মাঠ জুড়ে আলুর সবুজ সমারোহ

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় চলতি মৌসুমে গোল আলুর ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। এ উপজেলার আটটি ইউপির চাষযোগ্য জমিতে এখন শুধু আলু গাছের সবুজ সমারোহ। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আক্রমণে উপজেলায় রোপা আমন ধানের কিছুটা ক্ষতি হলেও পুষিয়ে নিতে গোল আলু চাষে ব্যস্ত হয়ে ওঠেন কৃষকরা। স্থানীয় কৃষি অফিসের পরামর্শে নিয়মিত গাছের পরিচর্যা করছেন তারা।

ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি শস্য মৌসুমে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় ১৩০ হেক্টর জমিতে গোল আলু চাষ করা হয়েছে। প্রথম দিকে আলু লাগানোর শুরুতে বৃষ্টির কারণে বীজ কিছুটা পচন দেখা দিলেও উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে কৃষকদেরকে সঠিক সময়ে পরামর্শ দিয়েছেন। এছাড়া আবহাওয়াও অনুকূলে থাকায় অন্যান্য শস্যের পাশাপাশি আলুর বাম্পার ফলনের সম্ভবনা রয়েছে।

ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার গ্রামীণ জনপদের কৃষকরা এ বছর উপসী জাতের আলু ও দেশী জাতের ছোট আলু লাগিয়েছেন। সময় মতো আলু ঘরে তুলতে পারলে এবং চাহিদা ও বাজারমূল্য ভালো থাকলে এ চাষে কৃষকদের আগ্রহ আরো বৃদ্ধি পাবে বলে স্থানীয় কৃষক ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা মনে করছেন। তবে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মধ্যে রামনগর, মনোহরপুর, অলুয়া, মলাপাড় ও আসাদনগর এলাকায় সবচেয়ে বেশি আলু চাষ হয়েছে বলে কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে।

উপজেলার অলুয়া গ্রামের প্রান্তিক কৃষক খোরশেদ আলম চারু মিয়া জানা, আমি এ বছর ১২০ শতক জমিতে ভালো ডায়ামেন্ট জাতের দেশী আলুর বীজ লাগিয়েছি। এ পর্যন্ত আলু গাছের গঠন দেখে মনে হচ্ছে বাকি দিনগুলোতে যদি আবহাওয়া ভাল থাকে আশানুরূপ ফলন পাবো। একই  গ্রামের আলু চাষি আবুল বাশার বলেন, আমি এ বছর ১৮০ শতক জমিতে ডায়ামন্ড জাতের আলু লাগিয়েছি। আকাশ ভাল থাকলে ও ছত্রাক আক্রমণ না করলে এ বছর আলুর ভালো ফলন পাবো বলে আশা করছি।

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মাহবুবুল হাসান জানান, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় এ বছর আবহাওয়াজনিত কারণে আলুর তেমন একটা ক্ষতি হয়নি। প্রথম দিকে লাগাতার কয়েকদিন বৃষ্টির কারণে সমস্যা দেখা দিলেও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে তাদের সময়োপযোগী পরামর্শ দিয়ে সমাধান করেছি। এ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও আগামী দিনেও যদি ঘন কূয়াশা না থাকে, আকাশ রৌদ্রজ্জ্বল  থাকে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে কোনো প্রকার ক্ষতি না হয়, তাহলে আলুর বাম্পার ফলনের সম্ভবনা রয়েছে।

এছাড়াও কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদেরকে নিবিড়ভাবে যথাযথ পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে দিক-নির্দেশনা দেয়া অব্যাহত রয়েছে। সব শেষে, প্রান্তিক কৃষকরা যেকোনো ফসল নিয়ে সমস্যায় পড়লে উপজেলা কৃষি অফিসার ও কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার এবং উপ-সহকারী কৃষি অফিসার কর্তৃক সঠিক পরামর্শ গ্রহণ করার আহবান জানান তিনি।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর