ইসির ছয় নির্দেশনা

২৩৬টি পৌরসভা নির্বাচন ভোটগ্রহণ আগামী ৩০ ডিসেম্বর। নির্বাচন নিরপেক্ষতা অক্ষুণ্ন ও সমুন্নত রাখতে রিটার্নিং অফিসারদের ছয়টি নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করতে ভিজিল্যান্স ও অবজারভেশন টিম, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সেল ও নির্বাচন মনিটরিং টিম গঠনের নির্দেশও দেয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের উপ-সচিব সামসুল আলম স্বাক্ষরিত এ নির্দেশনা শনিবার ২৩৬টি পৌরসভার রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। নির্দেশনার অনুলিপি মন্ত্রিপরিষদ সচিব, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, বিজিবি, র‌্যাব ও আনসারের মহাপরিচালক বরাবর পাঠানো হয়। নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করতেও অনুরোধ করা হয়েছে। ছয় নির্দেশনা হলো বিশেষ কোনো মহলের কোনো প্রকার প্রভাব বা হস্তক্ষেপ নির্বাচনের নিরপেক্ষতা যাতে ক্ষুণ্ন করতে না পারে তা আইন বিধিমালা ও আচরণ বিধিমালার আলোকে নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনের ন্যায় একটি সংবেদনশীল, স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ডের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এমন কোনো কাজ করবেন না, যার দ্বারা তাদের উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বা স্থানীয় জনগণের কাছে হেয় প্রতিপন্ন হতে হয় এবং প্রতিটি কাজে আইন ও বিধির যথার্থ প্রয়োগ ও অনুসরণ করতে হবে। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে এলাকার জনগণের যৌথসভা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সবাইকে ভোটদানে উদ্বুদ্ধ করতে বলা হয়েছে। ভোটদানের জন্য ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ও স্বাচ্ছন্দ্যে ভোটকেন্দ্রে আসতে পারেন, সে জন্য নিশ্চয়তামূলক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী ভ্রাম্যমাণ ইউনিটের নিবিড় টহলদানের ব্যবস্থা করতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা এবং ভোটকেন্দ্রগুলোতে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার ও যেকোনো ধরনের অশুভ কার্যকলাপ প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে সদা সতর্ক থাকতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের কঠোর নির্দেশ প্রদান করতে হবে এবং ভোটকেন্দ্রের অবস্থান সম্পর্কে ভোটারদের অবহিত করতে নির্বাচনের আগে ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে। ভিজিল্যান্স ও অবজারভেশন টিম গঠন নির্বাচন যাতে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় এবং নিরপেক্ষতা যাতে জনগণের কাছে দৃশ্যমান হয় তা নিশ্চিত করতে রিটার্নিং অফিসারের নেতৃত্বে বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে ভিজিল্যান্স ও অবজারভেশন টিম গঠন করতে বলা হয়েছে। এ টিমে বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটদেরও অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেয়া হয়। সহকারী রিটার্নিং অফিসার সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। টিমে বেসরকারি পর্যায়ের দলনিরপেক্ষ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করতে বলা হয়েছে। পৌরসভা এলাকায় নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ হচ্ছে কিনা কিংবা ভঙ্গ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে কিনা তা সরেজমিন পরিদর্শন করবে এ টিম। আচরণ বিধিমালা ভঙ্গের কোনো বিষয় নজরে আসামাত্রই বিধি অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। নির্বাচনী বিধিনিষেধ ভঙ্গের ক্ষেত্রে মামলার ব্যবস্থা এবং উপযুক্ত ফৌরদারি আদালতেও অভিযোগ দায়ের করবে এ টিম। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সেল গঠন নির্বাচনী এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিতকরণে আইনশৃ্ঙ্খলা রক্ষা সংস্থাসমূহের কর্মকাণ্ডের সমন্বয় সাধন ও সুসংহতকরণের লক্ষ্যে রিটার্নিং অফিসারের নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সেল গঠন করতে হবে। সেলে অন্যান্য সদস্যরা হবেন পুলিশ সুপারের একজন প্রতিনিধি এবং সহযোগী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মনোনীত কর্মকর্তা। সেলের কাজ হবে- নির্বাচনী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকল্পে সব প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সার্বিক পরিস্থিতি বিষয়ে গৃহীত পদক্ষেপ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে অবহিত করা। নির্বাচন মনিটরিং টিম গঠন রিটার্নিং অফিসারের নেতৃত্বে প্রার্থীদের প্রতিনিধি বা নির্বাচনী এজেন্টের সমন্বয়ে নির্বাচন মনিটরিং টিম গঠন করতে হবে। টিমে সহকারী রিটার্নিং অফিসার সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। নির্বাচন মনিটরিং টিম নির্বাচন সংক্রান্ত আইন, বিধি, নির্বাচনী আচরণবিধি এবং নির্বাচনের সার্বিক বিষয় যথাযথ ও সঠিকভাবে পালন হচ্ছে কিনা তা তদারক করবে এবং প্রতিপালনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থ গ্রহণ করবে। এ টিম বিশেষ ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক এবং অন্য ক্ষেত্রে প্রতি সাতদিন পর উল্লেখিত বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর