এক মাসের শিশুকে রাস্তায় ফেলে পালিয়ে গেছেন মা

পঞ্চগড় সদরের কামাতপাড়া এলাকার একটি গলি থেকে বৃহস্পতিবার রাতে এক মাস বয়সী ফুটফুটে এক কন্যা শিশুকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শিশুটি বর্তমানে সুস্থ আছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। শিশুটির মা শিশুটিকে ওই স্থানে রেখে পালিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, শিশুটির মা রিমু আক্তার নামে এক নারী। তার স্বামীর বাড়ি দিনাজপুরের পার্বতীপুর এলাকায়। ওই নারীর বাবার বাড়ি পঞ্চগড় সদর উপজেলার ভিতরগড় এবং নানার বাড়ি জেলা শহরের কামাতপাড়া এলাকায়। এক দেড় বছর পর রিমু তার শিশু সন্তান নিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হঠাৎ তার নানার বাড়ি এলাকায় আসে।

কামাতপাড়া এলাকার পেয়ারা মজুমদার নামে এক গৃহবধূকে তার কন্যা সন্তানটি রাখতে বলেন। কিন্তু তিনি বিরক্তি প্রকাশ করে তাকে পরে আসতে বলেন। রাত ৮ টার দিকে কামাতপাড়া এলাকার অশোক চন্দ্র মদকের বাড়ির সামনে ওই কন্যা শিশুটিকে পড়ে থাকতে দেখে ওই এলাকার জুয়েল ও তার মা জুলেখা খাতুন। পরে তারা পুলিশকে বিষয়টি জানায়। খবর পেয়ে পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে।

শিশুটিকে এক পলক দেখার জন্য হাসপাতালে ছুটে যায় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন ও এসপি ইউসুফ আলী শিশুটিকে দেখতে হাসপাতালে যান। এ সময় ডিসি শিশুটিকে কোলে নিয়ে আদর করেন এবং রক্ষণাবেক্ষণে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।

এদিকে শিশুটিকে দত্তক নেয়ার জন্য হাসপাতালে নিঃসন্তান দম্পত্তিদের ভিড় পড়ে যায়। তবে এখন পর্যন্ত শিশুটির মাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। পুলিশ তাকে খুঁজে বের করার জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

কামাতপাড়া এলাকার পেয়ারা মজুমদার বলেন, রিমু আগে এই এলাকায় থাকতো। মানুষের বাড়িতে কাজ করতো। দেড় থেকে দুই বছর পর হঠাৎ সন্ধ্যায় পর সে এসে আমাকে বলে তার কন্যা শিশুটিকে রাখতে। আমি বললাম আমার বাড়িতে মেহমান আসছে তুই পড়ে আসিস। এ সময় তার সঙ্গে তিন/চার বছরের একটি ছোট ছেলেও ছিল। তারপর শুনলাম একটা শিশু পাওয়া গেছে। ছবি দেখে বুঝলাম রিমু যে শিশুটিকে নিয়ে আসছিল এ সেই শিশু।

জেলা আধুনিক সদর হাসপাতালের ডা. সিরাজউদ্দৌলা পলিন বলেন, শিশুটি বর্তমানে সুস্থ আছে। শিশুটিকে সিসিইউ ইউনিটে রাখা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য একজন নারী পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এসপি ইউসুফ আলী বলেন, শিশুটির মাসহ তার পরিবারের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। তাদের পাওয়া গেলেই শিশুটিকে মায়ের কাছে তুলে দেয়া হবে। দত্তকের বিষয় নিয়ে এখনো ভাবার সময় আসেনি।

ডিসি সাবিনা ইয়াসমিন জানান, কোনো মা যদি নিরাপত্তার অভাবে বা কোনো কারণে শিশুটিকে এভাবে রেখে যায় তবে তা খুবই দুঃজনক। এই ফুটফুটে শিশুটির ভবিষ্যতকে সুন্দর করা আমাদের দায়িত্ব, রাষ্ট্রের দায়িত্ব সবাই মিলে এই দায়িত্ব পালন করবো। আমরা চাই শিশুটি তার মায়ের কোল ফিরে পাক।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর