‘ইনু ভাই’, ‘আমাদের তথ্যমন্ত্রী’ বলে সম্বোধন করেন। অনুষ্ঠানের আয়োজকরা বিশেষ অতিথি ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের কথা বলছিলেন বারবার। কারণ ছিল ফেসবুক। ফেসবুক খুলে দেয়ার ব্যাপারে প্রতিমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানাতে চেয়েছিলেন উপস্থাপকরা। শেষতক অবশ্য তারানা হালিম যাননি অনুষ্ঠানে।

সেই প্রসঙ্গ টেনে ফালু বলেন, ‘ইনু ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলছিলাম। তিনি আমার সঙ্গে একমত যে আপনারা ভুল জায়গায় নক করছেন। কারণ ফেসবুক খুলে দেবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এখানে তারানা হালিমের কিছুই করার নেই।’

উপস্থাপকদের অনুষ্ঠান। প্রসঙ্গটা এড়িয়ে যাননি তথ্যমন্ত্রী। কাগজে নোট করে নিয়ে এসেছিলেন কণ্ঠ পরিচর্যার টুকিটাকি। কীভাবে কণ্ঠ ভাল রাখা যায় সেই পরামর্শই দিচ্ছেন মন্ত্রী। ওমনি সামনের সারিতে বসা একজন নারী উপস্থাপক বললেন, ‘ইনু ভাই আপনি স্বাস্থ্যমন্ত্রী হচ্ছেন কবে? ’এসময় মন্ত্রী হেসে উত্তর দেন, ‘আমি যা বলছি ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলেই বলছি। আমার নিজের গলার জন্য ডাক্তারের কাছে অনেকবার যেতে হয়েছে। তবে মন্ত্রিত্ব তো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাতে। তিনি যদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেন তাহলে তাই হবে। আমাকে ধর্ম মন্ত্রণালয় দিলেও অসুবিধা নেই। ’এসময় একসঙ্গে হেসে ওঠেন সবাই। সামনের সারিতে বসা ফালুও চেপে রাখতে পারেননি হাসি। বললেন,‘আমাদের তথ্যমন্ত্রী বলে কথা।’

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর