প্রকৃতির রূপে প্যারাডাইসের স্পর্শ

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সুইডিশ টেনিস লিগ খেলা চলছে। রবিবারে মালমোর সঙ্গে সলনার খেলা ছিল ( Malmö এবং Solna সুইডেনের দুটি শহরের নাম)। আমার ছেলে জনাথান সলনার হয়ে খেলছে।

সে খেলা শেষ করে মালমো থেকে সরাসরি কোপেনহেগেন হয়ে ফ্রাঙ্কফ্রুর্টে এসেছে। আমি স্টকহোম ব্রোম্মাপ্লান থেকে প্রথমে ব্রুসেলস পরে ফ্রাঙ্কফ্রুর্টে এসেছ। এরপর গাড়ি ভাড়া করে জনাথান এবং আমি দুই ঘন্টা ড্রাইভ করে এসেছি সারেগুয়েমিনেসে (Saareguemines)। সারেগুয়েমিনেস ফ্রান্সের গ্রান্ড ইস্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ রিজিওনের মোসেল (Moselle) ডিপার্টমেন্টের একটি কমুন (Commune)। এখানে খেলবে জনাথান এটিপি ফিউচার টেনিস ট্যুর্নামেন্ট। ফ্রান্সের সারেগুয়েমিনেসের যে হোটেলে খেলোয়াড়দের থাকার ব্যবস্থা করেছে সে হোটেলের দাম, দুরত্ব এবং কোয়ালিটির দিক দিয়ে বিবেচনা করে দেখলাম সারব্রুকেনের (Saarbrücken) হোটেল হলিডে ইন এক্সপ্রেস ভালো, তাই এখানেই থেকে গেলাম।

সারব্রুকেন হলো জার্মানির সারল্যান্ড প্রশাসনিক, বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। এখান থেকে টেনিসে কোর্টে যেতে লাগে ১৫ মিনিট। মজার ব্যাপার তা হলো আছি জার্মানিতে আর খেলা হচ্ছে ফ্রান্সে। সারাদিন শুধু রিমঝিম করে বৃষ্টি হয়েছে। এখানের টেনিস কোর্টগুলো ঠান্ডা সুইডেনের তুলনায়, কঠিন অবস্থা সবার জন্য। সন্ধ্যার প্রাক্টিস সেরে হোটেলে এসে ফ্রেশ হয়ে ডিনারের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লাম।

রাতের ডিনার মনপুত হলো না। হোটেলে এসে সোজা ঘুমিয়ে গেলাম। সকালে জনাথানের ম্যাচ রয়েছে, খেলবে ফ্রান্সের খেলোয়াড়ের সঙ্গে। রাতের ঘুম ভালোই হয়েছে। ব্রেকফাস্ট সেরে রওনা দিলাম টেনিস কোর্টের উদ্দেশ্যে। জনাথানের ওয়ার্মিং আপের ফাঁকে জার্মান এবং ফ্রান্সের বর্ডারে কিছুক্ষণ সময় কাটালাম। দুটো ভিন্ন দেশ অথচ কত কাছাকাছি। ফিরে এলাম টেনিস কোর্টে। খেলা শুরু হয়ে গেল। বেশ নার্ভাস ছিলাম প্রথমে। কারণ বোঝা কঠিন ছিল কি হবে। শেষে জনাথান জিতে গেলো। খেলা শেষে লাঞ্চ টেনিস ক্লাবে সেরে দুইজনে বেরিয়ে পড়লাম সাইটসিইংয়ের উদ্দেশ্যে। সার (Saar) নদীর দুই পাশে গড়ে উঠেছে সুন্দর সুন্দর বাড়িঘর।

মোসেল এবং কোবলেন্জ নদীর মিল হয়েছে সার নদীর সঙ্গে এবং এ নদী বয়ে চলেছে ফ্রান্স এবং জার্মানির মধ্যে দিয়ে।

মোসেল নদীর পাড় দিয়ে এরা আঙ্গুরের চাষ করে এবং এই আঙ্গুর দিয়ে এরা তৈরি করে নানা ধরনের ওয়াইন। নদীর পাশ দিয়ে চলতে চোখে পড়ে মাঝেমধ্যে কিছুটা পাহাড়ি এলাকা, সব মিলে এক চমৎকার দৃশ্য। তবে এখন দিনের আলো দেখা যায় খুব কম সময়ের জন্য।

শরতের শেষের দিকে গাছপালা তার সৌন্দর্য হারাতে শুরু করেছে। বেশ তাড়াতাড়ি অন্ধকার হয়ে যায় এবং শীতের কারণে যেমন ঠান্ডা তেমন ন্যাস্টি ওয়েদার। তাই মনের মত করে উপভোগ করা হলো না এবার সব কিছু। লেখার সঙ্গে সামারের একটি ছবি দিলাম। দেখলে অনুভব করতে সহজ হবে নিখিলের কত রূপ কত শোভা।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর