শুধু নামের মিল থাকায়

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাজশাহীতে যুবলীগ নেতা সানোয়ার হোসেন রাসেল হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতরা তিন মাসেও ধরাছোয়ার বাইরে। হত্যায় জড়িত চিকিৎসক পুত্র শাহীন আহমেদকে পুলিশ এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি। কিন্তু নামের মিল থাকায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার নূর মোহাম্মদ সরদারের নিরপরাধ ছেলে শাহীনুর রহমান শাহীনকে এই মামলায় গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। এরপর থেকেই জেল খাটছেন শাহীন। এতে তার শিক্ষা জীবন ধ্বংসের মুখে পড়েছে।

মামলার বাদী মনোয়ার হোসেন রনি বলেন, ‘আমরা এজাহারে যাদের নাম দিয়েছি, তাদের মধ্যে জেলে থাকা শাহীন নেই। অথচ পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তার ছেলে শাহীনকে এজাহার নামীয় আসামি করে কারাগারে পাঠিয়েছে। আমরা পুলিশকে বার বার পরিষ্কার করেই বলেছি, এই শাহীন হত্যাকাণ্ডে জড়িত নয়। কিন্তু পুলিশ তাকে রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে আসামির তালিকায় নাম দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে।’

উল্লেখ্য, গত ১৩ নভেম্বর পশ্চিম রেলের সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের টেন্ডারবাজি নিয়ে রাসেলের ভাই আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন রাজার ওপর হামলা হয়। তাকে বাঁচাতে গেলে ছুরির আঘাতে গুরুতর জখম হন রাসেল। পরে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চন্দ্রিমা থানার উপপরিদর্শক রাজু আহমেদ বলেন, মামলাটির তদন্ত চলছে। নিরপরাধ শাহীনকে ধরে জেলে পাঠিয়েছেন কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা যাবে না। তিনি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।

শাহীনের বাবা নূর মুহাম্মদ সরদার জানান, পুলিশ ঐদিন সন্ধ্যায় পাড়ার মোড়ে যাকে পেয়েছে তাকেই তুলে নিয়ে গেছে। এরপর বাছ-বিচার না করেই তাদের রাসেল হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়েছে। সেখানে আটকদের মধ্যে তার ছেলে শাহীনও ছিল। অথচ হত্যাকাণ্ডের দিন সকাল থেকেই সে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ছিল। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার সময় পাড়ার মোড় থেকে তাকে আটক করা হয়। ঐদিন সে যে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ছিল সে প্রমাণও পুলিশকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারপরেও তারা গোয়ার্তুমি করে শাহীনকে জেলে পাঠিয়ে দিয়েছে। এই ধরনের বাজে কাজ করছে মাত্র গুটিকয়েক পুলিশ। কিন্তু বদনামের ভাগিদার হচ্ছে গোটা পুলিশ সমাজ, যা মোটেও কাম্য নয়।

আরও পড়ুন: পুলিশ হেফাজতে এক বছরে ১৬ মৃত্যু

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রাসেলের প্রকৃত খুনিদের গ্রেফতারের দাবিতে নগরীজুড়ে মানববন্ধন ও পোস্টারিং করা হয়েছে। ঐসব পোস্টারে রাসেল হত্যায় জড়িত দাবি করে ৯ জনের ছবি দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে জেলে ঢুকিয়ে দেওয়া শাহীনের ছবি নেই। সব মানববন্ধন কিংবা বিক্ষোভের সময় বাদীর পক্ষ থেকে খুনি হিসেবে ডা. নাসিরের ছেলে শাহীন আহমেদ শাহীনের ছবি ব্যানারে ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু রাজশাহী মহানগর পুলিশ কারও কথাই শুনতে নারাজ।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর