শৈত্যপ্রবাহ আর কুয়াশায় বোরো ধানের বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশার কারণে রাজবাড়ীর বিভিন্ন স্থানে বোরো ধান চাষের জন্য কৃষকদের তৈরি করা বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বাড়তি টাকা খরচ করে চারা কিনে ধান চাষ করতে হবে বলে জানান কৃষকরা।

জানা গেছে, রাজবাড়ী সদর উপজেলার পাঁচুরিয়া, বরাট, মিজানপুর, রামকান্তপুর, দাদশী, গোয়ালন্দের দেবগ্রামসহ অন্যান্য উপজেলার বিভিন্ন স্থানে কুয়াশায় ও শৈত্যপ্রবাহে বোরো ধানের বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বীজতলাগুলোর অনেক স্থানে কোনো চারাই জন্মেনি। আর যেগুলোতে একটু হয়েছে সেই চারাগুলোর পাতায় দেখা দিয়েছে লালচে রঙ। বীজতলা ভালো রাখতে পলিথিন দিয়ে ঢেকেও কাজ হচ্ছে না।

সারাবছরই রাজবাড়ীর কৃষকরা কোনো না কোনো জাতের ধান চাষ করে থাকেন। আর তার পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে আগেই ওই ধানের চারার বীজতলা তৈরি করেন। বোরো ধান চাষের জন্য শীতের শুরু ডিস্বেবর মাসের প্রথম দিকে চাষিরা বীজতলা তৈরি শুরু করেন। কিন্তু এ বছর শুরু থেকে শীতের তীব্রতা ও কুয়াশায় বীজতলা কোল্ড ইনজুরিতে পরে। এতে জেলার বিভিন্ন স্থানে বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কৃষকদের বাড়তি টাকা খরচ করে চারা কিনে ধান চাষ করতে হবে। বীজতলা তৈরির জন্য বীজ কেনা থেকে শুরু করে অনেক খরচ। তারপর আবার বার যদি চারা কিনে চাষ করতে হয়, তাহলে কৃষকদের খরচ বেড়ে যাবে কয়েকগুন।

কৃষকরা জানান, ইতোমধ্যে তারা বোরো ধান চাষ করার জন্য বীজতলা তৈরি করেছেন। কিন্তু ঘন কুয়াশার কারণে তাদের বীজতলা ভালো হয়নি। অনেকেই জানেন না কি কারণে তাদের বীজতলা নষ্ট হচ্ছে। এতে করে তারা বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়েছেন। অনেক চাষি একাধিকবার বীজতলা করলেও ভালো চারা জন্মেনি। কিন্তু এখন আর বীজতলা তৈরির সুযোগ নাই। এখন বাজার থেকে বেশি দামে বোরো ধানের চারা কিনে চাষ করতে হবে। এতে তাদের খরচ বেড়ে যাবে দ্বিগুনেরও বেশি।

 

সদর উপজেলার পাঁচুরিয়া ইউনিয়নের ব্রামনদিয়া গ্রামের কৃষক বাচ্চু তালুকদার জানান, তিনি আধাবিঘা জমিতে বোরো ধানের বীজতলা তৈরি করেছেন। কিন্তু শৈত্যপ্রবাহ ও কুয়াশায় এবার বীজতলা ভালো হয়নি। ৩৬০ টাকা কেজি দরে বীজ কিনে নিজের জমিতে ধান চাষের জন্য তিনি হাইব্রিড বীজতলা করেছিলেন। বীজতলায় যে চারা হয়েছে তাতে চারা কিনে ধান লাগাতে হবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক গোপাল কৃষ্ণ দাস জানান, এ বছর রাজবাড়ীতে ১৩ হাজার ৮৬০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর বিপরীতে ৬৮৪ হেক্টর জমিতে বীজতলা ফেলা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, শৈত্যপ্রবাহ ও কুয়াশা থেকে বীজতলা রক্ষায় কৃষকদের দিনের বেলা বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা এবং ১ থেকে ২ ইঞ্চি পানি দিয়ে বিকেল থেকে পুরো রাত ভিজিয়ে রেখে সকালে পানি বের করে দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও কৃষকদের পাশাপাশি ইউনিয়ন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের সচেতন থাকতে বলা হয়েছে। যেসব স্থানে বীজতলায় সমস্যা দেখা দিয়েছে সেসব স্থানে কীটনাশক প্রয়োগের পরামর্শও দেয়া হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর