রোগ প্রতিষেধকের মহৌষধ আফ্রিকার সুপারফুড ‘বাওবাব

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বাওবাব হলো পৃথিবীর একমাত্র ফল, যা গাছেই শুকোয়৷ লম্বা, নরম কোষগুলো ছ’মাস ধরে রোদে শুকনোর পর, ফলের খোসাটা শক্ত, মসৃণ আর বাদামি হয়ে যায়।

ফলের ভেতরে কোনো আর্দ্রতা থাকে না৷ মানুষজন গাছে চড়ে বাওবাব দানাগুলোকে মাটিতে ফেলে দেয়৷ ‘জীবনবৃক্ষ’ বাওবাব গাছ আফ্রিকা মহাদেশের একটি প্রতীক৷ আফ্রিকার তৃণভূমিতে চরম শুষ্কতা সত্ত্বেও এই গাছগুলো হাজার হাজার বছর ধরে বাড়তে পারে, কেননা তাদের পিপের মতো গুঁড়িগুলোতে পানি ধরা থাকে৷ রোগ প্রতিষেধকের ক্ষমতা বাড়াতে বাওবাব ফল জাদুকরী কাজ করে।

বাওবাব গাছ মানুষ ও জন্তুজানোয়ারকে শুধু খাদ্যই দেয় না, সেই সঙ্গে ছায়া ও আশ্রয় দেয়৷ তাই আফ্রিকায় এ গাছের নাম জীবনের গাছ৷ বুনো ফল বাওবাব গাছের আবাদ করা চলে না, গাছগুলো মুক্ত প্রকৃতিতে গজায় ও বাড়ে৷

গুঁড়িতে হাজার হাজার লিটার জল ধরা থাকে বলে গাছগুলোর খরাতে কিছুই হয় না৷ কিন্তু ২৫ বছর ধরে বাড়ার আগে বাওবাব গাছে ফল ধরে না৷ কাজেই বাওবাব ফলের চাহিদা বাড়লে প্রকৃতি ও পরিবেশ সে ধাক্কা সামলাতে পারবে কিনা, সংরক্ষণবাদীরা তা নিয়ে চিন্তিত৷ বাওবাব গাছের ফল তোলা কেনিয়ায় অনেক পরিবারের কাছে রোজগারের একটা উৎস৷ গ্রামাঞ্চলে গাছের কাছাকাছি যে সব মানুষদের বাস, তাঁরাই আগে এই ফল খেতেন৷ কিন্তু এখন এই ফল শহরেও বিক্রি হচ্ছে ও বিদেশে চালান হচ্ছে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রথম ২০০৮ সালে বাওবাব ফলের আমদানি অনুমোদন করে৷ আজ ইইউ-তে প্রতিবছর প্রায় ২০ টন বাওবাব ফল রপ্তানি করা হয়ে থাকে৷ ‘বাঁদর রুটি’ ফসল তোলার পরে বীজের শক্ত খোলাগুলোকে ভেঙে ভিতরের সাদা, শুকনো ফলগুলোকে বের করে নেয়া হয়৷ পরে সেই ফল গুঁড়িয়ে যে ছাতু করা হয়, তা মেখে কিংবা সরবত করে অথবা রান্নায় দিয়ে নানাভাবে খাওয়া যায়৷ বাওবাব ফল থেকে যে রুটি তৈরি করা হয়, তাকে বলে ‘বুইয়ে’ বা বাঁদর রুটি৷ এই রুটি খুব পুষ্টিকর আর এ থেকে নানা ধরনের অসুখ সারে৷

স্বাস্থ্যকর প্রতি ১০০ গ্রাম বাওবাব ফলে ৩০০ মিলিগ্রাম ভিটামিন ‘সি’ থাকে, যা কিনা কমলালেবুর চেয়ে পাঁচগুণ বেশি৷ বাওবাব ফলের রস খুব জনপ্রিয়; আবার বাওবাব গাছের পাতা ও বিচি প্রসাধন দ্রব্য ও অন্যান্য খাবার তৈরিতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে৷

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর