চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি নির্বাচন মিলেমিশে থাকার পরামর্শ দিলেন অগ্রজরা

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আগামীকাল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দ্বিবার্ষিক নির্বাচন। সকাল ৯টা থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইলিয়াস কাঞ্চন।

নির্বাচন ঘিরে গত এক মাস ধরে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ নির্বাচন প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে এরই মধ্যে। তবে সবকিছু ছাপিয়ে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে বলেই অনেকের ধারণা।

সবাইকে মিলেমিশে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চলচ্চিত্রপ্রেমীরা।

রাত পোহালেই শুরু হবে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া। সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। এবারের নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ৪৪৯।

তবে নির্বাচন ঘিরে শিল্পীদের মধ্যে বিরাজ করছে নানা জল্পনা-কল্পনা। প্রবীণ শিল্পীদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন শঙ্কায়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইলিয়াস কাঞ্চন এরই মধ্যে সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করার সব ধরনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছেন। তবুও যেন শঙ্কা কাটছে না।

এ নিয়ে অনেকে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিয়েছেন কীভাবে কী করা যায়। সিনিয়র শিল্পীদের কয়েকজন যুগান্তরের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে শিল্পী সমিতির নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা প্রার্থী ও ভোটারদের উদ্দেশে পরামর্শ দিয়েছেন।

নির্বাচন প্রসঙ্গে অভিনেত্রী সুচন্দা বলেন, ‘শিল্পী সমিতির নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ যতটুকু, আমার মনে হয় তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ এ নির্বাচন ঘিরে শিল্পীদের মিলনমেলা।

উৎসবমুখর এ মেলায় উপস্থিত থাকবেন শিল্পীরা। ভোট দিতে যাবেন। পুরনোদের সঙ্গে নতুনদের দেখা হবে, সম্মিলন ঘটবে, সাংবাদিক ভাই-বন্ধুরাও থাকবেন, ভাবতে ভালোই লাগে। সে জন্য যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তাদের প্রতি আমার পরামর্শ, সবাই মিলেমিশে থাকবেন।

খুব বেশি না তো, ৯টা থেকে ৫টা পর্যন্ত নির্বাচন চলবে। এ সময়টুকুর পর সবাই সবার কাজে ব্যস্ত হয়ে যাব। তাই কোনো দলাদলি বাকবিতণ্ডা নয়, সবাই সুন্দরভাবে কালকের দিনটি কাটাবে- এটাই প্রত্যাশা।’

অভিনেত্রী শবনম বলেন, ‘আম্মাজান’-এর পর আর কোনো ছবিতে অভিনয় করিনি। বলা যায় এ অঙ্গনের বাইরে। এফডিসিতে যাওয়াই হয় না। তবে কে কেমন আছে খবর নেয়ার চেষ্টা করি। আমি মনে করি, শিল্পী সমিতির নির্বাচন একটি মিলনমেলা। আমি সুস্থ থাকলে এ মিলনমেলায় অংশ নেব। শিল্পী ভাইবোনরা যদি ভালো থাকে এবং আনন্দ-ফুর্তি করে শুনতেও ভালো লাগে। তাই আমি মিশা-মৌসুমী ও জায়েদকে বলব তোমরা তোমরাই। কেউ কারও দূরের নয়। আগামী দিনটি সুন্দরভাবে কাটাবে। তোমরা ভাইবোনের মতো। কেউ হারবে, আবার হয়তো কয়েকজন দায়িত্ব নেবে- এটাই তো! আমি সবার জন্য দোয়া করি।’

অভিনেতা ও সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুক বলেন, ‘আগামী দিনের নির্বাচন যেন স্পোটর্স ডে’র মতো হয়, এটা প্রত্যাশা করি। একটি খেলায় সারা দিন দু’পক্ষ ব্যস্ত থাকে। দিন শেষে ফলাফল পেয়ে যে যার মতো ঘরে ফিরে যাবে। আগামীকাল ফলাফল পাওয়ার পর ঘরে ফেরার আগে আনন্দ হবে। কিন্তু কোনো দলাদলি নয়, এটাই আমি চাইব। মিশা-মৌসুমী-জায়েদ সবাই আমার লোক। কেউ আমার পর নয়। আর সভাপতি কিংবা সম্পাদক হওয়া মানে চর দখল নয়। তাই সবাই সুন্দরভাবে নির্বাচনের দিন কাটাবে- এটাই আমি চাই।’

খ্যাতিমান গীতিকার ও চলচ্চিত্রকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার বলেন, ‘নির্বাচনে সভাপতি কিংবা সম্পাদক হওয়া মানে আলাদা হয়ে যাওয়া নয়। কাল যে ভোট দেবেন, যিনি নির্বাচন কমিশনার, যিনি প্রার্থী সবাই শিল্পী। আমার প্রশ্ন হচ্ছে তোমরা কে, কার সঙ্গে কিসের জন্য বাকবিতণ্ডা করছ?

যিনি সভাপতি হবেন তিনিই তো শিল্পীর দুঃসময় দৌড়ে যাবেন। এ দৌড় যেন নির্বাচনের দিনে কোনো কারণের জন্য বন্ধ না হয়, এটাই আমি চাই। আমাদের বয়স হয়েছে। যে কোনো দিন চলে যাব। তোমাদের দুষ্ট প্রতিযোগিতা বা কারও কান্না দেখে চলে যেতে চাই না। সবাই ভালোভাবে আগামীকাল দিনটি পার করবে, এটাই আমি চাই।’

এক সময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক শাকিল খান বলেন, ‘পদ কোনো বিষয় নয়। আমাদের পরিচয় আমরা শিল্পী। এ বিষয়টি মাথায় রেখে আগামীকাল আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখলে ভোট দিতে যাব। আমার চাওয়া যারা এবার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন সবাই কোনো ধরনের বিভেদ বা ঝামেলা না করে স্বাভাবিক থাকবেন। পদের জন্য শিল্পী-শিল্পী বাকবিতণ্ডা করলে সাধারণ মানুষ হাসাহাসি করবে। এ বিষয়টি সবার মাথায় রাখতে হবে। আমি আশা করছি, আগামীকাল সুন্দর একটি দিন কাটবে বিএফডিসিতে।’

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর