কিশোরগঞ্জের ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম হাওরে সারা বছর চলাচল উপযোগী সড়ক পরিদর্শনে রাষ্ট্রপতি

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শনিবার বিকেলে কিশোরগঞ্জের ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের অগ্রগতি পরিদর্শন করে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন।

নির্মাণাধীন অষ্টগ্রাম-নওগাঁ সড়কটি একটি সেতুর মাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সঙ্গে সংযুক্ত হবে। অষ্টগ্রাম-কাস্তুল-ভাটশালা সড়ক ইটনা ও মিঠামইন উপজেলার সঙ্গে সংযুক্ত হবে। ইতিমধ্যে প্রকল্পের ৭৮ দশমিক ১০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি এ সড়কের উন্নয়নকাজ পরিদর্শন করে বলেন, ‘এই সড়ক কিশোরগঞ্জের তিনটি উপজেলার সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করবে এবং এতে ঢাকা ও দেশের অন্যান্য এলাকার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ সহজ হবে। সংযোগ সড়কের ফলে পিছিয়ে পড়া হাওরবাসী সুফল পাবে এবং অর্থনীতির নতুর দ্বার উন্মোচিত হবে।’

কিশোরগঞ্জের হাওরে সারা বছর চলাচল উপযোগী সড়ক পরিদর্শন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। শনিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তিনি ঘুরে ঘুরে সারা বছর চলাচল উপযোগী ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম সড়কসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ পরিদর্শন করেন।

এসময় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদকে প্রস্তাবিত মিঠামইন ক্যান্টনমেন্ট সম্পর্কে অবহিত করা হয়। রাষ্ট্রপতি সংশ্লিষ্টদের দ্রুত উন্নয়ন কাজ শেষ করার নির্দেশ দেন।

পরিদর্শনকালে কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও রাষ্ট্রপতির বড় ছেলে রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন, জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী, পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ, মিঠামইন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আছিয়া আলমসহ সামরিক, বেসামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রাষ্ট্রপতির সাথে ছিলেন।

পরে বিকেলে মিঠামইনে ‘রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ অডিটরিয়ামে’ তাঁর নিজের নামে একটি ফাউন্ডেশনের উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রপতি।

মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য ২০১৩ সালে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ স্বাধীনতা পদকে ভূষিত হন। স্বাধীনতা পদকের দুই লাখ টাকা দিয়ে জনকল্যাণে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ফাউন্ডেশন। এই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে শনিবার (১২ অক্টোবর) নিজ জন্মভূমি হাওর উপজেলা মিঠামইনে মিঠামইন, ইটনা ও অষ্টগ্রাম উপজেলার কৃতী শিক্ষার্থীদের সম্মাননা ও বৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া গরিব অসহায় নারীদের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়েছে।

মিঠামইনে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, ২০১৩ সালে স্বাধীনতা পদকের দুই লাখ টাকা দিয়ে এই ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করা হয়। মানুষের সহযোগিতায় এ প্রতিষ্ঠানের ভিত্তি অনেকটাই মজবুত হয়েছে। আশা করি এ ফাউন্ডেশন আর্থসামাজিক উন্নয়ন, দারিদ্র, কর্মসংস্থান, শিক্ষার অগ্রগতি, নারীর ক্ষমতায়নসহ সামাজিক অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখবে।

এ সময় রাষ্ট্রপতি হাওর এলাকার শিক্ষার্থীদের নিজেদের যোগ্য করে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, পড়ালেখা করে শুধু ভালো রেজাল্ট অর্জন করলেই চলবে না, মানুষের মতো মানুষ হতে হবে। আমি সবসময় তোমাদের পাশে থাকব, সহযোগিতা করব। তবে তোমাদের দেশ ও হাওরের জন্য নিজেদের সর্বোচ্চটা দিতে হবে। দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে হবে। যেন তোমাদের নিয়ে আমি গর্ব করতে পারি। তোমরা যদি নিজেদের সঠিকভাবে গড়ে তুলতে পারো, তাহলে এই হাওর আর অবহেলিত থাকবে না। সম্পদে ও মননে উন্নত হয়ে তোমরা দেশকে পথ দেখাবে।

অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে মিঠামইন, ইটনা ও অষ্টগ্রাম উপজেলার প্রায় ৮৫ জন শিক্ষার্থীকে সম্মাননা ও বৃত্তিপ্রদান করা হয়। এছাড়া মিঠামইনের ১৫ জন গরিব অসহায় নারীকে সেলাই মেশিন প্রদান করা হয়।

এর আগে বেলা ১২টায় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ কামালপুরের নিজবাড়ি থেকে ব্যাটারিচালিত একটি অটোরিকশা করে নির্মাণাধীন সারা বছর চলাচল উপযোগী ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম সড়কের দুটি সেতুসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি প্রায় ১০ কিলোমিটার সড়ক অটোরিকশা দিয়ে ঘুরে দেখেন।

আগামীকাল রোববার রাষ্ট্রপতি ইটনা সফরে যাবেন। সেখানে তার একটি সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ দেয়ার কথা রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর