কর্মকাণ্ডের দাঁতভাঙা জবাব দেয়া হবে : ওবায়দুল কাদের

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আদালতের ভেতর বিএনপির ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ ক্ষমার অযোগ্য বলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি আন্দোলনে ব্যর্থ, নির্বাচনে ব্যর্থ। তারা এখন অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়। তিনি বলেন, আন্দোলনের নামে নৈরাজ্যের চেষ্টা রুখে দেয়া হবে। তাদের অরাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের দাঁতভাঙা জবাব দেয়া হবে।

রাজধানীর ধানমণ্ডির আওয়ামী লীগ সভা পতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে শুক্রবার জাতীয় কাউন্সিলের দফতর উপকমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় কাউন্সিলে সভাপতি পদে কোনো পরিবর্তন আসছে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, একটা পদে কোনো পরিবর্তন আসবে না। সেটা হচ্ছে আমাদের পার্টির সভাপতি। আমাদের সভাপতি দেশরত্ন শেখ হাসিনা। তিনি ছাড়া পার্টিতে আমরা কেউই অপরিহার্য নই। তিনি এখনও আমাদের জন্য প্রাসঙ্গিক, অপরিহার্য। তৃণমূল পর্যন্ত সবাই তার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। আর সাধারণ সম্পাদক পদে ‘পারসোনালি আই অ্যাম নট ইন্টারেস্টেড’।

ওবায়দুল কাদের বলেন, এর পরের পদটা (সাধারণ সম্পাদক) কাউন্সিলদের মাইন্ড সেট করে দেয়। সেটাও তিনি (শেখ হাসিনা) ভালো করে জানেন। আর দল কীভাবে চলবে, কাকে দিয়ে চলবে সেটাও তিনি জানেন। তিনি যেটা ভালো মনে করবেন সেটাই করবেন। পরিবর্তন করলেও তার ইচ্ছা, তিনি ডিসাইড করবেন। এ ব্যাপারে কারও কোনো কথা থাকবে না। পরিবর্তন হলেও আমরা স্বাগত জানাব, আর তিনি যদি রাখেন সেটাও তার ইচ্ছা।

আদালত প্রাঙ্গণে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের হট্টগোলের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আদালত প্রাঙ্গণে তারা রণাঙ্গন সৃষ্টি করেছে, এটা সবাই দেখেছে। এটা নিয়ে শেষ পর্যন্ত প্রধান বিচারপতিকে কমেন্ট করতে হয়েছে- ‘আমি এমন ঘটনা কখনও দেখিনি। বাড়াবাড়িরও একটা সীমা আছে।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এটা কোনো রাজনৈতিক মামলা নয় যে রাজনৈতিকভাবে সরকার মুক্তি দিতে পারে। এটা হল দুর্নীতির মামলা। দুর্নীতির মামলায় সরকারের কিছু করার নেই। এটা আদালতের বিষয়। তিনি বলেন, তারা কথায় কথায় বলে রাজনৈতিকভাবে আটকে রাখা হয়েছে, বন্দি করে রাখা হয়েছে। এগুলো মিথ্যা এবং সত্যের অপলাপ। বিষয়টি তারা জেনেশুনেই বলছে। যদি রাজনৈতিক মামলা হতো তখন আমরা বিষয়টি ভেবে দেখতাম। এটা দুর্নীতির মামলা।

ওবায়দুল কাদের বলেন, তাদের দগদগে ব্যর্থতা, আন্দোলনে, নির্বাচনে- এই ব্যর্থতার কোনো সীমা নেই। তারা রাজনীতিতেও ব্যর্থ, সাংগঠনিকভাবেও ব্যর্থ। দলের নেতৃত্বের ডাক আসে টেমস নদীর তীর থেকে। বাংলাদেশের বাস্তবতার ক্ষেত্রে তাদের নেতৃত্বের নির্দেশের কোনো মিল নেই।

তিনি বলেন, তাদের দলের একেকজন একেক কথা বলেন। কেউ বলেন দুর্বার আন্দোলন ছাড়া মুক্তি নেই, আবার কেউ বলেন আন্দোলন করার সময় এখনও হয়নি। তাদের নেতৃত্বের মধ্যে খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে নানান কথা। আমাদের এখানে কি করার আছে।

বিএনপি ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চাইছে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার দুরভিসন্ধি ছাড়া তাদের আর কিছু করার নেই। তিনি বলেন, বিএনপি বারবার আন্দোলনের ডাক দিচ্ছে, পাবলিকের সাড়া পাচ্ছে না। গণআন্দোলন বলেন, গণঅভ্যুত্থান বলেন, পাবলিককে ছাড়া তো আর হয় না। জনগণের পক্ষ থেকে ‘নো রেসপন্স’।

সেতুমন্ত্রী বলেন, তারা এখন আদালত প্রাঙ্গণে, আদালতের ভেতরে যে হট্টগোল সৃষ্টি করেছে, এটাই এখন তাদের রাজনীতি। তারা এখন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে, তারা এখন উসকানি দেবে। দ্রব্যমূল্য অস্বাভাবিক করার জন্য তাদেরও একটা কারসাজি আছে- সেটাও আমরা তদন্ত করছি। তারা প্রতিটি ঘটনায় ইন্ধন দিচ্ছে। তিনি বলেন, আমরাও প্রস্তুত আছি। সাংগঠনিকভাবে এই মুহূর্তে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ খুবই শক্তিশালী সুসংগঠিত সুশৃঙ্খল পার্টি।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য পিযুষকান্তি ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, উপদফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া, কার্যনির্বাহী সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন, দফতর উপকমিটির সদস্য খন্দকার তারেক রায়হান প্রমুখ।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর