যুগান্তরের গোলটেবিল বৈঠক: ঢাকাকে বসবাসযোগ্য করে গড়তে হবে

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বৃহস্পতিবার যুগান্তর কার্যালয়ে ‘কেমন সিটি চাই’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠকে দুই সিটির মেয়র প্রার্থীসহ নগর পরিকল্পনাবিদ ও বিশিষ্টজনরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রাণবন্ত এই গোলটেবিল বৈঠকে তারা বলেন, আমাদের নগরী শুধু অপরিকল্পিতই নয়, এখানকার সবকিছুরই লণ্ডভণ্ড অবস্থা। ঢাকাকে একটি বাসযোগ্য নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে প্রয়োজন সদিচ্ছা ও সবার সমন্বিত উদ্যোগ।

বক্তারা বলেন, নির্দিষ্ট ছক ও পরিকল্পনা এবং গাইডলাইন তৈরি করে সামনে এগোতে হবে। স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে বলেও অভিমত ব্যক্ত করেন বক্তারা।

যুগান্তরের গোলটেবিল বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা একেক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সমস্যা চিহ্নিত করেছেন এবং সেভাবে সেই সমস্যা উত্তরণে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিয়েছেন।

যেমন, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. সা’দত হুসাইন সিটি মেয়রদের ব্যবস্থাপনা কৌশল ও সামাজিক উদ্বুদ্ধকরণের ওপর জোর দিয়েছেন। পরিকল্পনা করে সামনে এগোলে অনেক কাজ দ্রুত ও টেকসইভাবে করা যায় বলে মত দিয়েছেন তিনি।

আরেক বক্তা সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন মেয়র প্রার্থীদের উদ্দেশ করে বলেছেন, আপনাদের কেউ ক্ষমতা দেবে না, নিজে নিজে ক্ষমতা তৈরি করে নিতে হবে।

বৈঠকে ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে দায়বদ্ধতা থেকে একটি পরিকল্পিত নগরী নির্মাণের প্রত্যয় ব্যক্ত করে ঢাকাকে একটি মানবিক শহরে পরিণত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। নির্বাচিত হলে আগের মেয়াদের ৯ মাসের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে তিনি নগরবাসীর সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

অন্যদিকে, উত্তর সিটির আরেক মেয়র প্রার্থী বিএনপির তাবিথ আউয়াল বলেছেন, তিনি নির্বাচিত হলে কম কথা বলে নগরবাসীর সমস্যা ও দুর্ভোগের কথা গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেবেন। গোলটেবিল বৈঠকে অন্যান্য বক্তাও প্রায় একই সুরে কথা বলেছেন।

আমরা মনে করি, যুগান্তরের গোলটেবিল বৈঠকে আলোচিত কথাগুলো যদি বাস্তবরূপ পায়, তাহলে ঢাকা নগরীর চেহারা অনেকটাই বদলে যাবে। বস্তুত ঢাকা নগরী বর্তমানে নানা ধরনের সমস্যা ও সংকটের মধ্যে রয়েছে। গণপরিবহন ও যানজটের সমস্যা থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যসেবা, বায়ুদূষণ, সামাজিক নিরাপত্তা ইত্যাদি ইস্যু আমাদের চোখের সামনে জ্বলজ্বল করছে।

ঢাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা এমন যে, সম্প্রতি এখানকার একটি ব্যস্ততম এলাকায় ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী। প্রশ্ন উঠতে পারে, নিরাপত্তা ব্যবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত হল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিশেষত পুলিশ বাহিনী; পুলিশ প্রশাসন যেহেতু সিটি কর্পোরেশনের আওতায় নেই, তাই ঢাকার নিরাপত্তা বিধানের কাজটি সিটি কর্পোরেশন কীভাবে করবে?

এখানেই এসে যায় নগর সরকার গঠনের কথা। এই দাবি দীর্ঘদিনের। যুগান্তরের গোলটেবিল বৈঠকে কমিউনিস্ট পার্টির মেয়র প্রার্থীও এই দাবি তুলেছেন। আমরাও মনে করি, নগর সরকারের দাবিটি যৌক্তিক এবং তা গঠন করা গেলে ঢাকার দুই সিটির কাজের সক্ষমতা অনেকটাই বেড়ে যাবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর