কন্যাশিশুর জীবন ভালো হলে দেশ উন্নত হবে

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কন্যাশিশুর অগ্রযাত্রা, দেশের জন্য নতুন মাত্রা’- এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি ও জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের যৌথ উদ্যোগে সম্প্রতি উদযাপিত হয় আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস-২০১৯।

২০০০ সালে ফোরামের উদ্যোগে জাতীয় কন্যাশিশু দিবসের সূচনা হয়। ২০১২ সালে জাতিসংঘ কর্তৃক আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস ঘোষিত হয়। আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস হিসেবে ঘোষিত হওয়ার পেছনে বাংলাদেশের অবদান অনেক বেশি। আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস উপলক্ষে বিশেষজ্ঞরা যা বললেন-

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯৭৪ সালে শিশু আইন প্রণয়ন করেছেন। এর ১৫ বছর পর ১৯৮৯ সালে জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ প্রণয়ন করে, যা ’৯০ সালে বাংলাদেশ অনুস্বাক্ষর করে। আমাদের সরকার শিশুবান্ধব সরকার, কন্যাবান্ধব সরকার।

সরকার ২০১১ সালে জাতীয় শিশুনীতি এবং ২০১৩ সালে শিশু আইন প্রণয়ন করে। এমনকি বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা প্রথম শিশু বাজেট প্রণয়ন করেছেন।

কন্যাশিশুর জীবন ভালো থাকলে দেশ উন্নত হবে। দারিদ্র্য বিমোচনের কার্যকর পদক্ষেপ হল কন্যাশিশুর জন্য বিনিয়োগ। সরকার কন্যাশিশুর অগ্রযাত্রার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। কন্যাশিশুর অগ্রযাত্রায় বাল্যবিয়ে একটি প্রধান বাধা। সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ করব।

বাল্যবিয়ে প্রতিরোধের মাধ্যমে কন্যাশিশুর সুরক্ষা নিশ্চিত করব। কন্যাশিশুর সুরক্ষা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সহায়তা করবে।

কন্যাশিশুদের জন্য আলাদা একটি দিবস রাখার উদ্দেশ্য হল পরিবার থেকে বৈষম্য নিরসন করা। কন্যাশিশুদের প্রতি বৈষম্যের প্রধান কারণগুলো হল দারিদ্র্য, বাল্যবিয়ে এবং সমাজের অসচেতনতা। এসব সমস্যা দূর করতে সরকার কাজ করছে। অভিভাবকরা নিজেদের কন্যাকে ভালো কাজে হ্যাঁ বলতে শেখাবেন এবং মন্দ অথবা যেসব কাজে তাদের ক্ষতি হয় সেটাকে না বলতে শেখার সাহস জোগাবেন।

পল্লীকবি জসীমউদ্দীনের ‘আসমানী’ কবিতার আসমানী স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল কিনা আমরা জানি না। কত আসমানী অশিক্ষা, বাল্যবিয়ে, যৌতুকের শিকার হয়েছে সেটা আমরা অনুমান করতে পারি। কিন্তু আজকে আমাদের মেয়েরা অনেক এগিয়েছে। মেয়েরা সমাজের সর্বক্ষেত্রে আজ এগিয়ে যাচ্ছে। সরকার মেয়েদের অগ্রযাত্রায় নানা পদক্ষেপ নিচ্ছেন। এসব পদক্ষেপের ফলে আমাদের মেয়েরা আরও এগিয়ে যাবে।

 

‘কন্যাশিশুর অগ্রযাত্রা, দেশের জন্য নতুন মাত্রা’- এই স্লোগানই বলে দিচ্ছে, অগ্রযাত্রা হচ্ছে, নতুন মাত্রা নিয়ে আসছে। মেয়েরা অগ্রযাত্রার সুযোগ পেলে দক্ষ হতে পারে। নারীরা হচ্ছেন দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক। নারীরা যেমন দেশের মানবসম্পদ কন্যারাও তেমনই মানবসম্পদ। তাই কন্যাশিশুদের উন্নতিতে বিশেষ নজর দিতে হবে। বাল্যবিয়ে কন্যাশিশুদের অগ্রযাত্রায় একটি প্রধান প্রতিবন্ধক। বাল্যবিয়ে বন্ধের জন্য সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন, এ উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে

মেয়েদের সম্পর্কে আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে, তাহলে কন্যাশিশুদের জন্য আলাদা করে কোনো দিবস করার প্রয়োজন হবে না।

 

শতবর্ষ আগে নারী ও কন্যাশিশুদের জন্য শিক্ষার আলোকবর্তিকা হাতে নিয়ে রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন বলেছিলেন, ‘কন্যাগুলিকে সুশিক্ষিতা করিয়া কার্য্যক্ষেত্রে ছাড়িয়া দাও, ওরা নিজেরাই নিজেদের অন্ন-বস্ত্র উপার্জন করিবে।’ মহীয়সী এই নারী কন্যাশিশুদের নিয়ে আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সর্বপ্রথম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে জাতীয় শিশুনীতি প্রণয়ন করেছিলেন।

এরই ধারাবাহিকতায় আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কন্যাশিশুর অগ্রগতির লক্ষ্যে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করছেন। এত সব অগ্রগতি সত্ত্বেও কন্যাশিশুদের বিভিন্ন অধিকার থেকে বঞ্চিত রাখার নেতিবাচক চিত্রও আমরা দেখতে পাই। সবাই দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ এ চিত্র আমরা বদলাব, বদলে দেয়াই আমাদের অন্যতম অগ্রাধিকার।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর