মাথাপিছু দুধ ব্যবহার হয় ২২ কেজি: কৃষিমন্ত্রী

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বর্তমানে বাংলাদেশে বার্ষিক মাথাপিছু দুধ ব্যবহারের পরিমাণ ২২ কেজি বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী। এছাড়া দেশের মাথাপিছু আয় বাড়াতে কৃষির আধুনিকায়ন করতে হবে  বলে মন্তব্য করে কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বলেছেন, ‘কৃষিই এ দেশের কৃষ্টি। অর্থনীতির প্রধান হাতিয়ার। বেশি করে কৃষিজাত পণ্য বিদেশে রপ্তানি করতে হবে।’

বুধবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে ‘লঞ্চিং শিমনি অব ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচার ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান্ট (সিএসএআইপি) অ্যান্ড লাইভস্টোক অ্যান্ড ডেইরি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (এলডিডিপি)’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

এ সময় কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এস ডিজি) অর্জনের ক্ষেত্রে পুষ্টিমানের বিষয়টি আগে আসে। পুষ্টির অন্যতম প্রধান উৎস হলো মাছ, মাংস, দুধ, ডিম। আমাদের মাথাপিছু আয় দিয়ে সবার পক্ষে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা সম্ভব নয়। শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্থাপনের মাধ্যমে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে হবে। এর পাশাপাশি উদ্যোক্তা সৃষ্টি করতে হবে। বর্তমানে বাংলাদেশে বার্ষিক মাথাপিছু দুধ ব্যবহারের পরিমাণ ২২ কেজি। অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশে ৫৫ কেজি’।

‌‘খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) পরামর্শ অনুযায়ী মাথাপিছু দুধ গ্রহণের হার হওয়া উচিত ৯০ কেজি। তাদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দুধের ব্যবহারে এখনো ৫১ শতাংশ ঘাটতি রয়েছে। ২০১০ সালে বাংলাদেশের দুধ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল মাত্র ২৩ লাখ লিটার। ২০১৮ সালে তা বেড়ে ৯৪ লাখ লিটারে দাঁড়িয়েছে’।

‌‘এছাড়া আমিষের চাহিদা মেটাতে মাছ, মাংস ও ডিম উৎপাদনে প্রচুর সফলতা এসেছে। এই তিন সেক্টরের মধ্যে পোলট্রি শিল্প এগিয়ে আছে। জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে বিরূপ প্রভাব পড়ে জীববৈচিত্র্যে। নষ্ট হয় কৃষি ও শস্যক্ষেত। নানা ধরনের অসুবিধায় পড়ে পশু-পাখি, হাঁস-মুরগি। এ হিসাবে পোলট্রি শিল্পে প্রভাব পড়া অস্বাভাবিক কিছু নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘গ্রামীণ অর্থনীতির মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতির ভিত্তি গড়ে ওঠে, তাই এর উন্নয়নের দিকে নজর দিতে হবে। পরিবর্তিত জলবায়ুতে তথা প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট কারণে আমাদের দেশের মৎস্য সম্পদ সংকুচিত হচ্ছে, বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রজনন সুবিধা, বৃদ্ধি পাচ্ছে মৃত্যুহার, উৎপাদন কমছে, এমনকি বিলুপ্তির দিকে যাচ্ছে। উন্নত দেশগুলো যতই পরিবেশ রক্ষার কথা বলুক না কেন তারা তাদের শিল্পায়নের স্বার্থে গ্রিন হাউজ গ্যাস নির্গমন কখনো কমাবে না। জলবায়ুর ক্রমাগত পরিবর্তনের লাগামকে টেনে ধরতে না পারলে কৃষির উৎপাদন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং সারা বিশ্বে খাদ্য সংকট প্রকট আকার ধারণ করবে। আমাদেরকে শুধু বর্তমান নিয়ে থাকলে হবে না, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা ভাবতে হবে।’

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রইছুল আলম মণ্ডলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খসরু, যুগ্ম সচিব  মো. তৌফিক আরিফ, বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর দানদন চেন, দক্ষিণ এশিয়ার টেকসই উন্নয়নের আঞ্চলিক পরিচালক জন রুমি প্রমুখ।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর