তক্ষক শিকার-হেফাজতে রাখায় বগুড়া যুবলীগ সভাপতির ছেলে গ্রেফতার

 

হাওর বার্তা  ডেস্কঃ বগুড়ার শেরপুরে তক্ষক শিকার ও হেফাজতে রাখার অভিযোগে উপজেলা যুবলীগ সভাপতির ছেলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

র‌্যাব-১২ বগুড়া ক্যাম্পের সদস্যরা সোমবার বিকালে একটি বাড়ি থেকে পাঁচটি তক্ষকসহ তাদের গ্রেফতার করে। মঙ্গলবার তাদের বিরুদ্ধে শেরপুর থানায় মামলা হয়েছে।

গ্রেফতার তিনজন হলেন- বগুড়ার শেরপুর উপজেলার বারদুয়ারীপাড়ার বাসিন্দা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি তারিকুল ইসলাম তারেকের ছেলে ঢাকার আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স প্রথম সেমিস্টারের ছাত্র শামসুজ্জোহা বিন তারেক নিয়ন (২০), একই উপজেলার চকধলী গ্রামের মৃত দলিল উদ্দিন মণ্ডলের ছেলে মো. নূরুন্নবী (৫০) ও মির্জাপুর গ্রামের শুকুর আলী শেখের ছেলে মাকেজ আলী শেখ (৩২)।

র‌্যাব-১২ বগুড়া স্পেশাল কোম্পানি কমান্ডার মেজর এসএম মোর্শেদ হাসান মঙ্গলবার দুপুরে প্রেস বিজ্ঞপ্তি জানান, শেরপুর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি তারেকের ছেলে নিয়ন ও অন্যরা দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বন্যপ্রাণী তক্ষক শিকার ও হেফাজতে রেখে বগুড়া জেলার বিভিন্ন এলাকার জনগণকে ভুল বুঝিয়ে প্রতারণা করে আসছিলেন।

সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে গোপনে খবর পেয়ে শেরপুর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, উপজেলা শ্রমিক লীগের সাবেক সভাপতি শফিকুল ইসলাম রাঞ্জুর বারদুয়ারীপাড়ায় পাঁচতলা ভবনের চতুর্থ তলার একটি ঘরে অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে পাঁচটি তক্ষক উদ্ধার ও অবৈধভাবে শিকার এবং হেফাজতে রাখায় নিয়ন, নূরুন্নবী ও মাকেজকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের শেরপুর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।

র‌্যাবের নায়েক সুবেদার সৈয়দ আলী তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন।

শেরপুর থানার ওসি হুমায়ুন কবীর জানান, আসামিদের আদালতের মাধ্যমে বগুড়া জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া আদালতের অনুমতিতে তক্ষকগুলো রাজশাহী বিভাগীয় বন কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

রাজশাহী বিভাগীয় বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ শাখার ফরেস্টার আশরাফুল ইসলাম জানান, তক্ষক কী কাজে লাগে এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞদের কোনো মতামত পাওয়া যায়নি। তবে প্রতারকচক্র এ প্রাণীকে মহামূল্যবান ও এর মাধ্যমে জীবনী শক্তি ও যৌন শক্তি বৃদ্ধির ওষুধ তৈরি হয় বলে প্রতারণা করে থাকে।

এ প্রসঙ্গে শেরপুর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি তারিকুল ইসলাম তারেক জানান, তার ছেলে নিয়ন ঢাকার আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের প্রথম সেমিস্টারের ছাত্র।

তিনি দাবি করেন, তার মেধাবী ছেলে এসব ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নয়। তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। প্রতিবেশী শ্রমিক লীগ নেতা ইউপি চেয়ারম্যান রাঞ্জুর বাড়ি থেকে র‌্যাব সদস্যরা প্রাণীগুলো উদ্ধার করেছে। তার ছেলেকে ডেকে নিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, তক্ষক কেনাবেচার সঙ্গে রাঞ্জু চেয়ারম্যানের ছেলে হিমেলও জড়িত।

খানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উপজেলা শ্রমিক লীগের সাবেক সভাপতি শফিকুল ইসলাম রাঞ্জুর মোবাইল ফোন বন্ধ থাকার তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর