জাতীয় অলিম্পিয়াডে তৃতীয় হলেন বেরোবির মজিদুল

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সময়টা ছিল ১৩ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৪টা। যখন শুনতে পারলাম জাতীয় গণিত অলিম্পিয়াড প্রতিযোগিতা-২০১৯ এ আমি তৃতীয় হয়েছি। শুনেই অনেক ভালো ভালো লাগা কাজ করে আমার মাঝে। আমাদের বিশবিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের একজন ছাত্র হয়ে হয়তো বিশবিদ্যালয়কে ছোট কিছু হলেও দিতে পেরেছি।

আমি আশা করছি পরবর্তীতে হয়তো এর চেয়েও বেশি কিছু বিশবিদ্যালয়কে দিতে পারবো । এমনভাবেই কথা বলছিলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ৩য় বর্ষের (বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ম ব্যাচ) শিক্ষার্থী মো. মজিদুল ইসলাম।

মজিদুল পঞ্চগড় জেলার সদর উপজেলার জমভিটা গ্রামের কৃষক ঘড়ে মজিদুলের জন্ম। বাবা রফিজুল ইসলাম ও মা মনজিলা বেগমের পাঁচ সন্তানের ৩য় তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের উদ্যোগে ‘একাদশ জাতীয় স্নাতক গণিত অলিম্পিয়াড ২০১৯’ এর আয়োজন করা হয়। এতে সারা বাংলাদেশের ৮টি অঞ্চল ভেদে বাছাই পর্ব হয়।  প্রতিটি অঞ্চল থেকে ১০ জন প্রতিযোগীকে নেয়া হয়।

গত ২৯ নভেম্বর রংপুর অঞ্চলের দুই বিশ্ববিদ্যালয় ও কয়েকটি কলেজের প্রায় ২শ’ প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে ২য় স্থান অধিকার করে জাতীয় স্নাতক গণিত অলিম্পিয়াডে সুযোগ পান মজিদুল ইসলাম। পরবর্তীতে জাতীয় প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে বুয়েট ও ঢাবির পরে ৩য় স্থান করে নেয় সে। এই প্রতিযোগিতায় চূড়ান্ত পর্বে মোট ১০ জন বিজয়ীকে পুরস্কৃত করা হয়।

গণিত ভালে লাগার ব্যাপারে জানতে চাইলে মজিদুল বলেন, গণিত আমার প্রথম থেকেই অনেক ভালো লাগত। সেই ভালো লাগা থেকে মূলত গণিত অলিম্পিয়াড এ অংশগ্রহণ করা। আমি প্রাথমিক বিদ্যালয় এ থাকা অবস্থায় আমি অনেক ভালো গণিত বুঝতাম। মাধ্যমিকেও গণিতে অনেক ভালো মার্ক পেতাম। নবম-দশম শ্রেণিতে বেশ কয়েকবার ১০০তে ৯৯ পেয়েছি। এগুলো থেকে গণিতের ওপর আগ্রহটা দিন দিন বেড়েই চলত। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে আমার প্রথম পছন্দ ছিলো গণিত বিভাগ।

সফলতার পেছনে কারা বেশি অনুপ্রেরণা দিয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, এত দূর আসার পিছনে অনুপ্রেরক হিসেবে আমার বিভাগের বেশ কয়েক জন শিক্ষক আমাকে যথেষ্ট অনুপ্রেরণা দিয়েছেন, সাপোর্ট দিয়েছেন। স্যারেরা প্রায়শই আমার প্রস্তুতির বিষয়ে খোজ নিতেন। যেটা আমাকে গণিত অলিম্পিয়াড এর দিকে আরও বেশি আকৃষ্ট করেছে।

ভবিষতের স্বপ্ন নিয়ে মজিদুল ইসলাম বলেন, গণিত এ অনার্স মাস্টার্স করে বিদেশে গিয়ে পিএইচডি করার প্রবল ইচ্ছে।  যদি সেটা সম্ভব হয় তবে পিএইচডি শেষ করে দেশে ফিরে গনিতের শাখা প্রসার করে ছাত্র-ছাত্রীদের গণিতের ভয় দূরীভূত করার জন্যে কাজ করবো ইনশাআল্লাহ ।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, এমন অর্জন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। যারা গণিত মনস্ক তাদেরকে এটি অনুপ্রাণিত করবে। আমরা ওই শিক্ষার্থীর জন্য সংবর্ধনা ব্যবস্থা করবো।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর