মাঝপথে হাঁটার আর সময় নেই

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, নিরপেক্ষতা বলে কিছু নেই। নিরপেক্ষতার কথা বলে মাঝপথে হাঁটার আর সময় নেই। সবাইকে বস্তুনিষ্ঠ হতে হবে। সত্য ও মিথ্যার পার্থক্য নির্ণয় করে সত্যের পক্ষাবলম্বন করতে হবে। তিনদিনব্যাপী ‘গ্লোবাল ইয়ূথ এন্টারপ্রেনারস সামিট-২০১৫ বাংলাদেশ’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আজ শুক্রবার এসব কথা বলেন তিনি। রাজধানীর ফার্মগেট কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডেফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান সবুর খান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি হোসেন খালেদ ও নেপালের ‘গ্লোবাল খবর ডট কম’ এর সিইও আশীষ ঠাকুর। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আয়োজক ধ্রুবতারা ইয়ূথ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের (ডিওয়াইডিএফ) নির্বাহী পরিচালক অমিয় প্রাপন চক্রবর্তী। সামিটে অংশ নেয়া ২৭টি দেশের তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধেও দু’টি পক্ষ ছিল। বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। তখন মুষ্টিমেয় ব্যক্তি ছাড়া আপামর জনতা বাংলাদেশের পক্ষ নিয়েছিল। তিনি বলেন, যারা পাকিস্তানের পক্ষ নিয়ে মাতৃভূমির বিরুদ্ধাচারণ, মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা, মা-বোনদের ইজ্জত হানি ও হত্যা, বাড়িঘর-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিকাণ্ড ও লুটপাটের মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে, শেখ হাসিনার সরকার তাদেরই বিচার করছেন। এসময় তিনি দেশি-বিদেশি তরুণ উদ্যোক্তাদের অসাম্প্রদায়িক চেতনা ধারণ করে বেড়ে ওঠার আহবান জানান। ইনু বলেন, ধর্মের বাছ-বিচার না করে নিজেদের মানুষ হিসেবে তৈরি করবেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু অসাম্প্রদায়িক চেতনার এক মহান নেতা ছিলেন। বঙ্গবন্ধুরই এক উদ্বৃতি দিয়ে তিনি বলেন, আমি প্রথমে মানুষ, তারপর বাঙালি এবং শেষে মুসলিম। তথ্যমন্ত্রী বলেন, জীবনের শুরুতে ব্যর্থতা আসবে, তবে দমে গেলে চলবে না। কৃতকার্য হতে হলে ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। ভবিষ্যৎ গড়তে হলে স্বপ্ন দেখতে হবে। সামনের দিকে দৃষ্টি রেখে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে কর্ম সম্পাদন করতে হবে। ইনু বলেন, আপনারা এমন এক সময় কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করছেন, যখন সারা পৃথিবীকে সন্ত্রাসবাদ ও সাইবার অপরাধ ঘিরে ধরেছে। এ থেকে নিজেকে এবং নিজের রাষ্ট্রকে নিরাপদ রাখতে সতর্ক থাকতে হবে। বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, শ্রীলংকা প্রভৃতি উন্নয়নশীল দেশের তরুণদের উদ্দেশ্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, নিজের দেশকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি প্রভৃতি উন্নত দেশের তালিকায় দেখতে চাইলে আপনাদেরই সে দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে। বিশ্বব্যাপী ইন্ডাস্ট্রি ও তথ্য-প্রযুক্তির ক্ষেত্রে যে বিপ্লব ঘটছে, তার সঙ্গে যুক্ত হতে হবে। ইনু বলেন, বর্তমান সরকার ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করার লক্ষ্যে তরুণ প্রজন্মকে তৈরি করছে। জাতিসংঘ ঘোষণা দিয়েছে, বাংলাদেশ নিম্নমধ্যম আয়ের দেশের কাতারে প্রবেশ করেছে। তিনদিনব্যাপী এ সামিটে ২৭টি দেশের ১০০ বিদেশি ডেলিগেটসহ দেশীয় প্রায় ৩শ’ ডেলিগেট অংশগ্রহণ করছে। অংশগ্রহণকারী উল্লেখযোগ্য দেশগুলো হলো বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলংকা, নেপাল, ভূটান, পাকিস্তান, মালদ্বীপ, আফগানিস্তান, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, বেলজিয়াম, পেরু, জর্ডান ও অফ্রিকার কয়েকটি দেশ। সামিটে যে ৮টি প্যানেলের ওপর সবার মনোযোগ থাকবে সেগুলো হচ্ছে- এন্টারপ্রেনারশিপ, লিডারশিপ, আইসিটি অ্যান্ড ইনোভেশন, হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড গুড গভার্নেন্স, গ্লোবাল ইকোনোমি অ্যান্ড রিনিউবল এনার্জি, এনভায়রমেন্ট অ্যান্ড ক্লাইমেট চেঞ্জ, গ্লোবাল সিটিজেটশিপ অ্যান্ড ফিউচার ওয়ার্ল্ড এবং মিডিয়া অ্যান্ড এডুকেশন। আগামী রোববার সামিটের সমাপনী দিনে শ্রেষ্ঠ ১০ উদ্যোক্তাকে অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হবে। সমাপনী দিনে সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর প্রধান অতিথি থাকবেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর