অসময়ের ভাঙনে দিশেহারা এক সপ্তাহে বিলীন শতাধিক বিঘা ফসলি জমি

হাওর বার্তা ডেস্কঃ অসময়ের তীব্র ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে রাজবাড়ীর মানুষ। তিন মাস আগের ভাঙনে বসত বাড়ি হারানোর ক্ষত কাটতে না কাটতেই আবার শুরু হয়েছে ভাঙন। শুষ্ক মৌসুমের এই ভাঙনে এক সপ্তাহে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে অন্তত একশ’ বিঘা ফসলি জমি। সরিয়ে নিতে হচ্ছে বসতবাড়ি। ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছে হাজারো মানুষের।
এদিকে গতকাল সকালে রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দেবোগ্রাম ইউনিয়নের কাওয়াজানি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, একের পর এক বড় আকৃতির ফসলি জমিসহ মাটির ভেঙে পড়ছে। উৎসুক জনতা ভিড় করে নদী ভাঙন দেখছে। ফসলের মাঠে থাকা পেঁয়াজ, টমেটো, ও বেগুন নদীতে তলিয়ে যাচ্ছে। জমির মালিকরা ফসল বাঁচানোর চেষ্টা করছে।
ফসল বাঁচানো কাজে ব্যস্ত থাকা দেবোগ্রাম ইউনিয়নের আম্বিয়া বেগম বলেন, তিন মাস আগের ভাঙনে ঘরবাড়ি হারিয়ে মনে চাপা কষ্ট আর বুকভরা বেদনা নিয়ে বেঁচে আছি। ১০ শতাংশ জমিতে টমোটোর চাষ করেছিলাম। গতকাল হঠাৎ ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে আমার শেষ সম্বলটুকুও। এখন আমার দাড়ানোর কোন জায়গা নেই। এর আগেও তিনবার ভাঙনের মুখোমুখি হয়েছি। তবে এবার নিঃস্ব হলাম।
একই এলাকার কৃষক ৬৫ বছরের জলিল প্রামানিক বলেন, পদ্মার ভাঙনে দিশেহারা আমরা। এখন কোথায় যাব? কি করব? কার কাছে বললে ভাঙন বন্ধ হবে? আমাদের এখন একটাই চিন্তা যেভাবে ফসলি জমি ভাঙছে বসতবাড়ি আর রক্ষা পাবে না। এভাবে আর দু’এক দিন ভাঙলেই কাওয়াজানি গ্রামটি মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে।
গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আছাদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, নদীর পানির লেয়ার নিচে যাওয়ায় বর্ষা মৌসুমের মতই ভাঙন দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ও দেবোগ্রাম ইউনিয়নের বেশির ভাগ এলাকা ভেঙেছে। এ ব্যাপারে বার বার বলা সত্যেও বিভিন্ন অজুহাত ছাড়া কোনো পদক্ষেপ নেই পানি উন্নয়ন বোর্র্ডের। অচিরেই নদী শাসনের দাবিও জানান তিনি। রাজবাড়ীর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো’র) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, শুষ্ক মৌসুমের হঠাৎ ভাঙনের কথা শুনেছি। ভাঙন কবলিত কাওয়াজানি এলাকাটি বিআইডবিøটিএর একটি প্রকল্পের আওতায় পড়েছে। ওই প্রকল্পটি একনেকে পাশ হলেই কাজ শুরু করা হবে। তবে আশা করা হচ্ছে এ মাসের মধ্যেই প্রকল্পটি পাস হবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর