শিক্ষকদের আন্দোলনে নামানোর পাঁয়তারা করছে বিএনপি-জামায়াত

বিএনপি-জামায়াতের কিছু ঘাপটি মেরে থাকা প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারী ২০১৩ সালের বিধিমালার ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছে দাবি করে জাতীয়করণকৃত প্রাথমিক শিক্ষক মহাজোটের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিএনপি-জামায়াত জোট শিক্ষকদের আন্দোলনে নামানোর পাঁয়তারা চালাচ্ছে।

শিক্ষকদের আন্দোলন থামাতে তিনটি দাবি জানিয়ে সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য আগামী ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে। বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন করা না হলে ২৬ ডিসেম্বর ঢাকায় শিক্ষক মহাসমাবেশ করে কঠিন কর্মসূচি ঘোষণার হুমকি দিয়েছে সংগঠনটি।

শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয়করণকৃত প্রাথমিক শিক্ষক মহাজোটের নেতাকর্মীরা এ হুমকি দেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনটির আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, অধিগ্রহণ করা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বিধিমালা ২০১৩ অনুযায়ী কর্মরত প্রধান শিক্ষকদের টাইমস্কেল ও উচ্চতর বেতন স্কেল এবং সহকারী শিক্ষকদের টাইমস্কেল সুযোগ ভোগসহ কার্যকর চকরিকালের ৫০ শতাংশের ভিত্তিতে সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করার কাজ ৮০ শতাংশ শেষ হওয়ার এক পর্যায়ে কিছু সংখ্যক জামায়াত-বিএনপির ঘাপটি মেরে থাকা প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারী বিধিমালার বিধি ৯ উপবিধি-১ এর ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে আমাদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করে আসছে। যার ফলে জাতীয়করণ করা শিক্ষকরা হতাশ ও সংক্ষুব্ধ হয়ে পড়েছে।

এ সময় তিনি তিনটি দাবি তুলে ধরেন তারা। এর মধ্যে রয়েছে- সরকার ঘোষিত ৫০ শতাংশ বেসরকারি চাকরিকাল গণনা করে গ্রেডেশন/পদোন্নতি তালিকা তৈরি করা, প্রধান শিক্ষকের প্রাপ্ত টাইম স্কেলের ভিত্তিতে উন্নীত স্কেল বাস্তবায়ন করা এবং বাদ পাড়া শিক্ষকদের গেজেট সংশোধন করে প্রধান শিক্ষকের গেজেট প্রকাশ করা।

এই তিন দাবি আগামী ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়ন না করলে ২৬ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মহাসমাবেশ করে কঠিন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান আমিনুল ইসলাম চৌধুরী।

কী ধরণের কর্মসূচি দেয়া হবে সাংবাদিকদের- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, কর্মসূচি আমরা আগেই প্রকাশ করতে চাচ্ছি না। ২৬ ডিসেম্বর মহাসমাবেশ করে কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

এ সময় তিনি বলেন, আমাদের দাবি ন্যায্য। দীর্ঘদিন ধরেই আমরা এ দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু মাঠ পর্যায়ের কিছু উপজেলা শিক্ষা অফিসার বিধিমালার মনগড়া ব্যাখ্যা দিয়ে অদৃশ্য শক্তিকে খুশি করতে জন্য আইন অমান্য করছেন।

সাংবাদিকদের আরও এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা জানি তারা (উপজেলা শিক্ষা অফিসার) জামায়াত-বিএনপি সমর্থিত। সরকারের ভাবমূর্তি ভালো হোক তারা তা চায় না। কারণ প্রাইমারিতে আসলেই আওয়ামী লীগের অবদান বেশি।

এ সময় বিএনপি-জামায়াত শিক্ষকদের ব্যবহার করে আন্দোলনে নামানোর চেষ্টা করছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ভুল ব্যাখা দিলে শিক্ষকরা ফুসে উঠবে, আন্দোলন করবে, এর পেছনে হয়তো কারও ইঙ্গিত আছে। আমরা তাদের অতীতের আচার-আচরণ দেখেছি, বিশেষ করে অধিদফতরের ক্লার্ক বদলি হয় না। বদলি করলে এ সমস্যাগুলো হতো না। তারা কোন দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাদের ফ্যামেলি (পরিবার) আমরা জানি।

আমিনুল ইসলাম চৌধুরী জানান, জাতীয়করণকৃত শিক্ষকদের মধ্যে চারটি সংগঠন ছিল। আজ সংকটময় মুহূর্তে সকল মতভেদ ভুলে গিয়ে চারটি সংগঠনের নেতারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ‘জাতীয়করণকৃত প্রাথমিক শিক্ষক মহাজোট’ গঠন করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির প্রধান সমন্বয়কারী মো. আবদুর রহমান বাচ্চু, সমন্বয়ক শেখ আব্দুস ছালাম, সমন্বয়ক মাহবুবুর রহমান, সমন্বয়ক মহিউদ্দিন খন্দকার, সমন্বয়ক আব্দুল গফুর, সদস্য মোশাররফ হোসেন প্রমুখ।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর