পর্যটকদের দৃষ্টি কাড়ছে অপূর্ব শিমুল বাগান

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বসন্তে নয়, মাঘেই ফুটেছে শিমুল ফুল। ডাকছে কোকিল। রক্তরাঙা শিমুল যদি একটি গাছেও ফোটে সেটি তাহিরপুর সীমান্তবর্তী যাদুকাটা নদীর তীরে শিমুল বাগানে। ডালে ডালে ফুটে থাকা ফুল মন কে রাঙিয়ে তুলছে এবার শীত মৌসুমেই। রক্তরাঙা ফুল চোখে পড়ছে এবার অনেক দূর থেকেই। এবার বসন্তে বাউল মন রাঙাবে না। হয়তো বসন্তের আগেই ঝরে পড়বে মুকুল। এমনটাই দেখা গেল যাদুকাটা নদীর তীরে শিমুল বাগানে হাজারো শিমুলের ডালে ডালে।

ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। ঋতু বৈচিত্র্যে এখন শীতকাল। বসন্তের এখনো ঢেড় মাস বাকি, কিন্তু যাদুকাটার তীরে সারি সারি শিমুল গাছে গাছে ফুটে থাকা লাল পাপড়ি দেখে এখানে আসা পর্যটকদের মনে আনন্দের ঢেউ উঠেছে। মায়াময় যাদুকাটার তীরে জমে উঠেছে শিমুল মায়ার খেলা। লাল ফুলের গালিচা দেখতে অসংখ্য ভ্রমণ পিপাসু আসছেন এই শিমুল বাগানে। প্রতি বছর ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে গাছে গাছে ফুল ফুটতে শুরু করলেও এবার ফুল ফুটেছে মধ্য জানুয়ারি থেকেই। এমনটাই দেখা গেল শিমুল বাগানে গিয়ে। সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে ভ্রমণে গেলে শিমুল বাগানটি না দেখলে অপূর্ণতা থেকে যায়। বছরের সব ঋতুতে ফুল না ফুটলেও এবার শীত মৌসুমে ফুলে ফুলে ভরে গেছে শিমুল বাগানে।
জানা যায়, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার একটি চমৎকার স্থানের নাম জয়নাল আবেদীন শিমুল বাগান। যাদুকাটা নদীর তীরে মানিগাঁও গ্রামের সামনে গড়ে তোলা হয়েছে তিন হাজরেরও বেশি সারিবদ্ধভাবে সাজানো শিমুল বাগানটি। প্রায় ১০০ বিঘা জমিজুড়ে শিমুল বাগানটি নিজ উদ্যোগে গড়ে তোলা হয়েছে। ২০০৩ সালে উপজেলার বাদাঘাট ইউপি চেয়ারম্যান মরহুম জয়নাল আবেদীন দেশের সবচেয়ে বড় শিমুল বাগানটি গড়ে তোলেন।
শুক্রবার ঢাকা থেকে বাগান দেখতে আসা রুমা, শারমিন ও অমিত জানান, দেশে এত বড় আর কোনো শিমুল বাগান আছে কি-না তাদের জানা নেই। তাই হাজারো শিমুল ফুলের মেলা দেখতে বাগানে ছুটে এসেছেন তারা। তাদের মতে একসঙ্গে এত গাছ, এত ফুলের দেখা এর আগে কোথাও দেখেননি।
বাগানের মালিক প্রয়াত চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীনের ছেলে রাখাব উদ্দিন জানান, এবারই প্রথম শীতকালে ফুলের মেলা বসেছে শিমুল বাগানে। এই শিমুল বাগান তার মরহুম পিতা আলহাজ জয়নাল আবেদীনকে সারা দেশের মানুষের সঙ্গে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, এখানে আসা পর্যটকদের সুবিধার জন্য দ্রুত উদ্ভোধন করা হবে শিমুল বাগান রেস্টুরেন্ট।
কিভাবে যাবেন: শিমুল বাগান দেখতে চাইলে প্রথমে ঢাকা সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড থেকে মামুন, শ্যামলী বাসে সুনামগঞ্জের প্রবেশদ্বার আবদুজ জহুর সেতুতে নামতে হবে। আপনি ইচ্ছে করলে মহাখালী থেকে এনা বাসেও সুনামগঞ্জে আসতে পারবেন। এসব নন এসি বাসে ভাড়া নেবে জনপ্রতি ৫৫০ টাকা। আবদুজ জহুর সেতু থেকে সিএনজি, মোটরসাইকেল কিংবা যেকোনো গাড়ি দিয়ে তাহিরপুর লাউড়ের গড় বাজারে এসে নামবেন। সেখান থেকে নৌকায় যাদুকাটা নদী পার হলেই শিমুল বাগান। তাছাড়া তাহিরপুর উপজেলা সদর অথবা লাউড়ের গড় বাজার থেকে এ উপজেলার উল্লেখযোগ্য স্থান বারেকটিলা, শহীদ সিরাজ লেক (নিলাদ্রী লেক), লাকমা চরা ও বিশ্ব ঐতিহ্য টাঙ্গুয়ার হাওর, হেমন্ত সময়ে মোটরসাইকেল আর বর্ষা মৌসুমে নৌকা দিয়ে ঘুরে দেখতে পারবেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর