এখনো দাম কমেনি পেঁয়াজের,মরিচের দামের চড়াই

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শীতের আগমনী বার্তা নিয়ে এসেছে হেমন্ত। দেশের বিভিন্ন স্থানে কিছুটা শীত অনুভূত হলেও। রাজধানীতে এখনো শীতের কোন প্রভাব পড়েনি। তবে বাজারগুলোকে রাঙিয়ে তুলেছে শীতের সবজি। বাজারে শীতের নতুন সবজি আসলেও দাম অনেকটাই আকাশছোঁয়া। আর পেঁয়াজ-মরিচের দামের চড়াই-উতরাইয়ের নাকাল রাজধানীবাসী।

আজ শুক্রবার রাজধানীর মিরপুর, শেওড়াপাড়া, পিরেরবাগ, কল্যাণপুর, আগারগাঁও ও কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, শীতের সবজিতে বাহারি রঙে সেজেছে দোকানগুলো। শীতকালীন সবজির তালিকায় বাজারে উঠেছে ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, শিম, বরবটি, লাউ, ক্ষীরা, পালংশাক। নতুন সবজি দোকানগুলোর চেহারাই বদলে দিয়েছে।

গত এক দেড় মাস থেকে বাজারে টমেটো, শিম ও গাজর বাজারে অবস্থান করলেও দাম কমছে না সবজিগুলোর। এখনো বাজারে টমেটো ও শিম বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি। আর গাজর বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি। শীতের সবজি ফুলকপি ও বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ৩০ থেকে ৪০ টাকা। আর মুলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি।

এদিকে গত সপ্তাহের থেকে কিছুটা দাম বেড়ে বাজারে বরবটি, ঢেঁড়স, কাঁকরোল বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি। পাশাপাশি পটল ও ঝিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে একই দামে। তবে বেগুন, করলা, উস্তা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি। আর একটু কম দামের তালিকায় রয়েছে মিষ্টি কুমড়া ও পেঁপে। বাজারে প্রতি কেজি মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি। আর পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা কেজি।

এদিকে পেঁয়াজের অবস্থা হয়েছে এরকম যে, ‘যতই চাপাচাপি করো কোন লাভ নাই’। পেঁয়াজের দাম কমাতে সরকারের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেয়া হলেও কোনটাই যেন ফলপ্রসূ হচ্ছে না। বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানিতে এলসি খোলা হলেও তা থেকে কোন ফল আসছে না।

গত ২৯ সেপ্টেম্বর ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিলে বেড়ে যায় পেঁয়াজের দাম। দুই দিনেই পেঁয়াজের দাম বেড়ে হয় ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি। মাঝে মিয়ানমার ও মিশর থেকে কিছু পেঁয়াজ আমদানির ফলে কিছুটা দাম কমলেও আমদানি করা পেঁয়াজ ভালো পাননি ব্যবসায়ীরা। ফলে অন্যান্য দেশে এলসি খোলা হলেও পেঁয়াজ আমদানিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না তারা।

ঢাকার খুচরা বাজারে আজ দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে ভারতীয় পেঁয়াজের প্রতি কেজির দাম ছিল ৮৫ থেকে ৯৫ টাকা। মিয়ানমারের পেঁয়াজও ৮০-৯০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। গতকাল পুরান ঢাকার শ্যামবাজারে মিয়ানমারের পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৭৫ থেকে ৭৮ টাকায় বিক্রি হয়। আর দেশি কিং জাত ৭৮ থেকে ৮২ এবং দেশি ৮৫ থেকে ৮৮ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে।

শ্যামবাজারের পেঁয়াজ আমদানিকারক মোশাররফ সিকদার বলেন, পেঁয়াজ নিয়ে সরকার বেশ আন্তরিক। আমরা এলসি খুলে যাচ্ছি। তবে মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর বন্দরে পেঁয়াজ পড়ে থাকে ৭ থেকে ৮ দিন। বিশেষ ব্যবস্থায় ওই দেশের সরকারকে রাজি করিয়ে এই সময়টা কমিয়ে আনা সম্ভব।

এদিকে আজ হঠাৎ করেই বেড়েছে কাঁচা মরিচ ও আলুর দাম। সকালে কারওয়ান বাজারে গিয়ে দেখা যায় প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১০০  টাকা কেজি। যা গত সপ্তাহেও বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। আর বাজারে কেজিপ্রতি আলুর দাম বেড়েছে ৫ থেকে ৮ টাকা। যে আলু গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ১৮ থেকে ২২ টাকা। তা আজ বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ২৮ টাকা।

এদিকে মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৫০ টাকা, শিং মাছ ৪০০-৭০০ টাকা, মাগুর ১৮০-২০০ টাকা, সুরমা ৪৫০ টাকা, পাঙ্গাস ১৩০ টাকা, রুই ২৩০-৩০০ টাকা, কাতলা ২৫০-৩০০ টাকা, কোরাল ৪৫০-৮০০ টাকা, ছোট ইলিশ ৬৫০-৮০০ টাকা, বড় ইলিশ ১২০০-১৫০০ টাকা এবং প্রতি কেজি রূপচাঁদা বিক্রি হচ্ছে ৬০০-১২০০ টাকায়।

এদিকে বেড়েছে মুরগির দামও। ব্রয়লার মুরগির ১৩০-১৪০ টাকা, কক মুরগি ২৪০-২৫০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ফার্মের ডিম প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১১৫ টাকায়। এছাড়া প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৫৭০ টাকা। আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর