হাওর বার্তা ডেস্কঃ যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী তার পদ থেকে বাদ পড়বেন নাকি কোনো অভিযোগে গ্রেপ্তার হবেন, তা নির্ধারিত হবে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে আগামীকাল (রোববার) গণভবনে যুবলীগ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক। এমনটাই জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের কয়েকজন শীর্ষ নেতা। এছাড়া ছাত্রলীগের পর যুবলীগের জন্য বয়সসীমা আসতে পারে বলেও জানান তারা।
দলীয় বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুবলীগের চেয়ারম্যানের প্রতি ক্ষুব্ধ রয়েছেন। রোবরারের বৈঠকে তাকে এবং যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ভোলা-০৩ আসনের সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনকে গণভবনে দেখতে চান না।
এমন পরিস্থিতিতে যুবলীগের চেয়ারম্যানের ভাগ্যে কী ঘটতে যাচ্ছে তা জানার জন্য অপেক্ষা করতে হতে আরও কিছুসময়। শনিবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, দেশের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা দপ্তর সম্পাদক কাজী আনিস বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ নিয়ে কেন্দ্রে জমা দিচ্ছেন। অর্থের বিনিময়ে কমিটি গঠনসহ নানা সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে ওইসব চিঠিতে। কাজী আনিসের নানা অপকর্ম যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর সমর্থনে হয়েছে বলেও অনেকে জানিয়েছেন।
ওইসব অভিযোগগুলো রবিবারের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনে উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য।
রোববারের বৈঠকের এজেন্ডা সম্পর্কে জানতে চাইলে যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ বলেন: আমাদের আসন্ন কংগ্রেসকে সফল করতে আমরা নেত্রীর কাছে দিকনির্দেশনা চাইবো। সম্মেলন প্রস্তুতির জন্য বেশ কিছু কমিটির অনুমোদন চাওয়া হবে। এই সভায় বয়সসীমার বিষয়টিও আলোচিত হতে পারে বলে জানান তিনি। প্রাথমিকভাবে যুবলীগ করার জন্য বয়সসীমা সর্বোচ্চ ৪৫ আলোচনায় রয়েছে।
এছাড়া ওই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী কোনো কোনো বিতর্কিত নেতাকে গণভবনে না নেওয়ার জন্য নির্দেশনাও দিয়েছেন বলে জানান যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক। রোববার বৈঠকে কারা কারা যাচ্ছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন: এখন পর্যন্ত যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক এবং প্রেসিডিয়াম সদস্যকের বৈঠকে যাওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যরাও বৈঠকে উপস্থিত থাকার দাবি জানিয়েছে। এখন পর্যন্ত তাদের বিষয়টি বিবেচনাধীন।
গতকাল শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে বনানী কবরস্থানে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যুবলীগ চেয়ারম্যানের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবার এড়িয়ে গিয়েছেন । তিনি বলেছিলেন: যুবলীগের সম্মেলন সফল করতে বৈঠক ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এ বৈঠক গণভবনে ডাকা হয়েছে। বৈঠকটা যদি পার্টি অফিসে ডাকা হতো, আমি বিস্তারিত জানাতে পারতাম কেন ডাকা হয়নি। রবিবারের বৈঠকের পর হয়তো এ প্রশ্নের জবাব পাওয়া যাবে।
রাজধানীতে ক্যাসিনো পরিচালনা, টেন্ডারবাজী, অর্থের বিনিময়ে পদ দেওয়াসহ যুবলীগের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগের প্রেক্ষিতে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন থেকে ফিরে গত ২ অক্টোবর গণভবনে আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে দলের ২১তম জাতীয় কাউন্সিলের আগেই সম্মেলন করার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
পরদিন আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে সহযোগী সংগঠনগুলোকে সম্মেলনের জন্য প্রস্তুতি নিতে চিঠি দেওয়া হয়।
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তিন বছর পরপর যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও সর্বশেষ ২০১২ সালের ১৪ জুলাই যুবলীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হন ওমর ফারুক চৌধুরী এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন হারুনুর রশীদ।
আগামী ২৩ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে যুবলীগের ৭ম কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হবে।